সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘ ১২ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদের পর আর্থিক তছরুপের অভিযোগে গ্রেপ্তার মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED) আধিকারিকরা জানান, জিজ্ঞাসাবাদের সময় দুর্নীতি ও অর্থ পাচার সংক্রান্ত বেশ কিছু প্রশ্ন এড়িয়ে যান অনিল। সেই কারণেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে বেশ কয়েকবার সমন এড়িয়েছিলেন অনিল দেশমুখ। এমনকী হাজিরা এড়াতে বম্বে হাই কোর্টের দ্বারস্থও হয়েছিলেন। তবে সেখানেও রেহাই মেলেনি। অবশেষে সোমবার বেলা ১২টা নাগাদ ইডির সামনে হাজিরা দেন তিনি। ইডি আধিকারিকদের মুখোমুখি হওয়ার আগে ভিডিও বার্তা দেন অনিল। জানান, তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করবেন। ইডি-কে এড়িয়ে যাওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, আদালতে তাঁর আবেদনের শুনানি চলছিল। নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ করেছেন। তবে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি একাধিক প্রশ্নের উত্তর দেননি বলেই দাবি ইডির। আজ, মঙ্গলবার আদালতে পেশ করা হলে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিজেদের হেফাজতে চাইবে ইডি। তবে অনিল দেশমুখের আইনজীবী এর বিরোধিতা করবেন বলেই খবর। প্রসঙ্গত, প্রায় ১০০ কোটি টাকার তোলাবাজি মামলায় অভিযুক্ত দেশমুখ। চাপের মুখে গত এপ্রিলে পদত্যাগ করেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ‘আপনি চরিত্রহীন’! বোরখার বদলে জিনস পরায় চূড়ান্ত হেনস্তার শিকার মুসলিম তরুণী]
উল্লেখ্য, মুকেশ আম্বানির (Mukesh Ambani) বাড়ির কাছে বিস্ফোরক ভরতি গাড়ি উদ্ধারের ঘটনার তদন্ত করছিলেন মুম্বইয়ের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার পরমবীর সিং (Param Bir Singh)। কিন্তু নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে পরমবীরকে সরিয়ে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশমুখ। তাঁকে বদলি করা হয় হোমগার্ডে। এর কয়েকদিনের মধ্যেই চিঠি লিখে অনিল দেশমুখের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন পরমবীর। জানান, ধৃত শচীন ওয়াজেকে ব্যবহার করে মাসে ১০০ কোটি টাকা তোলাবাজির ব্যবস্থা করেছিলেন দেশমুখ। হোটেল-রেস্তরাঁ-ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে মাসে ৪০ কোটি টাকা তোলা হয়েছিল। বাকি ৬০ কোটি অন্য উপায়ে জোগাড় হত বলে জানান পরমবীর। মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে (Uddhav Thakray) এবং শরদ পওয়ারকে চিঠি দিয়ে গোটা বিষয়টি জানিয়েও কোনও সুফল তিনি পাননি।
আর্থিক তছরুপের মামলায় এর আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল অনিল দেশমুখের (Anil Deshmukh) আপ্তসহায়ক-সহ দু’জনকে। আপ্তসহায়ক সঞ্জীব পালান্দে ও সহায়ক কুন্দন শিন্ডেকে আর্থিক তছরূপের মামলায় বেশ কিছু প্রশ্ন করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তদন্তকারীদের দাবি, প্রশ্নের সদুত্তর দেননি কেউই। তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগেই তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তারপর থেকেই মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপর বিপদ আরও ঘনাতে থাকে। অবশেষে গ্রেপ্তার করা হল তাঁকে।