সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইজরায়েলে হামলা চালাতে পারে ইরান। শুক্রবার এই আশঙ্কায় রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছিল মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। ফলে হামাস-ইজরায়েল রক্তক্ষয়ী সংঘাতের মাঝেই মধ্যপ্রাচে ফের ভয়ংকর যুদ্ধের মেঘ ঘনাচ্ছে। এই আবহে ইরানকে সতর্কবার্তা দিল আমেরিকা। ইহুদি দেশটিতে কোনওরকম হামলা চালালে তার ফল ভালো হবে না। কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাসে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। যেখানে অন্তত ১৩ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। মৃতদের মধ্যে ছিলেন দুজন ইরানি সেনাকর্তাও। এই হামলার পিছনে ইজরায়েলের ‘হাত’-ই দেখছে তেহরান। তার পর থেকেই ইজরায়েলকে লাগাতার হুমকি দিয়ে যাচ্ছিল ইরান। তবে রমজান মাস থাকায় শত্রুপক্ষের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লা আলি খামেনেইয়ের প্রশাসন। কিন্তু এবার তারা নাকি মরিয়া হয়ে উঠেছে বদলা নিতে। এই প্রেক্ষিতে ইরানকে কার্যত হুমকি দিয়ে শুক্রবার বাইডেন বলেন, "ইজরায়েলে হামলা চালানোর ভুল করবেন না। আমরা ইজরায়েলের প্রতিরক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা ওদের সবরকম সাহায্য করব। ইরানের উদ্দেশ্য কোনওভাবে সফল হবে না।"
বলে রাখা ভালো, ইরানের দূতাবাসে হামলা হওয়ার পর থেকেই ওয়াশিংটন উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। যেকোনও সময় ইজরায়েলে আক্রমণ শানাবে তেহরান। তবে হামলার ভয়ে প্রমাদ গুনছে তেল আভিভও। গত সপ্তাহেই ইজরায়েলের একটা বড় অংশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জিপিএস পরিষেবা। গত বৃহস্পতিবার থেকে সেদেশের মধ্যাঞ্চলে আচমকাই ব্যাহত হতে থাকে জিপিএস পরিষেবা। জানা গিয়েছিল, প্রতিরক্ষার অংশ হিসেবেই ওই পদক্ষেপ করা হয়েছিল। এমনকি জোরদার করা হয়েছে আকাশপথে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। বাতিল করে দেওয়া হয়েছে সেনা জওয়ানদের ছুটিও।
এদিকে, মধ্যপ্রাচ্যের এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে শুক্রবার ভারতের বিদেশমন্ত্রকের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, “দুই দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে গুরুত্ব দিয়ে সকল ভারতীয়কে জানানো হচ্ছে, পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ভারতীয়রা যেন ইরান ও ইজরায়েলে না যান। পাশাপাশি এই দুই দেশে যে ভারতীয়রা রয়েছেন তাঁরা যেন ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন এবং সেখানে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করান। পাশাপাশি নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিয়ে নিজেদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করুন।” ফলে নতুন করে যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কায় সতর্ক হয়ে উঠেছে গোটা বিশ্ব।
তবে বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের আশঙ্কা যখন চরম আকার নিয়েছে তখন ইরানের এই আধিকারিক বলেন, ইজরায়েলের মাটিতে হামলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন দেশের শীর্ষ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই। তবে রাজনৈতিক সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তারপর এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন দেশের শীর্ষ নেতৃত্ব।