সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: গরু পাচার মামলায় বহু আইনি টানাপোড়েনের পর বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mandal) দিল্লি নিয়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। তাঁকে আপাতত দিল্লির ইডি (ED) দপ্তরে রেখেই জেরা চলছে। শুক্রবার পেশ করা হয়েছে রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে। ইডি ১১ দিনের হেফাজতে চেয়েছে তাঁকে। কিন্তু তার তীব্র বিরোধিতা করেছেন অনুব্রত নিজে এবং তাঁর আইনজীবী। তাঁর স্পষ্ট দাবি, গত তিনদিনে তাঁর মক্কেলকে মাত্র ৩, ৪টি প্রশ্ন করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে কীভাবে ১১ দিনের হেফাজত চাওয়া যেতে পারে? এতদিনের হেফাজত চাওয়ার জন্য আরও শক্তপোক্ত কারণ চাই। তাছাড়া অনুব্রত মণ্ডলের শরীরও এদিন বিশেষ ভাল ছিল না। কথা বলতে গিয়ে বারবার তিনি কাশছিলেন।
শুক্রবার দুপুর ১২টা নাগাদ অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে দিল্লির (Delhi) রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে পেশ করে ইডি। তার আগে রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে তাঁর শারীরিক পরীক্ষা হয়। শুরু হয় সওয়াল-জবাব। ইডির তরফে জানানো হয়, অনুব্রতকে জেরার ক্ষেত্রে ভাষাগত সমস্যা হচ্ছে। দোলের দিন রাতে তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া। পরদিন হোলির জন্য কোনও দোভাষী পাওয়া যায়নি। তাই জেরাপর্ব ঠিকমতো হয়নি। অনুব্রত নিজে ইডিকে জানিয়েছেন, তিনি লিখতে পারেন না, শুধু সই করতে পারেন। তাই তাঁকে দিয়ে বয়ান লেখানো যায়নি। ইডির দাবি, অনুব্রত হিন্দিতে কথা বলতে পারছেন না, লিখতে পারছেন না। তাই দোভাষী (Interpreter) অত্যন্ত জরুরি। আবেদন মেনে নিয়োগ করা হয়েছে দোভাষী। ইডি আরও জানায়, আগামী ১১ দিনে এই মামলায় আরও ১২ জনকে তলব করা হবে। তার জন্য দোভাষীকে দরকার।
[আরও পড়ুন: গরুপাচার মামলা: ফের অনুব্রতকন্যা সুকন্যাকে তলব ইডির, মুখোমুখি জেরার সম্ভাবনা]
অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেলের সঙ্গে ৩০ মিনিট আলাদা করে কথা বলার অনুমতি রয়েছে, কিন্তু তিনি তা করতে পারছেন না। সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারি চলছে। ইডির তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে বিচারক নানা প্রশ্ন করেন। ৬০ দিন পর ইডি কী কী তথ্য হাতে পেয়েছে, তা জানতে চান। অনুব্রত মণ্ডলের কাছে বিচারক জানতে চান, তিনি দোভাষী মারফত কিছু বলতে চান কি না। অনুব্রত বাংলায় বলেন, তিনি কি এজলাস ছাড়তে পারেন? তাতে বিচারক জানান, তাঁকে কিছু খাওয়ানো হোক। অনুব্রতকে ইডি হেফাজতে পাবে কি না, কতদিনের হেফাজত মিলবে, সেই রায় আপাতত স্থগিত রেখেছে। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর ফের এজলাস বসবে।
[আরও পড়ুন: ডিএ ধর্মঘট রুখতে আরও কড়া নবান্ন, চার বেলা হাজিরা খাতায় সইয়ের নির্দেশ]
অন্যদিকে, এই মামলায় অনুব্রতকন্যা সুকন্যাকে দিল্লিতে ফের তলব করেছে ইডি। অনুব্রত-সুকন্যা এবং হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে।