সুরজিৎ দেব, গঙ্গাসাগর: আর মাত্র কয়েকঘণ্টার অপেক্ষা। মোক্ষলাভের আশায় সাগরের তটে এখন লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর ভিড়। শনিবার সন্ধ্যে পর্যন্ত সাগরমেলায় আসা তীর্থযাত্রীর সংখ্যা ৪৫ লক্ষ। সংখ্যাটা ক্রমে বেড়েই চলেছে। রবিবার রাত ১২ টা বেজে ১৩ মিনিটে শুরু হবে মকর সংক্রান্তির পূণ্যস্নান। চলবে সোমবার রাত ১২ টা বেজে ১৩ মিনিট পর্যন্ত। গঙ্গাসাগর এখন সত্যিই এক মিনি ভারতবর্ষ।
ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা তীর্থযাত্রীরা শনিবার রাতে কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে সাগরসৈকতে প্রতীক্ষার প্রহর গুনেছেন। সময় যত এগোচ্ছে ততই বিশ্বাসী মনের ভিড় বাড়ছে সাগরসৈকতে। পূণ্যস্নানের সেই শুভসময় পার হতে দিতে রাজি নন যেন কেউই। সকলেই চাইছেন যে করেই হোক মাহেন্দ্রক্ষণের আগে সাগরবেলার ভূমি স্পর্শ করতে। লট নম্বর ৮ ও কচুবেড়িয়া ঘাটে তাই তীর্থযাত্রীদের চাপ বাড়ছে তো বাড়ছেই। যাত্রীভিড় সামলাতে প্রশাসনিক তৎপরতাও তুঙ্গে। সাগরমেলায় রয়েছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, সুজিত বসু, ইন্দ্রনীল সেনরা।
মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানান, মেলার বাজেট এবার ২৫০ কোটি টাকা। সাগরমেলায় দশ হাজারের বেশি শৌচালয়, ২২ টি জেটি, ২৫০০ টি বাস, ৬ টি বার্জ, ৩৮ টি ভেসেল ও ১০০ টি লঞ্চের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদ্যুতের টাওয়ারে ও জেটিতে লাগানো হয়েছে কুয়াশাভেদি আলো, যানবাহনগুলিতে জিপিএস ট্র্যাকিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। মেলা উপলক্ষে থাকছে ৫৪৮ টি ড্রপ গেট। ২৪০০ জন সিভিল ডিফেন্স কর্মী ও ১৪ হাজারেরও বেশি পুলিশকর্মী সদা সতর্ক নজর রাখছেন। রয়েছে সাতটি ফ্রি ওয়াইফাই জোন। ঘরে বসে এবারও ব্যবস্থা থাকছে ই-দর্শন ও ই- স্নানের।
[আরও পড়ুন: খাস কলকাতায় ফের আক্রান্ত পুলিশ, শব্দ তাণ্ডব থামাতে গিয়ে জুটল মার]
এপর্যন্ত মেলায় ১৮ টি পকেটমারির ঘটনা ঘটেছে যার মধ্যে ১৬ টি ক্ষেত্রে জিনিসপত্র উদ্ধার সম্ভব হয়েছে। ১৮০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হারিয়ে যাওয়া ৪১০ জনের মধ্যে ৩৯৪ জনকে তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী সুজিত বসু জানান, সাগরে একটি স্থায়ী দমকল কেন্দ্র ছাড়াও মেলায় ১১ টি অস্থায়ী দমকল কেন্দ্র রয়েছে। মোতায়েন রাখা হয়েছে ৩৫৩ জন কর্মীকে। সব মিলিয়ে জমজমাট এখন গঙ্গাসাগর মেলা।