সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১০ থেকে ১২ অক্টোবর বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের (Durga Puja 2024) বচ্ছরকার চারদিন। ২ অক্টোবর মহালয়া, দেবীপক্ষের শুরু। তার পরই চূড়ান্ত হবে মায়ের জন্য প্রতীক্ষা। আর পুজো এলেই যে প্রশ্নটি আসে, তা হল এবার দেবীর আগমন ও গমন কোন বাহনে? কিন্তু আদৌ কি এর সঙ্গে শুভ-অশুভর যোগ রয়েছে?
শাস্ত্র অনুযায়ী এবার দেবীর আগমন দোলা বা পালকিতে। ফল মহামারী ও দুর্ভোগ। গমন ঘোটকে বা ঘোড়া। ফল ছত্রভঙ্গ। অর্থাৎ সামাজিক, রাজনৈতিক ও সামরিক অস্থিরতা বৃদ্ধি। কিন্তু এই শুভ-অশুভর যোগ কি সত্যিই হয়? কীভাবেই বা তা নির্ধারিত হয়? এর পিছনে রয়েছে বারের হিসেব। ষষ্ঠীতে দেবীর বোধন হলেও, মায়ের মর্তে আগমনের আসল তিথি সপ্তমী। শাস্ত্রে আছে- 'রবি চন্দ্রে গজারূঢ়া, ঘোটকে শনি ভৌময়োঃ,/ গুরৌ শুক্রে চ দোলায়াং, নৌকায়াং বুধবাসরে।' অর্থাৎ সপ্তমী রবি বা সোমবার হলে দেবীর বাহন হবে গজ। আবার সপ্তমী শনি বা মঙ্গলবার হলে দেবীর বাহন হয় ঘোটক বা ঘোড়া। সপ্তমী বৃহস্পতি বা শুক্রবার হলে দেবীর বাহন দোলা। সপ্তমী বুধবার হলে দেবীর বাহন নৌকা। সেই হিসেবেই এবার দেবীর দোলায় আগমন এবং ঘোটকে গমন। অর্থাৎ দুই ক্ষেত্রেই ফলাফল অশুভ। কিন্তু এই যোগ কি সত্যি?
বিখ্যাত ইতিহাসবিদ, মহাকাব্য ও পুরাণ বিশেষজ্ঞ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ীর মতে, দেবীর আগমন ও গমন কখনও অমঙ্গলের হতে পারে না। মা আসছেন। বাপের বাড়িতে কদিন থেকে ফিরে যাবেন। এই আসা কখনওই অমঙ্গলের সূচক হতেই পারে না। তাঁর মতে, বারের হিসেবে গমন ও আগমনের হিসেব করাটা অর্থহীন। সোমবার শিবপুজো করার মতো বিষয়কে যেভাবে ব্যাখ্যা করা যায়, সেভাবে কিন্তু দেবী দুর্গার গমন ও আগমনের হিসেবের বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করা যায় না। তাছাড়া কৃষ্ণদাস কবিরাজের 'চৈতন্যচরিতামৃত' উদ্ধৃত করে তিনি বলছেন, 'তারে জানে সুকৃতি যে দোলা-ঘোড়া চড়ে।' অর্থাৎ সুকর্ম করেছে সেই মানুষটি, যে দোলা ও ঘোড়ায় চড়ে। এখানে দোলা মানে কিন্তু নাগরদোলা নয়। পালকি। সুতরাং দোলায় চড়া এক্ষেত্রে শুভ। তাহলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বদলে গেল কেন। সুতরাং এই ভাবে হিসেব করা ঠিক নয়।