সুকুমার সরকার, ঢাকা: বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। সেখানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে বিএনপির নেতা-কর্মীদের। এই ঘটনায় প্রাণ হারালেন এক পুলিশকর্মী। কর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতিতেই আহত হন তিনি। তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই সংঘর্ষে পুলিশের আরও ৪১ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। আহতদের ঢাকা মেডিক্যাল ও রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ভূগর্ভ যোগাযোগ আরও উন্নত বাংলাদেশে, কর্ণফুলি নদীগর্ভে টানেলের উদ্বোধন হাসিনার]
শনিবার শক্তি প্রদর্শন করতে ঢাকার আলাদা আলাদা জায়গায় শাসকদল আওয়ামি লিগ (Awami League) , প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবং ইসলামপন্থিদল জামাত একযোগে মহাসমাবেশের ডাক দেয়। যা ঘিরে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে রাজধানী। ঢাকার কাকরাইল মোড়ে সংঘর্ষ বেঁধে যায় আওয়ামি লিগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে। দুপুরের দিকে প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট ধরে চলে এই গোলমাল। সংঘর্ষের সময় কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন বিএনপির কর্মীরা। যাতে মৃত্যু হয় পুলিশকর্মীর।
এবিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মগবাজারের দিক থেকে আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীরা পিকআপ ভ্যানে করে বায়তুল মোকাররমের সমাবেশে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। কাকরাইল থেকে আরামবাগ মোড় পর্যন্ত রাস্তায় আগে থেকেই বিএনপির নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছিলেন। সেই সময় বিএনপি কর্মীরা বাধা দিলে দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। দুই পক্ষের অনেকের হাতেই লাঠি ছিল। ঢাকা মহানগর পুলিশের তরফে দুপুর ১২টার আগে কোনও রকম জনসমাগম করা যাবে না বলে যে শর্ত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশও মানা হয়নি।
জানা গিয়েছে, বিএনপির (BNP) পক্ষ থেকে তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবিতে মহাসমাবেশের ডাক দেওয়া হয়। ওই সমাবেশে বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও করবে এই অভিযোগ এনে আধা কিলোমিটার দূরে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে শান্তি সমাবেশের ডাক দেয় আওয়ামি লিগ। দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দলের মধ্যে যে সংঘর্ষ হতে পারে সেই আশঙ্কা আগেই করা হয়েছিল। যা বাস্তব রূপ নিল শনিবার।
এর মাঝখানে সুযোগ বুঝে কট্টর ইসলামপন্থীদল জামাত ইসলামিও বিএনপি সমাবেশের ঢিলছোড়া দূরত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে পৃথক একটি সমাবেশের ডাক দেয়। কিন্তু পুলিশ বাধা দেওয়ার তারা আরামবাগে সমাবেশ করে। এদিনের সমাবেশে আওয়ামি লিগের প্রধান অতিথি ছিলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী।