সুকুমার সরকার, ঢাকা: ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় খুন, ধর্ষণ, নির্যাতন ও লুঠপাটে পাকিস্তানি হানাদারদের সহযোগিতা করেছিল একদল শত্রু। তাদের তালিকা সংগ্রহ করে তা নিজেদের হেফাজতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে চিঠি দিচ্ছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রক। রাজাকারদের তালিকা করার উদ্যোগও নিচ্ছে তারা। যেভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা রয়েছে, তেমনই আল বদর ও আল শামস সংঠনের সদস্যদের তালিকা সংরক্ষণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, থানা ও জেলা প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।
রবিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই নিয়ে আলোচনা হয়। এর আগের বৈঠকে সংসদীয় কমিটি এবিষয়ে সুপারিশ করেছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার বৈঠকের পর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রকের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করা হয়। মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, রাজাকার, আল বদর ও আল শামসের যে সদস্যরা থানা, মহকুমা ও জেলা প্রশাসন থেকে সরকারি ভাতা নিয়েছিল। তাদের তালিকা সংরক্ষণ করতে জেলা প্রশাসকদের গোপন বার্তা পাঠানো হবে। এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অনুবিভাগে সংরক্ষিত স্বাধীনতা বিরোধীদের তালিকা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য চিঠি দেওয়া হবে।
[আরও পড়ুন- ভিসা নিয়ে তুঙ্গে দু’দেশের লড়াই, পাকিস্তানকে দুষছে বাংলাদেশ]
১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ ও পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে আওয়ামি লিগের নির্বাচিত সদস্যদের দেশদ্রোহী তকমা দিয়ে, আসনগুলি অবৈধভাবে শূন্য ঘোষণা করা হয়েছিল। সেসময় নির্বাচিতদের বাদ দিয়ে যাদের সদস্য করা হয়েছিল তাদের নাম স্বাধীনতা বিরোধীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে বলেছিল সংসদীয় কমিটি।
[আরও পড়ুন- বাতিল হচ্ছে ডিজেলে টানা ট্রেন, বিদ্যুৎচালিত রেল চালুর ঘোষণা শেখ হাসিনার]
স্বাধীনতা বিরোধীদের তালিকা প্রস্তুত ও সংরক্ষণে আইন সংশোধন-সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ৫ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। সংসদীয় কমিটির সূত্রে খবর, গত ২৮ এপ্রিল কমিটির বৈঠকে স্বাধীনতা বিরোধীদের তালিকা তৈরির বিষয়ে আলোচনা হয়। ওই বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক বলেন, “জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইনে শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই আইন অনুযায়ী রাজাকার, আল বদর, আল শামস বা স্বাধীনতা বিরোধীদের তালিকা করার কোনও ভিত্তি নেই। তাই স্বাধীনতা বিরোধীদের তালিকা করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্তের জন্য আইনটি সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এক মাসের মধ্যে এই সংক্রান্ত খসড়া চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।”
The post মুক্তিযোদ্ধাদের মতো রাজাকারদেরও তালিকা সংরক্ষণে উদ্যোগী হাসিনা প্রশাসন appeared first on Sangbad Pratidin.