সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সালটা ১৯১৯। ঠিক নভেম্বর মাসেই মুক্তি পেয়েছিল প্রথম বাংলা ছবি ‘বিল্বমঙ্গল’। আর আজ, ৮ নভেম্বর শুরু হতে চলেছে ২৫তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। বাংলা সিনেমা পা রাখল শতবর্ষে। যদিও সংলাপহীন নির্বাক যুগের সিনেমা, তবুও ‘বিল্বমঙ্গল’কেই প্রথম বাংলা ছবি হিসেবে গন্য করা হয়। শত বর্ষ পেরিয়ে বাংলা সিনেমার ঐতিহ্যকে ফিরে দেখলেন পরিচালক অরিন্দম শীল। পরিচয় করালেন তাঁর ‘মায়াকুমারী’র সঙ্গে। কে সেই ‘মায়াকুমারী’?
‘মায়াকুমারী’ আসলে অরিন্দম শীলের পরবর্তী ছবির নাম। শতবর্ষ সপ্তাহ এবং ২৫তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সূচনার মাহেন্দ্রক্ষণেই পরিচালক অরিন্দম প্রকাশ্যে নিয়ে এলেন ‘মায়াকুমারী’র প্রথম পোস্টার। তাহলে অরিন্দম কি বাংলা সিনেমার একশ বছরের ইতিহাস ফিরে দেখতে চলেছেন? পোস্টার প্রকাশ্যে আসার পর এমন প্রশ্ন কিন্তু অনেকেই ছুঁড়ে দিয়েছেন। কিন্তু না। পরিচালকের প্রেক্ষাপট সেকালের। চারের দশকের। ‘মায়াকুমারী’ আসলে সে সময়কার একজন ডাকসাইটে সুন্দরী অভিনেত্রী। যার জীবনকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়েছে অরিন্দমের ছবির গল্প। ‘মায়াকুমারী’র দাম্পত্যজীবন, তার জীবনে নতুন প্রেম, তৎকালীন সমাজের চোখে কেমন ছিলেন অভিনেত্রীরা? এসব প্লটের ভিত্তিতেই এগিয়েছে ‘মায়াকুমারী’র গল্প। মায়াকুমারীর স্বামী শীতল ভট্টাচার্য। অন্যদিকে, ডাকসাইটে এই অভিনেত্রী প্রেমে জড়িয়েছেন নায়ক-পরিচালক কানন কুমারের সঙ্গে। মায়াকুমারীর সঙ্গে স্বামী শীতলের সম্পর্কের জটিলতার সূত্রপাত সেখান থেকেই।
[আরও পড়ুন: আইনি গেরোয় ‘টেকো’, ছবি মুক্তির স্থগিতাদেশ দিল আদালত ]
শোনা যায়, এক ফিল্ম প্রিমিয়ারে নাকি মায়াকুমারীর দিকে থুতু ছিটিয়েছিলেন বাংলা ছবির দর্শকরা। কারণ? ভিনেত্রী হিসেবে কোনও এক ছবির দৃশ্যে তাঁকে চুমু খেতে হয়েছিল নায়ককে। এখানেই শেষ নয়, পিঠখোলা ব্লাউজ পরার জন্যও মায়াকুমারীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিল তৎকালীন সমাজ। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের যাঁতাকলে পড়ে কীভাবে এক নায়িকা তাঁর শিল্পীসত্ত্বাকে বিসর্জন দিয়ে সব ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, সেই গল্প নিয়ে আজকের এক পরিচালক ছবি তৈরি করবেন। যার জন্য কানন কুমারের নাতি আহিরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন সেই পরিচালক। আর ‘মায়াকুমারী’কে নিয়ে সেই পরিচালকের সিনেমা বানানোর গল্পই সিনেপর্দায় তুলে ধরবেন অরিন্দম শীল। সিনেমার মধ্যে সিনেমা, বিষয় খানিক ইন্টারেস্টিং!
চমক রয়েছে কাস্টিংয়ে। তা কাকে দেখা যাবে ‘মায়াকুমারী’র চরিত্রে? এক্ষেত্রে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ছাড়া অন্য কারও কথা অরিন্দম শীলের মাথায় আসেনি। অতএব, চারের দশকের অভিনেত্রী ‘মায়াকুমারী’র ভূমিকায় অভিনয় করছেন ঋতুপর্ণা। শীতল ভট্টাচার্যের চরিত্রে রয়েছেন রজতাভ দত্ত এবং কাননকুমারের চরিত্রে দেখা যাবে আবীর চট্টোপাধ্যায়কে। সংগীত পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন বিক্রম ঘোষ। মিউজিক্যাল ঘরানার এই ছবিতে থাকছে ১২টা গান। ‘মায়াকুমারী’ মুক্তি পাচ্ছে আগামী বছর।
[আরও পড়ুন: প্রতীক্ষার অবসান, কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব উপলক্ষে শহরে শাহরুখ-অমিতাভ ]
The post বাংলা ছবির শতবর্ষের আলোকে আত্মপ্রকাশ অরিন্দম শীলের ‘মায়াকুমারী’র appeared first on Sangbad Pratidin.