শেখর চন্দ্র, আসানসোল: নীল আকাশে পেঁজা তুলোর ভিড়। বাঁশ, পেরেকে ঠোকাঠুকি। সকলে যেন ব্যস্ত। আর ব্যস্ততা থাকবে নাই বা কেন? সুদূর কৈলাস থেকে উমা আসছেন বাপেরবাড়ি। একা নন, আসছেন তাঁর সন্তান সন্ততিরাও। থাকবেন মাত্র চারদিন। দশমীতে যেন মন খারাপ হয়ে যায় সকলের। কিন্তু মহালয়াতে উমার আগমন এবং বিদায় শুনেছেন কখনও? অবাক হচ্ছেন? এমনই ব্যতিক্রমী পুজোর সাক্ষী আসানসোলের বার্নপুর।
হীরাপুরের ধেনুয়া গ্রামে আগমনি দুর্গাপুজো শুরু হয়ে যায় দেবীপক্ষে। দামোদর নদের তীরে ধেনুয়া গ্রামে রয়েছে কালীকৃষ্ণ আশ্রম। রবিবার ভোর থেকে শুরু হয়ে দুর্গাপুজো। তার আগে একই মন্দিরে রাতে অমাবস্যায় কালীপুজো হয়। তারপর আগমনি দুর্গার আবাহন। একদিনেই সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী। একদিনের এই অভিনব দুর্গাপুজো দেখতে বহু মানুষ দূরদূরান্ত থেকে আসেন ধেনুয়া গ্রামে। পুরোহিত আশিস ঠাকুরের দাবি, পুজোয় চার রকমের ভোগ করতে হয় একদিনেই। দশমীর পুজো শেষে ঘট বিসর্জন হয়ে যায়। তবে মাতৃপ্রতিমা রেখে দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: পুজোর আগেই যানজট থেকে মুক্তি! চতুর্থী থেকেই টালা ব্রিজে চলতে পারে বাস]
কেন এরকম পুজো? সেবাইতরা জানান, এই আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা ও সেবাইত ছিলেন জ্যোতিন মহারাজ। তাঁর গুরুদেব তেজানন্দ ব্রহ্মচারী স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পুজো চালু করেছিলেন। বছর পাঁচেক আগে সেবাইত জ্যোতিন মহারাজের মৃত্যু হয়। আর তার মৃত্যুর পর থেকে এখন পুজো চালান গ্রামের বাসিন্দারাই।
জানা গিয়েছে, ১৯৩০ সালে এই আশ্রমের প্রতিষ্ঠা হয়। মহামায়া অর্থাৎ আগমনি দুর্গাপুজো শুরু হয় ১৯৭৮ সাল থেকে। একদম প্রথমদিকে আগমনি দুর্গার রূপ ছিল অগ্নিবর্ণা। পরে শ্বেতশুভ্র। এখন রং বাসন্তী। দশভূজা দেবী এখানে সিংহবাহিনী। তবে তিনি অসুরদলনী নন। আগমনি দুর্গার সঙ্গে থাকেন দুই সখী জয়া ও বিজয়া। ধেনুয়া গ্রামের বাসিন্দারা একদিনের এই পুজোতে মেতে ওঠেন। তবে বাতাসে পুজো পুজো গন্ধ আসতে না আসতেই শেষ হয়ে যায় পুজো। তাই মন বিষন্ন সকলের। এবার পুজো হতে আরও সপ্তাহখানেক বাকি। তার আগেই মায়ের আবাহন ও বিদায়ে সরগরম বার্নপুর।
দেখুন ভিডিও: