সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একটা বড় ম্যাচ খেলার রেশ কাটার আগেই নেমে পড়তে হবে আর এক মহারণে। বুধবার এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২-এর যোগ্যতা অর্জন পর্বে তুর্কমেনিস্তানের ক্লাব অলটিন আসারের বিরুদ্ধে তার প্রথমটা খেলেছে ইস্টবেঙ্গল। রবিবার ডুরান্ড কাপে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে তারা খেলতে চলেছে দ্বিতীয়টা। আর দলের রক্ষণভাগের ফাঁকফোকর তিন দিনের মধ্যে ঠিক করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ লাল-হলুদ শিবিরের।
মরশুমের শুরু থেকেই চোট সমস্যায় ভুগছেন লাল-হলুদ ডিফেন্ডাররা। নিশু কুমার কবে ফিরবেন স্পষ্ট নয়। প্রভাত লাকড়া সবে অনুশীলন শুরু করেছেন দলের সঙ্গে। ৯০ মিনিট খেলার মতো ফিট নন তিনি। হিজাজি মাহের শেষ কয়েকদিন অনুশীলন করেছেন ডান হাঁটুতে স্ট্র্যাপ বেঁধে। অলটিনের বিরুদ্ধে তিনি পুরো ম্যাচ খেললেও হাঁটুর সমস্যা বোঝা গিয়েছে ভালোই। কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের সমস্যা বাড়িয়ে অলটিন ম্যাচের প্রথমার্ধে চোট পেয়েছেন মহম্মদ রাকিপও। ফলে দ্বিতীয়ার্ধে নামতেই পারেননি তিনি। ফলে পুরো ম্যাচ খেলার মতো কোনও রাইট ব্যাকই নেই কুয়াদ্রাতের হাতে।
[আরও পড়ুন: ‘মোদিজি এবার তো সত্যিটা মানুন’, স্বাধীনতা দিবসে রাহুলকে পিছনে বসানোয় ক্ষুব্ধ কংগ্রেস]
এই অবস্থায় যাঁরা তাঁকে স্বস্তি দিতে পারতেন, সেই হেক্টর ইউস্তে এবং আনোয়ার আলির ডার্বি খেলা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। হেক্টর তো ভিসা সমস্যা মিটিয়ে ঠিক কবে আসছেন, সেটাই স্পষ্ট জানে না টিম ম্যানেজমেন্ট। আর আনোয়ার এখনও দলের সঙ্গে অনুশীলনেই নামেননি। অলটিন ম্যাচের পরদিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার হোটেলেই রিকভারি সারেন লাল-হলুদ ফুটবলাররা। সব ঠিক থাকলে শুক্রবার দলের সঙ্গে পুরোদমে অনুশীলনে নামবেন আনোয়ার। তবে মাত্র দু’টো সেশন অনুশীলন করিয়েই তাঁকে ডার্বির মতো ম্যাচে কুয়াদ্রাত আদৌ নামাবেন কি না, তা নিয় প্রশ্ন রয়েছে। তার উপর ম্যাচটা যথন আনোয়ারের সদ্য-প্রাক্তন ক্লাব মোহনবাগানের বিরুদ্ধে, তখন এই প্রশ্নটা আরও বেশি করে উঠছে। কোচ কুয়াদ্রাত মেনে নিয়েছেন, ইউস্তে-আনোয়াররা চলে এলে দলের রক্ষণ আরও শক্তিশালী হবে। তবে কবে থেকে তাঁদের পুরোপুরি পাওয়া যাবে, তা নিয়ে দিশা দেখাতে পারেননি তিনি।
অবশ্য দলের রক্ষণের এমন অবস্থার মধ্যেও ডার্বি জয় নিয়ে আশাবাদী নন্দকুমার। গত ডুরান্ডের প্রথম ডার্বিতে জয়সূচক গোল করে নায়ক হয়েছিলেন এই দক্ষিণী ফরোয়ার্ড। এবার সেই ডুরান্ডেই ডার্বি খেলার আগে নন্দ বলছিলেন, “মোহনবাগান কঠিন প্রতিপক্ষ। তবে আমি বলব, আমাদের দল তৈরি। এই ম্যাচে আমরা পাঁচ ডিফেন্ডার নিয়ে খেললাম, প্রথমবার। সেই হিসাবে দলের পারফরম্যান্স বেশ ভালো। এটা আমাদের দলের মানসিক কাঠিন্যের পরিচয় দেয়। ফলে আমি মনে করি, রবিবার আমরা মোহনবাগানকে হারিয়ে ডার্বি জিততেই পারি।” সাফল্যের জন্য নন্দর দাওয়াই, “ফুটবলে দু’টো বিষয় গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমত বলের দখল নিজেদের কাছে রাখা। আর কোচের স্ট্র্যাটেজির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া। বলের দখল নিজেদের কাছে রাখলে আপনি গোল করার সুযোগ অনেক বেশি পাবেন। পরের ম্যাচে সেটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। আর যত সময় যাবে আমরা আরও ভালো ভাবে কোচের স্ট্র্যাটেজির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারব।” বুধবার অলটিনের বিরুদ্ধে পরিবর্ত হিসাবে নেমেছিলেন ক্লেটন সিলভা। চোট সারিয়ে এবার লাল-হলুদ জার্সিতে এটাই ছিল ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের প্রথম ম্যাচ। তাঁর প্রত্যাবর্তন দলের জন্য ইতিবাচক হবে বলেই মনে করছেন নন্দ, “ক্লেটন আমাদের অধিনায়ক। ও ফেরার ফলে আমরা আরও বেশি আক্রমণে জোর দিতে পারব। আরও বেশি গোল করার জন্য ঝাঁপাতে সুবিধা হবে।”
মরশুমের প্রথম তিন ম্যাচে আট গোল করা লাল-হলুদের আক্রমণ নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই। ডেভিড লালহানসাঙ্গা, সল ক্রেসপো, দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকস, মাদিহ তালালরা গোল পেয়েছেন। বুধবার অলটিনের বিরুদ্ধে ক্লেটন গোল করলেও তা বাতিল করেন রেফারি। ফলে ফরোয়ার্ড লাইন নিয়ে তেমন ভাবনা নেই কুয়াদ্রাতের। তবে তিন ম্যাচে পাঁচ গোল খাওয়া নিশ্চিতভাবেই চাপে রাখবে লাল-হলুদের স্প্যানিশ হেডস্যরকে। কারণ রোগ সারাতে যেটা সবচেয়ে বেশি জরুরি, সেই সময়টাই তো নেই তাঁর হাতে!