অভিরূপ দাস: এমবিবিএস (MBBS) পাশ করার পর বাধ্যতামূলক এক বছরের ইন্টার্নশিপ। সেই ইন্টার্নশিপেই এবার আয়ুর্বেদ (Ayurved), যোগা, ইউনানি, সিদ্ধা, হোমিওপ্যাথি, সোয়া রিগপা। এর মধ্যে থেকে যে কোনও একটি বিষয় বেছে নিয়ে সাতদিন প্র্যাকটিস করতে হবে এমবিবিএস পাশ করা ছাত্র ছাত্রীদের। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের (National Medical Commission) নয়া এই নির্দেশিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ চিকিৎসকরা।
ওয়েস্টবেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের (West Bengal Doctors’ Forum) পক্ষ থেকে চিকিৎসক কৌশিক চাকি জানিয়েছেন, ”ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন যখন তৈরি হয়, তখনই আমাদের আপত্তির কথা আমরা জানিয়েছিলাম।” ডব্লুবিডিএফ-এর বক্তব্য, নীতি নির্ধারকরা মিশ্র চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন, এটা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক এবং মধ্যযুগীয় চিন্তাধারার ফসল! এইভাবে ‘মিক্সোপ্যাথি’ দিয়ে মানুষকে প্রতারিত করা হচ্ছে। চিকিৎসকদের দাবি, এই ধরণের ভ্রান্ত নীতি প্রণয়ন না করে স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় বাড়াতে হবে। আধুনিক মেডিক্যাল কলেজের এবং প্রশিক্ষিত চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
[আরও পড়ুন: রোগী দিব্যি বেঁচে, লেখা হল ডেথ সার্টিফিকেট! বিতর্কে লেকটাউনের হাসপাতাল]
ফাইনাল এমবিবিএস পাশ করার পরেই ছাত্র-ছাত্রীদের চিকিৎসক হিসেবে রেজিস্ট্রেশন মেলে না। প্রথমে একটি প্রভিশনাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। পার্মানেন্ট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটের জন্য ইন্টার্নশিপ আবশ্যক। একে বলা হয় কম্পালসারি রোটেটিং ইন্টার্নশিপ। কমিউনিটি মেডিসিন, জেনারেল মেডিসিন, সাইকিয়াট্রি, পেডিয়াট্রিকের মতো একাধিক বিষয়ে প্র্যাকটিশ করে চৌখস হয়ে উঠতে হয় পড়ুয়াদের। এক বছরের এই বাধ্যতামূলক ইন্টার্নশিপেই জায়গা পেয়েছে ইলেকটিভ এক্সক্লুসিভ বলে একটি বিষয়। যেখানে ৭ দিন হোমিওপ্যাথি কিম্বা ইউনানি নিয়েও প্র্যাকটিশ করতে হবে এমবিবিএস পাশ করা পড়ুয়াদের। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও। জনস্বাস্থ্য আধিকারিক অনির্বাণ দলুই জানিয়েছেন, বাধ্যতামূলক ইন্টার্নশিপের মধ্যে এক সপ্তাহের আয়ুশ পোস্টিং দেওয়া মানে একটা ‘জগাখিচুড়ি’সিস্টেমের জন্ম দেওয়া। এতে কোনও শাস্ত্রেরই কোনও উপকার হবে না।