সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিলোত্তমার অভিজাত পরিবারের পুজোগুলির মধ্যে মল্লিক বাড়ির পুজো নিঃসন্দেহে অন্যতম। স্বাভাবিকভাবেই ভবানীপুরের এই মল্লিক বাড়ির (Bhawanipur Mallick bari) পুজোর দিকে নজর থাকে সবারই। কারণ, এই পুজো অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিকের (Ranjit Mallick) তত্ত্বাবধানে হয়ে থাকে। আর রঞ্জিত-কন্যা কোয়েলও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে হাতে হাত লাগিয়ে নেমে পড়েন পুজোর কাজে। এক্কেবারে আর পাঁচজন সাধারণ মেয়ের মতোই পুজোর এই পাঁচ দিন অভিনেত্রী মেতে ওঠেন দুর্গা আরাধনায়। এবারও তার অন্যথা হয়নি।
জমজমাট পুজো কাটিয়ে বিদায়বেলাতেও বাড়ির পুজোয় শামিল কোয়েল মল্লিক। দেবীবরণের পর সিঁদুরও খেললেন বাড়ির মহিলাদের সঙ্গে। সঙ্গে দেখা গেল স্বামী নিসপাল সিং রানে ও তাঁদের ছেলে কবীরকেও। উল্লেখ্য, প্রতিবছর মল্লিক বাড়ির বিসর্জনের আগে পরিবারের পুরুষ সদস্যরা এক বিশেষ নৃত্য পরিবেশন করেন। আর সেই নাচের পরই প্রতিমাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঘাটে। আবেগ সামলে হাসিমুখে উমাকে রওনা করে দেন কৈলাসের উদ্দেশে। এবারও কোয়েলের শেয়ার করা ভিডিওতে ধরা পড়ল মল্লিক বাড়ির বিজয়া দশমীর নানা রঙিন মুহূর্ত।
[আরও পড়ুন: ‘ছোট্ট টিপ হালকা লিপস্টিক’! ১০০ বছরের পুরনো শাড়িতেই বিজয়া পালন রিয়া চক্রবর্তীর]
প্রসঙ্গত, মল্লিক বাড়ির পুজো বলতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে একচালা চালচিত্রের প্রতিমা। ডাকের সাজ, টানাটানা চোখ। সাবেকী গন্ধ মাখা সেই পুজোর ধাঁচ আজও প্রচলিত রয়েছে মল্লিক বাড়িতে। সালটা ১৯২৫। এই বাড়িতে শুরু হয়েছিল দুর্গা আরাধনা। ৯৮ বছর ধরে দুর্গাপুজোর স্মৃতিবিজড়িত এই দালানটিতেই উমার আরাধনা শুরু করেন রাধামাধব মল্লিকের পুত্রেরা। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে জনপ্রিয়তা। কলকাতার পুজোর রূপে বদল এসেছে বহুবার, কিন্তু সেই পরিবর্তনের স্রোতে গা না ভাসিয়ে স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেই এগিয়ে চলেছে মল্লিক বাড়ির দুর্গাপুজো।
বর্ধমানের শ্রীখণ্ড এবং গুপ্তিপাড়া নিবাসী বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ রাধামাধব মল্লিকদের পৈতৃক বাড়িতে দুর্গাপুজোর চল ছিল বহু আগে থেকেই। তবে ভবানীপুরের বাড়ির অন্নপূর্ণা দালানে প্রথমে দুর্গা নয়, বরং তাঁরই অন্যতম এক রূপ অন্নপূর্ণার আরাধনা শুরু হয়। পরবর্তীতে রাধামাধব মল্লিকের ছোট ছেলে সুরেন্দ্রমাধব মল্লিক এবং তাঁর অন্যান্য ভাইদের উদ্যোগে শুরু হয় ‘আনন্দিতা শ্যামলী মাতৃকার চিন্ময়ীকে মৃন্ময়ীতে আবাহন’। মোহিনী মোহন রোডের মল্লিক বাড়িতে সেই ইতিহাসকে বহন করে দীর্ঘ ৯ দশকেরও বেশি সময় ধরে আজও পূজিত হয়ে আসছেন দেবী দুর্গা। একশো বছরে পা দিতে আর মাত্র ২ বছরের অপেক্ষা।