সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত দু’বছর ধরে মহামারীর প্রকোপ ম্লান করে দিয়েছিল উৎসবের উদযাপন, আনন্দ গ্রহণকে। তবে এ বছর সেই আতঙ্ক কেটেছে। করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) বিরুদ্ধে লড়াই জারি রেখে এখন অনেকটাই সুস্থ দেশ। তাই এবছর প্রাণ খুলে উৎসবের আনন্দে মেতে উঠেছেন সকলেই। আর বাঙালির প্রাণের উৎসব দুর্গাপুজোর (Durga Puja) আবেগই তো আলাদা। এই উৎসব যেমন এক বড়সড় মিলনক্ষেত্র, তেমনই বিকিকিনির এক অফুরন্ত সম্ভার। পুজো ঘিরে কতশত ছোট-বড় ব্যবসাই না প্রাণ পায়! এবছরের পুজোয় বাণিজ্য ক্ষেত্রে কিন্তু মিলল সুখবর। আয়োজক সংস্থা ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের তরফে তথ্য দিয়ে জানানো হয়েছে, এবছরের দুর্গাপুজোয় বাণিজ্যের অঙ্ক ছুঁয়েছে ৫০ হাজার কোটি, যা গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
ইউনেস্কোর হাত ধরে এবার দুর্গাপুজোয় লক্ষ্মী এসেছেন বঙ্গের ঘরে। উপচে পড়েছে বাণিজ্য। আইআইটি খড়গপুর, ব্রিটিশ কাউন্সিল ও ইংল্যান্ডের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ এক সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১৯ সালের তুলনায় ৫৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে অর্থনীতি (Economy)। তা এসেছে বিশেষত বিজ্ঞাপন থেকে। পুজোকে সামনে রেখে মণ্ডপ সজ্জা, প্রতিমা তৈরি, খাবারদাবারের বিকিকিনি, বিজ্ঞাপন – এসবের মাধ্যমেই আয় বাড়ে। এবছর সেই ফর্মুলাতেই উপচে পড়েছে বাংলার কোষাগার। এই কয়েকদিনে দুর্গাপুজোকে সামনে রেখে ৫০ হাজার কোটি টাকা আয় হয়েছে এখনও পর্যন্ত। যে পরিসংখ্যান বেশ প্রশংসনীয় বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
[আরও পড়ুন: দীপাবলির পর থেকে আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়ানোর উদ্যোগ বিজেপির, শুরু সিঙ্গুর থেকে]
ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের (Forum for Durgotsav) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য পার্থ ঘোষ জানিয়েছেন, এবছর দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কোর তরফে কালচারাল হেরিটেজের বিশেষ স্বীকৃতি দানের জন্যই লক্ষ্মীলাভ। তাঁর কথায়, ”দুর্গাপুজোকে বিশ্বের দরবারে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এবছরের কোনও ক্ষেত্রে ঘাটটি হয়নি কোনও। বিশেষত বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলির কাছ থেকে বেশ সাহায্য পাওয়া গিয়েছে। ” পরিসংখ্যান বলছে, মলগুলিতে কেনাকাটার ভিড় নতুন নতুন রেকর্ড গড়েছে। কলকাতার নামী দুই শপিং মলের ব্যবসা-বাণিজ্য পঞ্চমী থেকে দশমী পর্যন্ত ফুলেফেঁপে উঠেছে। রাত ১২টা পর্যন্ত কোনও কোনও দোকান খোলা রাখতে হয়েছে স্রেফ ক্রেতাদের চাহিদার জন্য।
[আরও পড়ুন: বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের মামলা খারিজ, কোন শর্তে অভিযোগ গ্রাহ্য, জানাল আদালত]
তাছাড়া হোটেল-রেস্তরাঁ, আবগারি ক্ষেত্রেও ব্যাপক বেড়েছে ব্যবসা। বৃদ্ধির পরিমাণ ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ। পার্থবাবুর মতে, আসলে মহামারীর ২ বছর দুর্গাপুজোকে ঘিরে সকলের আবেগ থাকলেও ব্যবসা বিস্তারের ঝুঁকি নিতে পারেননি কেউই। কিন্তু এবছর করোনা বহু দূরে, তারউপর ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমা। জোড়া ফ্যাক্টরেই দুর্গাপুজোয় এবছর বঙ্গের কোষাগার ফুলেফেঁপে উঠেছে।