চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: একটানা বৃষ্টিতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে ২৩ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিল দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি)। মঙ্গলবার তারা জানিয়েছে, জলাধারের ছ’টি গেট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দুপুরের পর থেকে তা খোলাও শুরু হয়। রাত পর্যন্ত এই জল ছাড়া হবে।
ডিভিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, মাইথন ড্যামে জলস্তর উঠে গেছে ৪৭৫ ফুট পর্যন্ত। যেখানে ডেঞ্জার লেভেল রয়েছে ৪৮০ ফুট। একইভাবে পাঞ্চেত ড্যামে জলস্তর উঠে গিয়েছে ৪০৬ ফুট পর্যন্ত। এখানে ডেঞ্জার লেভেল রয়েছে ৪১০ ফুট পর্যন্ত। জলাধারগুলিতে এখন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল রয়েছে। টানা কয়েক দিন বৃষ্টি হলে একসঙ্গে অনেকটা জল ছাড়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক জায়গাতেই দামোদরের নদীখাত অগভীর হয়ে গিয়েছে। ফলে প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। তাই আগে থেকেই জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: চিত্তরঞ্জন রেল কারখানা থেকে চুরি যন্ত্রাংশ, গ্রেপ্তার ৭ আরপিএফ কর্মী]
বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের ফলে বৃষ্টি শুরু হয়েছে সোমবার থেকে। শুরু হয়েছে টানা বর্ষণ। মঙ্গলবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টিও বেড়েছে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। কোথাও কোথাও ভারী থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে দুপুরের দিকে। বুধবারও প্রবল বৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা। প্রতি বছরই দামোদরের জলে তার নিম্ন অববাহিকা অর্থাৎ বর্ধমান, হুগলি ও হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকার একাংশ প্লাবিত হয়ে যায়। বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি বেশি হলেও অনেক সময় হাওড়া জেলার অন্তর্গত দামোদর অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাই একবারে জল না ছেড়ে দফায় দফায় ছাড়তে চাইছে ডিভিসি।
[আরও পড়ুন: বুধবার রাজ্যে সম্পূর্ণ লকডাউনে বাতিল একাধিক ট্রেন, দেখে নিন তালিকা]
ঝাড়খণ্ডে অধিক বৃষ্টিপাতের জন্য তিলাইয়া ড্যামে জল ছাড়লে মাইথনে ও পাঞ্চেতে এসে জমা হয়। সোমবার ও মঙ্গলবারের বৃষ্টিতে ঝাড়খণ্ড থেকে প্রায় ৫ হাজার কিউসেক জল মাইথনে এসে জমা হয়েছে। পাঞ্চেত থেকে জমা হয়েছে প্রায় ৯ হাজার কিউসেক জল। সেই সামঞ্জস্য মিলিয়ে মাইথন থেকে জল ছাড়া হয়েছে প্রায় ৯ হাজার কিউসেক জল। পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়া হয়েছে সাড়ে ১০ হাজার কিউসেক জল। ডিভিসি মাইথনের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক অপূর্ব সাহা বলেন, রাত পর্যন্ত মোট ২৩ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হবে। তিনি বলেন, এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে দামোদর উপত্যকায় টানা বৃষ্টি হলে সমস্যায় পড়তে পারে নিম্ন অববাহিকার জেলাগুলি। বিশেষ করে ,দামোদরে নিচে পূর্ব বর্ধমান ও হুগলির নদী তীরবর্তীর বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।
The post টানা বৃষ্টির জের, মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে ২৩ হাজার কিউসেক জল ছাড়ল ডিভিসি appeared first on Sangbad Pratidin.