সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: আজকের দিনে জীবন ছুটছে আলোর গতিতে। তাল মেলাতে না পেরে হারিয়ে যাচ্ছে অতীতের ঐতিহ্য। পুরনো দিনের ভাল লাগার ছোট-ছোট সামগ্রী হারিয়ে ফেলছি আমরা। পরিবর্তে জায়গা করে নিচ্ছে অত্যাধুনিক জিনিসপত্র। পুরনো দিনের সেই স্মৃতি ফিরিয়ে আনছে জঙ্গলমহল ঝাড়গ্রামের (Jhargram) জামবনি ব্লকের মুনিয়াদার পুজো মণ্ডপ। সঙ্গে থাকছে পরিবেশ রক্ষা, জলসঞ্চয়ের বার্তা।
অতীতের বহু জিনিস হয়তো আজ খুঁজলেও মেলে না। তেমনই এক স্মৃতি হল অন্ধকারে জ্বলতে থাকা হ্যারিকেনের আলো। নয়ের দশকের ছেলেমেয়েদের ছেলেবেলা জুড়ে রয়েছে এই টিমটিম করে জ্বলতে থাকা সলতের আলো। সেই হেরিক্যানের স্মৃতি ফিরে আসছে পুজো কমিটির হাত ধরে। এদিকে বাড়তে থাকা দূষণে দূষিত হচ্ছে জল। কমছে জলের স্তর। সেই পরিস্থিতির উন্নতির জন্য পরিবেশ রক্ষার বার্তাও রয়েছে এই পুজো মণ্ডপে।
[আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদের কৃষককে গুলি করে খুনের অভিযোগ বিজিবির বিরুদ্ধে, তীব্র উত্তেজনা সীমান্তে]
জামবনি ব্লকের মুনিয়াদা। এই গ্রামটির পরেই রয়েছে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গ্রাম কানিমউলি। মুনিয়াদা সর্বজনীন দুর্গাপুজো (Durga Puja 2021) কমিটির হাত ধরে উঠে আসছে সেই অতীতের হেরিক্যানের ‘আলোর ছোঁয়া’। এবার এটাই তাদের থিম। হেরিক্যানের আদলে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপটি। আবার সারা বিশ্বজুড়ে যে মহামারী মানব জীবনে হানা দিয়েছে তা বোঝাতে হেরিক্যানের যে অংশটিতে কাঁচ বসানো থাকে সেখানে বসানো হচ্ছে পৃথিবীর আকারে তৈরি একটি গ্লোব। বাঁশের পাতা, কাগজ, পিচবোর্ড, প্রাকৃতিক রঙ দিয়ে সাজানো হচ্ছে হেরিক্যান সদৃশ মণ্ডপটি।
অন্যদিকে, দূষণ নিয়েও সচেতন করা হয়েছে মণ্ডপে। মাটি হারাচ্ছে জলধারণ ক্ষমতা। তাই জল সঞ্চয়ের বার্তাও থাকছে মণ্ডপে। থিমের রূপকার সন্টু মাহাতো বলেন, “একটা সময় ছিল যখন হেরিক্যান অত্যম্ত প্রয়োজনীয়ছিল। কিন্তু আজ তা হারিয়ে গিয়েছে। ‘আলোর ছোঁয়া’ থিমের মধ্যে দিয়ে সেই স্মৃতি ফিরিয়ে আনা হচ্ছ। পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষার বর্তা দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও জানিয়েছেন, জলে কাছে পৌছতে পারছে না গাছের শিকড়। সেটিও তুলে ধরা হয়েছ এই থিমে।