শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: খোদ সরকার যদি দুয়ারে এসে যায় সাধ্য কি আছে বাধা দেওয়ার? সেই ঘটনাই ঘটল চন্দ্রকোণার দু’নম্বর ব্লকের কুঁয়াপুরে। একদিকে স্কুলে বসেছে ‘ দুয়ারে সরকার’। অন্যদিকে, স্কুলের পরীক্ষায় বসেছে পড়ুয়ারা। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কুঁয়াপুর হাইস্কুলে। কেন এমন হল? পরস্পরের ঘাড়ে দায় ঠেলছে স্কুল ও পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ।
রাজ্যজুড়ে চলছে স্কুলগুলিতে ফার্স্ট সামেটিভ পরীক্ষা। পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা পরীক্ষা দিতে দল বেঁধে ঢুকছে স্কুলে। দেখল তাঁদের মতোই দল বেঁধে ঢুকছে তাঁদেরই বাবা, কাকা থেকে শুরু করে পাড়ার দাদু-দিদারা। ঘটনা চন্দ্রকোণা দুই নম্বর ব্লকের কুঁয়াপুর হাইস্কুলে। স্কুলের ভিতরেই বসেছে ‘দুয়ারে সরকার’। সরকারের শিবিরে ভিড় উপচে পড়ছে। সমস্যা নিয়ে চলছে তর্ক-বিতর্ক। ভিড় যত বাড়ছে, সমান তালে বাড়ছে মানুষের ভিড়ও। বাড়ছে কোলাহলের মাত্রাও। ফলে পড়ুয়াদের মনসংযোগে ব্যাঘাত ঘটা অস্বাভাবিক নয়। ঘটলও। কয়েকজন পড়ুয়া অসন্তোষ প্রকাশ করে স্যারদের কাছে ক্ষোভপ্রকাশ করেছে বলে জানা গিয়েছে। অসন্তুষ্ট স্কুলের শিক্ষকরাও।
[আরও পড়ুন: ইডেনে কেকেআরের ম্যাচ দেখে বাড়ি ফেরা নিয়ে চিন্তা? মুশকিল আসান করল মেট্রো]
কেন এমন ঘটল ? স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক শ্যামাপদ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ পরীক্ষার সূচি বোর্ডের নির্ধারিত সময় মেনেই তৈরী করা হয়েছে। ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির হওয়ার কথা ছিল সোমবার থেকে। কিন্তু তা হয়নি। হয়েছে মঙ্গলবার। এদিনই শুরু হয়েছে স্কুলের ফার্স্ট সামেটিভ পরীক্ষা। ফলে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরকে আমরা বাধা দিতে পারিনি। একই সঙ্গে পরীক্ষা আর ‘দুয়ারে সরকার’ দুটোই হল।’’ পরীক্ষার্থীদের হলঘরে ইনভিজিলিটর ছিলেন শিক্ষক মহাদেব রায়। তিনি বলেন, ‘‘দুয়ারে সরকার শিবির থেকে লোকজনের কোলাহল বেশ জোরেই ছিল। মাঝে মাঝেই পরীক্ষার্থীরা অমনোযাগী হয়ে পড়েছিল। কিন্তু আমাদের করার কিছু ছিল না। আমাদের সবাইকে মেনে নিতে হয়েছে দুয়ারে সরকারকে।’’
এ বিষয়ে কী বলছেন ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরের আয়োজক কুঁয়াপুর গ্রাম পঞ্চায়েত? পঞ্চায়েত প্রধান শংকর ঘোষ বলেন, ‘‘দুয়ারে সরকার শিবির মঙ্গলবার শুরু হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষকে আগেই পরীক্ষা নিতে বলা হয়েছিল। পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। পরীক্ষার কথা ভেবে আমরা যথা সম্ভব কোলাহল কম করতে চেষ্টা করেছি। আসলে পরীক্ষা ও ‘দুয়ারে সরকার’ দু’টোই তো দরকার।’’ চন্দ্রকোণা দু’নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হীরালাল ঘোষ বলেন, ‘‘ ঘটনাটি শুনেছি। প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছে তা আমি সঠিকভাবে খোঁজ নিইনি। একই সঙ্গে পরীক্ষা ও ‘দুয়ারে সরকার’ হওয়াটা আমি ঠিক মনে করিনি। আলোচনা করে ঠিক করে নিলে ভাল হত। আর যাতে না হয় তা দেখা হবে।’’