shono
Advertisement

ভিনধারার ছৌ নৃত্যে মাতোয়ারা রাঢ়বাংলার শীতসন্ধে, নজর কাড়ল ময়ূরভঞ্জ ঘরানা

এই ঘরানার ছৌ নৃত্যের বিশেষত্ব জানা গেল উৎসবের মঞ্চে। The post ভিনধারার ছৌ নৃত্যে মাতোয়ারা রাঢ়বাংলার শীতসন্ধে, নজর কাড়ল ময়ূরভঞ্জ ঘরানা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 05:39 PM Dec 26, 2019Updated: 05:40 PM Dec 26, 2019

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: নানা আদলের বড়সড় মুখোশে মুখ ঢেকে নৃত্য পরিবেশন। এটাই রাঢ়বঙ্গের ঐতিহ্যবাহী ছৌ নাচের পরিচিত দৃশ্য। কিন্তু পুরুলিয়ার বলরামপুরে মালডি গ্রামে সদ্য শেষ হওয়া ছৌ-ঝুমুর উৎসবে দেখা গেল ভিন্ন ঘরানার ছৌ। ওড়িশার ময়ূরভঞ্জের ছৌ দল মঞ্চ মাতিয়ে দিয়ে গেল মুখোশের বৈচিত্র্য ছাড়াই। এই উৎসবে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জের তিনটি ছৌ দল পরিবেশন করল ছ’টি পালা। তিনদিনের উৎসবে অন্যতম আকর্ষণ ছিল ময়ূরভঞ্জের ছৌ নাচ।

Advertisement

বাংলা নাটক ডট কমের তরফে গত আট বছর ধরে চলে আসছে এই ছৌ-ঝুমুর উৎসব। প্রতিবারই তা হয়ে থাকে পুরুলিয়ার ঝালদা ২ নং ব্লকের বামনিয়াতে। এবছর স্থান বদল। বলরামপুরে মালডি গ্রামে চলতি বছর এই উৎসব অংশ নিয়েছে স্থানীয় ন’টি ছৌ দল ও তিনটি ঝুমুর দল, তাদের নাচ ও গানের ডালি নিয়ে। বাংলা নাটক ডট কমের পুরুলিয়ার প্রতিনিধি উৎপল দাস বলেন, “ময়ূরভঞ্জের ছৌ দল নিয়ে এলাকার মানুষজনের মধ্যে ভীষণ উৎসাহ ছিল। কারণ, সেখানকার ছৌ কেমন, তা অনেকেরই অজানা ছিল এতদিন। এই প্রথম ছৌ–ঝুমুর উৎসবে ময়ূরভঞ্জ ছৌ পালা পরিবেশিত হল।”

[আরও পড়ুন: CAA’র প্রচারে ‘কোমলগান্ধার’, বিবৃতি জারি করে আপত্তি তুলল ঋত্বিক ঘটকের পরিবার]

ছৌ–এর মূলত তিনটি ধারা। পুরুলিয়া, ঝাড়খণ্ডের সরাইকেলা ও ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ। তবে অনেকের মতে, ঝাড়গ্রামের চিলকিগড়ের ছৌও ভিন্ন একটি ধারা। ওড়িশার ময়ূরভঞ্জের ছৌ নৃত্যে সেভাবে কোনও মুখোশ ব্যবহার করা হয় না। তাই অন্য ধরনের এই ছৌ দেখতে ভিড় জমল এবারের উৎসবে। ভঞ্জভূমি ছৌ কলা পরিষদের মেঘ ময়ূর, একদন্ত, রেঙ্গালবেড়া ছৌ নৃত্য প্রতিষ্ঠানের সপ্তরথী, চাষিমুলিয়া নজর কেড়েছে। চোখ টেনেছে বামনঘাটি ছৌ নৃত্য প্রতিষ্ঠানের ওয়ার ডান্স, কেউটা কেউটুনি। এছাড়া পুরুলিয়ার ছৌ দলের মহিষাসুর বধ, রক্তাসুর বধ, অভিমন্যু বধ, নরকাসুর বধ, কিরাত অর্জুন, জটাসুর বধের মত প্রাচীন পালাগুলিও যেন এই উৎসবে জীবন্ত হয়ে উঠেছে। এছাড়া উৎসবে অন্য মাত্রা এনেছে বিমল মাহাতো ও বেলারানি মাহাতোর ঝুমুর নাচও।

[আরও পড়ুন: গান চুরির অভিযোগে ‘সাফাই’ নোবেলের, ফেসবুকে খোলা চিঠি গায়কের]

এসব গ্রামীণ শিল্পীদের ঐতিহ্যবাহী পরম্পরা চর্চার মাধ্যমে তাঁদের স্বনির্ভর করাই রাজ্য সরকারের লক্ষ্য। তাই রাজ্যের ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি শিল্প ও বস্ত্র দপ্তরের উদ্যোগে এবং ইউনেস্কোর সহায়তায় রাজ্যের ১৫টি জেলায় গড়ে উঠেছে ১৫টি রুরাল ক্রাফট অ্যান্ড কালচারাল হাব। উপকৃত হয়েছেন প্রায় ১৫ হাজার লোকশিল্পী ও হস্তশিল্পী। তার মধ্যে রয়েছেন ১৯৭৩ জন ছৌ শিল্পী ও ৪১৫ জন ঝুমুর শিল্পী।

পশ্চিমবঙ্গ খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদের উদ্যোগে বলরামপুরের এই মালডিতেই গড়ে উঠেছে ছৌ ঝুমুর রিসোর্স সেন্টার। এখানকার প্রশিক্ষক জগন্নাথ চৌধুরির কথায়, “এই কেন্দ্র থেকে নতুন প্রজন্মের ছৌ শিল্পীদের আমরা প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। ফলে এই উৎসবের আরও প্রসারেই এবার এই মালডিতে এই উৎসবের তাঁবু পড়েছিল।” ছৌ-ঝুমুর উৎসব ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ পালা দিয়ে শেষ করে পুরুলিয়ার মহিলা ছৌ শিল্পী মৌসুমি চৌধুরির দল। এভাবেই দুই ভিন রাজ্যের পৃথক ছৌ ঘরানা মিলেমিশে গেল এই উৎসবের মধ্যে দিয়ে।

ছবি: সুনীতা সিং।

The post ভিনধারার ছৌ নৃত্যে মাতোয়ারা রাঢ়বাংলার শীতসন্ধে, নজর কাড়ল ময়ূরভঞ্জ ঘরানা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement