দেব গোস্বামী, বোলপুর: অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর মেয়ে সুকন্যার নামে বিপুল সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। দুটি কোম্পানির ডিরেক্টর পদে রয়েছেন সুকন্যা মণ্ডল (Sukanya Mandal)। একটি সংস্থা, নীর ডেভেলপার এবং অন্য একটি সংস্থা এএনএম অ্যাগ্রোকেম। এই এএনএম অ্যাগ্রোকেমের অধীনে রয়েছে ভোলে ব্যোম রাইস মিল। বোলপুর পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে অনুব্রত মণ্ডলের নামে ২৪০ কাঠা জমির (Land)সন্ধান মিলেছে। এছাড়াও মেয়ে সুকন্যার নামেও রয়েছে ১২০ কাঠার বেশি জমি। ওইসব জমির আনুমানিক মূল্য প্রায় ২৫ কোটি টাকা। ইডির তরফে এসব তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, বোলপুরের (Bolpur) মকরমপুরে দু’টি প্লট রয়েছে সুকন্যার নামে। বল্লভপুরেও রয়েছে চারটি প্লট। কালিকাপুর ও গয়েশপুর মিলিয়ে সুকন্যার নামে ২৮টি জমির নথির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। নিউটাউনেও দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে সুকন্যার নামে। সম্প্রতি গরুপাচার মামলায় (Cow Smuggling) অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে ৩৫ পৃষ্ঠার যে চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই (CBI), তাতে দেখা গিয়েছিল, সুকন্যার সম্পত্তিও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘কুণাল ঘোষকে প্রণাম, ভবিষ্যদ্বাণী মিলেছে’, ‘সুপ্রিম’ রায়ে বললেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়]
প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা সুকন্যার ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে বার্ষিক আয় ছিল ৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। ২০১৮-১৯ সালে আয়কর রিটার্নে সুকন্যা তাঁর আয় দেখিয়েছিলেন ১ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা। ১৯-২০ সালে তাঁর আয় ছিল প্রায় ১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা। আর ২০-২১-এ তাঁর আয় দেখানো হয়েছে ৯২ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা। এই হিসেবের সবই ছিল তাঁর ব্যক্তিগত আয়। চালকল বা সংস্থাগুলির আয়ের হিসাব আলাদা। এছাড়া তাঁর নামে ৩ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিটও (FD) রয়েছে। অনুব্রতকে গ্রেপ্তার করার পরেই তদন্তের স্বার্থে বীরভূম জুড়ে চলে তল্লাশি। তদন্তকারী আধিকারিকদের আতসকাঁচের নিচে আনা হয় সুকন্যা-সহ অনুব্রত ঘনিষ্ঠ একাধিক ব্যক্তিকে।
[আরও পড়ুন: পুরনিয়োগ মামলায় আপাতত ED-CBI নয়, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে ‘সুপ্রিম’ স্থগিতাদেশ]
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোলপুর এক বাসিন্দার কথায়, বোলপুরে বেশিরভাগ জমি কার্যত ফাঁকা জমি অবস্থায় পড়ে আছে। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে একদিন সাতটি জমির রেজিস্ট্রি হতে দেখা যায় অনুব্রত কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের নামে। শুধুমাত্র বোলপুর শহরেই ২০১৪ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ২৫ কোটি টাকা সম্পত্তি কেনা হয় বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি। যদিও জেলার তৃণমূলের মুখপাত্র তথা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় জানান, “দু’বছর আগে সুকন্যার মা মারা গিয়েছেন। বাবা এখন দিল্লির জেলে বন্দি। এই মানসিক অবস্থায় কেন তাকে গ্রেপ্তার করা হল? তদন্তকারীদের তো সবরকম সাহায্য করেছিল সুকন্যা।”