সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: বিএড পাস করেও জোটেনি সরকারি চাকরি। তবু সমাজে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন আদিবাসী পাড়ার ইমানি মুর্মু। বিনে পয়সার পাঠশালা খুলেছেন কাঁকসার তরুণী। লক্ষ্য় একটাই, গ্রামের ছেলেমেয়েদের স্বাবলম্বী করা। শিক্ষিত ভবিয্যত প্রজন্ম গড়ে তোলা।
কাঁকসার মলানদিঘির মোলডাঙার আদিবাসী পাড়া। ১০০ আদিবাসী পরিবারের বাস। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া গ্রাম। অধিকাংশ পরিবারই দিনমজুরের কাজের সঙ্গে যুক্ত। দিন আনা দিন খাওয়া সংসার। ফলে এলাকার পড়ুয়াদের পাঠশালা দেওয়ার মতো ক্ষমতাও নেই অনেকেরই। গৃহশিক্ষকের ভাবনা তো দূরাস্ত। সেই পাঠশালা, গৃহশিক্ষকের অভাব দূর করছেন ইমানি। ‘দিদির পাঠশালা’য় বিনে পয়সায় খুদেদের পড়াচ্ছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ‘ওঁর কথায় কালো টাকা সাদা করেছি’, সায়গলের পর মণীশের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছেন অনুব্রত]
একাধিকবার শিক্ষকের চাকরির জন্য পরীক্ষা দিয়েছেন। কিন্তু সেই চাকরি আজও অধরা। তবু থেমে থাকতে নারাজ ইমানি। তাঁর মনের জোর আর অদম্য ইচ্ছে মন জয় করেছে এলাকাবাসীর। ‘দিদি’র পাঠশালায় নিয়মিত হাজির হয় ছোট-ছোট পড়ুয়ারা। মেয়েদের সঙ্গে আসেন ছেলেরাও। অসুস্থ হলে বাড়িতে-বাড়িতে খোঁজ নিতেও দেখা যায় তাঁকে।
আদিবাসী তরুণীর নিয়ে গর্বিত প্রতিবেশীরাও। কাঁকসার মলানদিঘি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে রয়েছে শিক্ষকের অভাব। সেই অভাব দেখে স্কুলেও সামান্য পারিশ্রমিকে পড়াতে এগিয়ে এসেছেন ইমানি। স্কুল থেকে ফিরে যে সময়টুকু থাকে সেই সময় বাড়িতে পড়ুয়াদের পড়ান।
[আরও পড়ুন: গরু পাচার মামলায় এবার নজরে তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেন, দিল্লিতে তলব করল ইডি]
ইমানি কথায়, “আমি চাকরি না পেলেও সমাজের প্রতি আমার একটা কর্তব্য আছে। আদিবাসী সমাজে অশিক্ষা একটা রোগের মতন। তাই এই সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পড়ুয়াদের বিনা পয়সার পাঠশালায় পাঠ্যদান করি। রাষ্ট্রপতি এবং মুখ্যমন্ত্রীকে দেখেও সে অনুপ্রাণিত হচ্ছি।” ইমানির জীবনে আদর্শ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদেরকে আদর্শ করে জীবনে এগিয়ে যেতে চান তিনি। শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে চান সমাজে।