সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যত সময় যাচ্ছে ততই কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। বিরোধীরা তো বটেই, দলের মধ্যে থেকেই উঠছে গদি ছাড়ার আওয়াজ। আর এর মধ্যেই ইস্তফা দিয়েছেন সেদেশের উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। তাঁর মন্ত্রিসভার অন্যতম 'বিশ্বাসভাজন' মুখ ছিলেন তিনি। আর্থিক ঘাটতিও দেখা দিয়েছে কানাডায়। কূটনৈতিক সম্পর্কেও পিছিয়ে পড়ছে তারা। এই পরিস্থিতিতে এক দশকের বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা ট্রুডোর ভবিষ্যৎ ক্রমেই অন্ধকার হয়ে উঠছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
গত সোমবার পদত্যাগ করেছেন ক্রিস্টিয়া। তিনি জানিয়েছেন, ট্রুডোই তাঁকে চাননি অর্থমন্ত্রী হিসেবে। গত শুক্রবারই নাকি তিনি ক্রিস্টিয়াকে বলে দেন, তাঁকে আর প্রয়োজন নেই। ইস্তফা দেওয়া মহিলার দাবি, ''এই পরিস্থিতিতে আমার মনে হয়েছে সবচয়ে সৎ ও সঠিক পথই হবে মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেওয়া।'' তবে ক্রিস্টিয়া সরে যাওয়ার পরে তাঁর বিকল্প বেছে নিতে সময় নেননি ট্রুডো। নিজের বিশ্বস্ত সহকর্মী ডমিনিক লেব্লঁকে এই পদে বসিয়ে দেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তাতে খুব বেশি লাভ হবে বলে মনে করছে না ওয়াকিবহাল মহল। কেননা, দলের ভিতরে ও বাইরে সর্বত্রই জনপ্রিয়তা হু হু করে কমছে তাঁর। অ্যাপ্রুভাল রেটিং তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এর মধ্যেই 'গোদের উপর বিষফোঁড়া' হিসেবে দেখা যাচ্ছে বাজেট ঘাটতির অঙ্ক, যা প্রায় ৬২ বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার। স্বাভাবিক ভাবেই এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যে ভীষণ শক্ত, ভালোই বুঝছেন ট্রুডো।
আগামী বছরের ২০২৫ সালে কানাডার নির্বাচন। এবার যে তাঁর পক্ষে মসনদে ফেরা অত্যন্ত কঠিন, এখন থেকেই বুঝেছেন ট্রুডো। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আঙিনাতেও সমালোচিত হয়েছেন তিনি। কানাডার নির্বাচনে ভারত নাক গলাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন ট্রুডো। নিজ্জর হত্যাতেও নয়াদিল্লিকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি। যার জেরে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে তুমুল অবনতি হয়েছে।
সম্প্রতি তাঁকে ব্যঙ্গ করতে দেখা গিয়েছে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও। ট্রুডোকে মার্কিন মুলুকের '৫১তম রাজ্যের গভর্নর' বলে খোঁচা দিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। পাশাপাশি কানাডিয়ান পণ্যের ওপর ২৫% শুল্ক আরোপের হুমকিও দিয়েছেন বর্ষীয়ান রিপাবলিকান নেতা। যা কানাডার সামনে অর্থনৈতিক মন্দার গভীর মেঘ তৈরি করেছে।