সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাধারণত মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার আগে ভক্তরা ফুল, বেলপাতা, ফল-মিষ্টি নিয়ে যান। রীতি তো এমনটাই। কিন্তু, কখনও দেখেছেন কি মন্দিরে পুজো দিতে ঢোকার আগে পুজোর ডালায় বই-কলম সাজিয়ে নিয়ে যাতে? অদ্ভুত লাগছে তো? স্বাভাবিক। ছোট থেকেই পুজোর ফুল মাথায় ঠেকিয়ে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার রীতি দেখতেই অভ্যস্ত আমরা। কিন্তু এ কেমন মন্দির, যেখানে ফুল, ফল, মিষ্টির পরিবর্তে ডালায় বই-কলম সাজিয়ে নিয়ে যেতে হয়! অবাক হলেও বাস্তবে এরকম একটা মন্দির রয়েছে।
[আরও পড়ুন: ভাষাচর্চার অনন্য নিদর্শন, লখনউ বাজারে সংস্কৃত নাম চেনাচ্ছে সবজি ]
কেরলের ত্রিশূর জেলার এক মন্দিরে রীতি রয়েছে বইপত্র, খাতা-কলম দিয়ে পুজো সারার। কারণ, জ্ঞান আহরণকেই তারা পুজোর আসল প্রসাদ বলে মনে করেন। তাই পুজোর ফুল-প্রসাদের জায়গায় তাদের কাছে প্রাধান্য পায় বইপত্র। ‘বিচিত্র’ বৈচিত্রের দেশ ভারত। একেক জায়গায় একেক রকম ভাষা, কথা বলার ধরন। খাদ্যরীতিতেও রয়েছে বৈচিত্র। ভিন্ন ধর্ম, ভিন্ন ভাষা, বিবিধ রীতি-রেওয়াজের মাঝেও মহান মিলন। সভ্যতা-সংস্কৃতিই যেই প্রস্তরভিত গাঁথতে সাহায্য করে। তাই জ্ঞান আহরণ করাটা যে কতটা জরুরি সেই সার-ই বোধহয় মর্মে পৌঁছেছে কেরলের ত্রিশূর জেলার ওই মন্দির কমিটির।
ত্রিশূরের ওই মন্দির মূলত মহাদেবের মন্দির। এই মন্দিরেই চল রয়েছে পড়াশোনা সংক্রান্ত জিনিসপত্র দিয়ে পুজো দেওয়ার। সাধারণত মন্দিরে পুজো দিলে প্রসাদে কখনও খিচুড়ি ভোগ কিংবা কখনও ফল প্রসাদ খাওয়ানো হয়। ভক্তরা পুজোর পরে সেই প্রসাদ তৃপ্তি করে খান। কিন্তু কেরলের ত্রিশূরের সেই মন্দিরে প্রসাদে দেওয়া হয় বই এবং ডিভিডি। এই শিব মন্দিরের নিয়মেই পুজো দিতে আসা ভক্তদের হাতে প্রসাদ হিসেবে তুলে দেওয়া হয় পড়াশোনার সামগ্রী। তবে, শুধু বই, খাতা, কলম নয়, দেওয়া হয় জ্ঞান আহরণমূলক ভিডিওর ডিভিডি। কারণ, জ্ঞানই আসল প্রসাদ। মন্দিরের এক পুরোহিত জানান, প্রসাদ হিসেবে তাঁরা মানুষকে বিভিন্ন বিষয়ের বই, ডিভিডি দিয়ে থাকেন।
[আরও পড়ুন: একদিনের জন্য বিয়ে করতে চান! মিলবে মধুচন্দ্রিমার সুযোগও, জানেন কোথায়? ]
এছাড়াও এই মন্দিরের রয়েছে আরও একটি বিশেষত্ব। সাধারণত মন্দিরের গায়ে ঠাকুর-দেবতার ছবি আঁকা থাকে। কিন্তু এই মন্দিরের গায়ে খোঁদাই করা রয়েছে বিভিন্ন মনীষীদের ছবি। এর মধ্যে রয়েছেন আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু, সিভি রমণ, এপিজে আবদুল কালাম, গণিতজ্ঞ শ্রীনিবাস রামানুজান-সহ আরও অনেকে। অক্ষর জ্ঞান হওয়া শুরু করলে শিশুদের নিয়ে মা-বাবাদের এই মন্দিরে যাওয়ার রীতি প্রচলিত রয়েছে। তাদের বিশ্বাস, এতে সন্তানরা ভবিষ্যতে পড়াশোনায় ভাল হবে।