সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: পুনর্গণনা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়ে গেল। মঙ্গলবার বিজেপি জানিয়ে দিল, পুনর্গণনার দাবি নিয়ে তারাও আদালতে যাচ্ছে। যেসব আসনে তারা দু’হাজারের কম ভোটে হেরেছে, সেইসব আসনে পুনর্গণনা চেয়ে তারা মামলা করবে কোর্টে। ইতিমধ্যেই নন্দীগ্রামে পুনর্গণনা চেয়ে কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে তৃণমূল।
রাজনৈতিক মহলের মতে, বিজেপির এই সিদ্ধান্ত পালটা চাপের কৌশল। ভোটে বিপর্যয়ের পর এইভাবে নজর ঘুরিয়ে বিজেপি নেতারা একটা মুখরক্ষার চেষ্টা করছেন বলেও রাজনৈতিক মহলের একাংশের অভিমত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Mamata Banerjee) বারবার বলেছেন, বিজেপি হার মেনে নিতে পারছে না। যদিও বিজেপির কোর্টে যাওয়ার হুমকিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। দলের প্রবীণ নেতা ও মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, দুই হাজারের কম ভোটে হারলেই পুনর্গণনা চাওয়া যায় না। ভোট গণনায় অনিয়মের অভিযোগ থাকলে আদালতে যাওয়া যায়। কিন্তু আদালতে সেই অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে।
[আরও পড়ুন: জ্বালানির দামের ঊর্ধ্বমুখী দৌড় অব্যাহত, কলকাতায় নয়া রেকর্ড পেট্রলের]
বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) মতে, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ বেশ কয়েকটি জেলায় দু’বছর আগেও লোকসভা নির্বাচনে যেখানে বিজেপি বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিল সেখানে এবার অল্প ব্যবধানে গেরুয়া প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন। গণনায় কারচুপি হওয়ায় এটা হয়েছে। দিলীপবাবু জানান, দু’হাজারের কম ব্যবধানে হারা আসনে পুনর্গণনা চেয়ে মামলা করা হবে। শোভনদেববাবুর মতে, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কমিশনের কাছে রিকাউন্টিং চেয়েছিলেন। কমিশন দেয়নি। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোর্টে যাবেন। ওদের ক্ষেত্রে কী করবে এখন কমিশন? ওদের ক্ষেত্রেও একই জিনিস হবে বলে আমার বিশ্বাস।” তাঁর ব্যাখ্যা, দু’হাজারে হেরেছে বলেই রিকাউন্টিং হয় না। গণনায় বেনিয়মের অভিযোগ থাকতে হবে। যেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সঙ্গে সঙ্গে চেয়েছিলেন। কিন্তু এখন তো ভোটপ্রক্রিয়াই শেষ হয়ে গিয়েছে। বিধায়কদের শপথ নেওয়া হয়ে গিয়েছে। তাই পুনর্গনণার দাবি অযৌক্তিক বলেই মনে করেন তিনি।
কেন আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি। গেরুয়া শিবিরের অন্দরের খবর, পাঁচ হাজারের নিচে ৩৬টি এমন আসন রয়েছে, যেখানে বিজেপি প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন। গণনার সময় আসনগুলিতে কারচুপি করে তৃণমূলকে জিতিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই দলের কাউন্টিং এজেন্টদের ভয় দেখিয়ে গণনাকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। এই আসনগুলিতে গণনার সময় কারচুপি হয়েছে বলে মনে করছে বিজেপি (BJP) নেতৃত্ব। দলের একাংশের ব্যাখ্যা, প্রচার চলাকালীন মানুষের এত সমর্থন। মিটিং-মিছিলে জনতার ঢল। কিন্তু ভোট কেন এল না এটা দেখার দরকার আছে। তা খতিয়ে দেখতে বসেই বেশ কিছু অস্বাভাবিক বিষয় নজরে এসেছে। তাই আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত।