সুবীর দাস, কল্যাণী: সাড়ে চার বছরের এক শিশুকন্যার কানে গরম জল ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ দায়ের করেছে ওই শিশুর পরিবার। এই কাণ্ড ঘটানোর পর হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গিয়েছেন অভিযুক্ত চিকিৎসক। ঘটনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, সাড়ে ৪ বছরের অদ্রিজা লাহিড়ী উত্তর চব্বিশ পরগনার কাঁচরাপাড়া ক্ষুদিরাম পল্লির বাসিন্দা। কিছুদিন ধরে কানে অস্বস্তি হওয়ায় মেয়েকে চিকিৎসার জন্য কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে আসেন প্রদীপ লাহিড়ী ও অর্চনা লাহিড়ী। চিকিৎসকরা অদ্রিজার কান দেখার পর ওষুধ দেন। সেই সঙ্গে পরে নিয়ে আসার পরামর্শ দেন। সেই মতো শুক্রবার মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন তাঁরা। তখনই এক জুনিয়র চিকিৎসক অদ্রিজার কান দেখে বলে ওয়াশ করতে হবে বলে জানান। শুরু হয় চিকিৎসা।
[আরও পড়ুন: বেঙ্গল সাফারি পার্কের সিংহীর নাম সীতা, হাই কোর্টে মামলা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের]
অদ্রিজার মা ও বাবার অভিযোগ, অভিযুক্ত চিকিৎসক চিকিৎসার নামে ফুটন্ত গরম জল তাঁদের শিশুকন্যার কানে ঢেলে দেন। যন্ত্রণায় চিৎকার করে ওঠে সাড়ে চার বছরের অদ্রিজা। মেয়ের কষ্ট দেখে চিকিৎসককে বার বার কিছু করার অনুরোধ জানানো হয়। এর পরই হাসপাতাল চত্বরে হইচই পড়ে যায়। কোনওরকম চিকিৎসার ব্যবস্থা না করেই অভিযুক্ত চিকিৎসক ওই বিভাগ থেকে চম্পট দেয় বলে অভিযোগ।
এর পর ওই শিশুকন্যার বাবা-মা দ্বারস্থ হন কল্যাণী কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালের প্রিন্সিপাল অভিজিৎ মুখোপাধ্য়ায়ের কাছে। খবর পেয়ে প্রিন্সিপাল তড়িঘড়ি ওই শিশুকন্যার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন এবং তিনি ওই পরিবারের সদস্যদের আশ্বস্ত করেন, বিষয়টি তিনি দেখছেন। পাশাপাশি তিনি এও জানান হাসপাতাল সুপারকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন বিষয়ে তদন্ত করতে এবং একটি রিপোর্ট জমা দিতে। তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে অভিযুক্ত চিকিৎসককে আড়াল করার চেষ্টা করেছেন। এটি চিকিৎসার গাফিলতি নয়, ভুলবশত হয়েছে বলেই সাফাই দিয়েছেন, অভিযোগ এমনটাই।
চিকিৎসকের নাম প্রকাশ্যে আনা হয়নি হাসপাতালের পক্ষ থেকে। এই ঘটনায় ফের কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ আনা হয়েছে। যা এর আগেও উঠেছে একাধিক বার।