অভিরূপ দাস: আর দশদিনও বাকি নেই। কিন্তু এখনও দমকলের ছাড়পত্র নেয়নি রাজ্যের প্রায় দশ হাজার পুজো।
মণ্ডপে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা কেমন? সব খতিয়ে দেখে ছাড়পত্র দেয় দমকল বিভাগ। এর জন্য আলাদা টাকাও দিতে হয় না। তারপরেও একাধিক পুজো ছাড়পত্রের জন্য আবেদন না করায় দমকল বিভাগের কপালে এখন ভাঁজ পড়েছে। বুধবার পুজো নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠক হয় দমকল দপ্তরে। মন্ত্রী সুজিত বসুর সঙ্গে আলোচনায় হাজির ছিলেন দমকল বিভাগের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব মনোজ আগরওয়াল, ডিজি রণবীর কুমার।
[আরও পড়ুন: ৮ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরলেন রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়]
৪১ হাজার দুর্গাপুজো হয় বাংলায়। এখনও পর্যন্ত ৩১ হাজার ৫৯৭ টি পুজো দমকলের অনুমতি নিয়েছে। বুধবার রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু জানিয়েছেন, এখনও অনেকে অনুমতি নেয়নি। তাদের আবেদন করব দ্রুত অনুমতি নিন। ফি বছর পুজোয় শর্ট সার্কিট থেকে মণ্ডপে আগুন লেগে যাওয়ার ঘটনা ঘটে শহরে-মফস্বলে।
দেখা যায় দুর্ঘটনার নেপথ্যে ইলেকট্রিকের পুরনো তার। বাঁশ, ত্রিপল, দড়ি, প্লাইউড, কাপড়ের মতো দাহ্য পদার্থ দিয়েই তৈরি হয় মণ্ডপ। একবার আগুন লাগলে জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যায়। এদিন প্রতিটি পুজো উদ্যোক্তার কাছে দমকল মন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, মণ্ডপের ভেতরে যে তার ব্যবহার করবেন, তা যেন অবশ্যই নতুন হয়। লোকবলের অভাব রয়েছে দমকল বিভাগে। পুজোর মুখেই ১২৫৯ ফায়ার অপারেটর নিয়োগ করছে দপ্তর।
১৫৭ টি ফায়ার স্টেশন আছে বাংলায়। ফি বছর পুজোয় আকস্মিক দুর্ঘটনা মোকাবিলা করতে ৩৮ টি অস্থায়ী ফায়ার স্টেশন তৈরি করা হয়। এবার সে জায়গায় একশোটি অস্থায়ী ফায়ার স্টেশন তৈরি করা হচ্ছে দমকলের দপ্তরের পক্ষ থেকে। কলকাতার দুটি ফায়ার স্টেশনকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, টালিগঞ্জ ফায়ার স্টেশন আর কালীঘাট ফায়ার স্টেশনের বাড়িগুলি অনেক পুরনো। সেগুলি ভেঙে নতুন করে তৈরি করা হবে।
পুজো খতিয়ে দেখতে আগামী ১৮ অক্টোবর থেকে রাস্তায় নামবে দমকল টিম। আধিকারিকরা পুলিশের সঙ্গে প্রতিটি মণ্ডপ পরিদর্শন করবেন। বঙ্গের একাধিক বড় পুজোয় অগ্নিনির্বাপন সচেতনতার জন্য দমকলের স্টল থাকবে। মাইকে ঘোষণা চলবে প্রতি মুহূর্তে। জানা গিয়েছে, শ্রীভূমি স্পোর্টিং, চেতলা অগ্রণী, নিউ আলিপুর সুরুচি সঙ্ঘ, হিন্দুস্তান ক্লাব, ত্রিধারা সম্মিলনী, বাগবাজার সার্বজনীন, সল্টলেক এই ব্লক, জিডি ব্লক, দেশপ্রিয় পার্ক, একডালিয়া এভারগ্রিন, পার্কসার্কাস, মহম্মদ আলি পার্ক, ভবানীপুর অগ্রদূতে থাকবে দমকলের স্টল।
ড্রোনের মাধ্যমে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা করছে দমকল। এমন জায়গায় যেখানে পৌঁছানো যাচ্ছে না সেখানে ড্রোনের মাধ্যমে জল দেওয়া হবে। দমকল মন্ত্রী জানিয়েছেন, পুজোর পরেই চলে আসবে সেই ড্রোন। টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। পুজোর পরে একাধিক দমকল কেন্দ্র উদ্বোধন হবে বাংলায়। জিটি রোডে হাওড়া ফায়ার স্টেশনের কাজ শেষ। উদ্বোধন হবে শিগগিরি। দুর্গাপুজোর পরেই চালু হবে বিরাটি দেগঙ্গা, সবং ফায়ার স্টেশন।
[আরও পড়ুন: পারিবারিক অশান্তির জের? বিডিও অফিসে এসে পেটে ছুরি মেরে আত্মহত্যার চেষ্টা কর্মীর!]