প্রণব অধিকারী, আগরতলা: বিজেপি শাসিত রাজ্যেই বন্ধ হচ্ছে দুর্গাপুজো! ৪৪ বছর পর বন্ধ হয়ে গেল ত্রিপুরার গন্ডাছড়ার বিস্তীর্ণ এলাকার পুজো। বাঙালিরা এখন রয়েছেন শরণার্থী শিবিরে। সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে বিধ্বস্ত গোটা এলাকা। ১৯৮০ সাল থেকে গণ্ডাছড়ায় চলছে দুর্গাপুজো । সাম্প্রদায়িক হিংসা, বৈরীদের ফতোয়া, প্রাকৃতিক দুর্যোগ সব মোকাবিলা করেই বছর বছর হয়ে চলেছে পুজো । কিন্তু ৪৪ বছর পর ২০২৪-এ এসে থমকে গেল পুজোর আয়োজন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি মহকুমায় ২২টি পুজো উদ্যোক্তাদের কেউই এবার পুজো করছে না । প্রশাসনের তরফে কয়েক দফা মিটিং করার পরও বাস্তবতা হল, হচ্ছে না পুজো ।
এবছর পুজো না হওয়ার পেছনে মূল কারণ হল পুজোর আনন্দে গা ভাসাতে রাজি নন উদ্যোক্তারা। ১২ জুলাই গোষ্ঠী সংঘর্ষ ও গোষ্ঠী হিংসার কারণে প্রায় ২০০ বাঙালি পরিবার ঘরছাড়া। সহায়সম্বল হারিয়েছেন তাঁরা। ৪৩৭ জন মানুষ এখনও ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন । এই বিশাল সংখ্যক মানুষকে ত্রাণ শিবিরে রেখে তাঁরা পুজো করবেন না বলে সাফ জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।
গন্ডাছড়ার পুজো উদ্যোক্তা মাতৃ স্নেহ ক্লাবের লিটন দাস, যুব সংঘের হরি শংকর রায়, নেতাজি ক্লাবের নিবারণ দাস, জয় মা তারা সংঘের শ্রীমতি জোৎস্না দাস-সহ সকল ক্লাব কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বিনা অপরাধে সর্বস্ব খোয়ানো মানুষগুলোকে ত্রাণ শিবিরে রেখে পুজো করতে চাইছেন না তাঁরা । এই দুঃখের আবহে আনন্দের জায়গা নেই। তার উপর বন্যার বিভীষিকাময় ধ্বংসলীলা তো রয়েছেই । ফলে মন ও মানসিকতা এবার মাতৃ আরাধনায় নেই বলেই স্পষ্ট জানাচ্ছেন উদ্যোক্তারা।
এই সিদ্ধান্তের বিরূপ প্রভাব পড়েছে সাধারণ মানুষের উপর ও বাজারে । জমছে না বাজার । কেনাকাটায় মন নেই মানুষের । অথচ মহকুমা শাসক ও জেলা শাসক আশ্চর্যজনক ভাবে স্বীকার করছেন না পুজো হচ্ছে না !তাঁরা গোটা বিষয়টি নানা অছিলায় চেপে যেতে চাইছেন । অথচ বাস্তবতা হল উদ্যোক্তাদের পুজোমুখী করতে আর্থিক সাহায্যেরও প্রলোভন দিয়েছিল প্রশাসন । কিছুতেই কিছু হয়নি ।