shono
Advertisement

Durga Puja 2023: বিসর্জনে সম্প্রীতির সুর! আকবরদের আলোয় কৈলাসের পথে পাড়ি দেবী দুর্গার

বছরের পর বছর চলছে এই নিয়ম।
Posted: 03:30 PM Oct 25, 2023Updated: 03:40 PM Oct 25, 2023

বাবুল হক, মালদহ: হাতে হাতে মোবাইল-টর্চ। জ্বলছে এলইডি লাইট। কারও হাতে লন্ঠন, কারও হাতে মোমবাতি। বিদায় বেলায় দেবীকে পথ দেখাবেন বলে সন্ধ্যা নামার আগেই হাতে আলো নিয়ে ওঁরা হাজির হয়েছিলেন সতীঘাটে। ওঁরা মানে জুলেখা বিবি, আফসানা বিবি, সইফুদ্দিন শেখ, আকবর আলিরা। বিসর্জনের সময় ওঁদের অনেক দায়িত্ব। সূর্যাস্তের আগে লন্ঠন জ্বালিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের এই প্রতিনিধিরা মা দুর্গাকে আলো দেখালেই দেবীকে বিদায় জানানো হয়। এটাই কার্যত রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মালদহের চাঁচলে মহানন্দা নদীর সতীঘাটের পশ্চিম পাড়ে প্রতি বছরের মতো এবারও দেখা গেল একই ছবি।

Advertisement

যদিও ফি বছরের রেওয়াজ একটু বদলেছে এবার। লন্ঠন, হ‍্যারিকেন জ্বেলে গ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন মা দুর্গাকে বিদায় জানাতেন। তাতে কিছুটা বদল ঘটেছে। এবার মোবাইলের আলো জ্বেলেই মাকে পথ দেখাতে ব‍্যস্ত ছিলেন তাঁরা। চাঁচল রাজবাড়ির পুজোর প্রতিমা বিসর্জনে সম্প্রীতির এই দৃষ্টান্ত ফি বছরই দেখা যায় পাহাড়পুরে। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। ডিজিটাল আলোতেই সেই পর্ব সেরেছেন মুসলিমরা। চাঁচলের রাজবাড়ির পুজোর এ এক অন্যতম বৈশিষ্ট বলে মনে করেন চাঁচল রাজ ট্রাস্ট এস্টেটের কর্তারা। সাহুরগাছি গ্রামের বাসিন্দা সইফুদ্দিন শেখ জানালেন, পূর্বপুরুষদের দেখানো পথেই তাঁরা দেবীকে আলো দেখিয়ে বিদায় জানান। এতে পরিবারে সুখ-শান্তি আসে। এমনই বিশ্বাস পাহাড়পুরের সাহুরগাছি গ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের।

[আরও পড়ুন: খেলাকে কেন্দ্র করে TMC ও কংগ্রেসের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র মালদহ, জখম ৩, ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী]

বিসর্জনের শোভাযাত্রায় এই প্রথম সামিল হয়ে সম্প্রীতি দেখে মুগ্ধ গৃহবধূ মধুরিমা দাস বলেন, “আগে শুনেছিলাম এখানে রাজবাড়ির দেবীকে মুসলিমরা বিসর্জন ঘাটে আলো দেখান। সেটা নিজের চোখে দেখলাম। খুব ভালো লাগছে। পরম্পরা বজায় রেখেছেন সাহুরগাছির মানুষ।” স্থানীয়রা জানান, অতীতে লন্ঠন বা হ্যারিকেনের সংখ্যা অনেক বেশি থাকত। পরে সেই সংখ্যা কমতে থাকে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, আজকাল বাজারে সেভাবে হ্যারিকেন বা লন্ঠন কিনতে পাওয়া যায় না। এই ডিজিটাল জমানায় লন্ঠন যেন বিলুপ্তির পথে। এবার তাই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের হাতে মহানন্দা নদীর সতীঘাটে সেভাবে লন্ঠন দেখা যায়নি। তাঁরা লন্ঠনের বদলে মোবাইল, টর্চ, এলইডি লাইট নিয়ে আসেন। প্রায় তিনশো বছর আগে থেকেই এই প্রথা চলে আসছে। দেবীর বিসর্জন পর্বে ফি বছর এই সম্প্রীতি নজর কাড়ে।

সাহুরগাছি গ্রামের বাসিন্দা আকবর আলি বলেন, “পূর্বপুরুষদের রীতি মেনে আমিও আলো দেখালাম দেবীকে। এতে পাড়ায় শান্তি বজায় থাকে।” রাজবাড়ির পুরোহিত ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “এবারও সুষ্ঠুভাবে মাকে বিসর্জন দিয়েছি। বিসর্জনের সময় পাশের সাহুরগাছি থেকে সংখ‍্যালঘুরা আলো জ্বালিয়েছেন।” পুরোহিত জানান, চাঁচল রাজবাড়ির এই পুজোর ঐতিহ্য এখনও একইরকম। পুজোর টানে এবারও বাইরে থেকে প্রচুর দর্শনার্থী এসেছিলেন। রাজআমলের নিয়ম-রীতি মেনেই পুজো হয়েছে। মূল পুজোর ১২ দিন আগে কৃষ্ণা নবমী তিথিতে তামার ঘট ভরে পুজো শুরু হয়েছিল পাহাড়পুরের চন্ডীমণ্ডপে। সতীঘাটে দেবীর বিসর্জন পর্ব দুই সম্প্রদায়কে কাছাকাছি নিয়ে আসে। হয়ে ওঠে একে অপরের পরিপূরক। এবারও সেই ঐতিহ্য অটুট ছিল।

[আরও পড়ুন: বৃষ্টির বিদায়, ঘূর্ণিঝড়ের চাপ সরতেই বঙ্গে উত্তুরে হাওয়া, রাজ্যজুড়ে কমবে তাপমাত্রা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার