shono
Advertisement
Carbide Gun

‘কার্বাইড গান’-ই ‘বাজি’, নিষেধাজ্ঞার পরেও 'অন্ধত্ব'

দৃষ্টিশক্তি হারানোর পথে মধ‌্যপ্রদেশের ৩০০ শিশু।
Published By: Kishore GhoshPosted: 09:31 PM Oct 25, 2025Updated: 09:31 PM Oct 25, 2025

‘কার্বাইড গান’-ই ‘বাজি’। দৃষ্টিশক্তি হারানোর পথে মধ‌্যপ্রদেশের ৩০০ শিশু। নিষেধাজ্ঞা জারি করেও তা প্রয়োগে অনীহা রাজ‌্য বিজেপি সরকারের।

Advertisement

দীপাবলিতে ভয়াবহ ঘটনা ঘটল মধ‌্যপ্রদেশে। বাজি পোড়ানোর আনন্দ নিতে গিয়ে দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসেছে অন্তত ৩০০টি শিশু! ‘কার্বাইড গান’ নামে এক ধরনের বাজি পোড়াতে গিয়ে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে। কার্বাইড গান-কে অবশ‌্য চিকিৎসকরা ঠিক ‘বাজি’ বলতে রাজি নন। তাঁরা এর নাম দিয়েছেন ‘রাসায়নিক বোমা’। এতে ব‌্যবহৃত হয়েছে ক‌্যালশিয়াম কার্বাইড, গান পাউডারের মতো বিস্ফোরক পদার্থ। ক‌্যালশিয়াম কার্বাইডে জল দিলে অ‌্যাসিটিলিন গ‌্যাস তৈরি হয়। এই গ‌্যাস আগুনের সংস্পর্শে বিস্ফোরণ ঘটায়।

কার্বাইড গানগুলি তৈরি হয় পিভিসি বা টিনের পাইপে ক‌্যালশিয়াম কার্বাইড ভরে। কার্বাইড গান ফাটার সময় বিস্ফোরণে পাইপটা টুকরো-টুকরো হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। কার্বাইড গান ফাটার পর তার ক্ষারীয় গ‌্যাস শিশুদের চোখে ঢুকে মারাত্মক ক্ষতি করেছে। আবার বিস্ফোরণে ফেটে যাওয়া পাইপের টুকরো চোখে ঢুকে গিয়ে বহু শিশু ভয়াবহ জখম হয়েছে। কার্বাইড গান ফাটার পর যে প্রবল তাপ তৈরি হয় তা থেকেও অনেকের চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মধ‌্যপ্রদেশের গ্রামীণ এলাকায় কার্বাইড গানের ব‌্যবহার বহু দিন ধরেই রয়েছে। খেতে পশুপাখি তাড়াতে কৃষকরা এই বিশেষ বন্দুক ব‌্যবহার করে থাকে। ফলে, দীপাবলিতে এই বন্দুক বাজি হিসাবে ব‌্যবহৃত হলে যে বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকবে সে-সম্বন্ধে অবগত ছিল মধ‌্যপ্রদেশ প্রশাসন। সেই কারণেই দীপাবলির আগে কার্বাইড গান বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বাজারে দেদার বিক্রি হয়েছে। সংবাদমাধ‌্যমে এ-সংক্রান্ত যেসব খবর প্রকাশিত তাতে দেখা গিয়েছে, সোশ‌্যাল মিডিয়ায় এই বন্দুক ‘ভাইরাল’।

সোশ‌্যাল মিডিয়া থেকেই এটি বাজি হিসাবে শিশুদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আসলে, বাজির আড়ালে এটি যে বিপজ্জনক রাসায়নিক বোমা– সেই সচেতনতা তৈরি করার বিষয়ে রাজ‌্য প্রশাসনের কোনও চেষ্টাই ছিল না। তারা শুধু এটিকে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করেই তার দায় সারে। যখন সোশ‌্যাল মিডিয়ায় এই কার্বাইড গান নিয়ে বিরাট প্রচার চলেছে– তখনও প্রশাসন তলিয়ে দেখেনি যে, শিশুদের মধ্যে এর ব‌্যবহার ছড়িয়ে পড়লে কত বড় বিপদ ঘটে যেতে পারে।

নিষেধাজ্ঞা জারি করেও তার প্রয়োগ না করা সরকারের তরফে সবচেয়ে বড় গাফিলতি। প্রশাসন একদিকে এই বাজির বিপজ্জনক দিক নিয়ে জনগণকে সচেতন করার চেষ্টা করেনি। বাজির উৎপাদন বন্ধ করার জন‌্য নজরদারিও চালায়নি। ব‌্যবসায়ীদের স্বার্থ চিন্তা করে বাজির ব‌্যাপক বিক্রি দেখেও সরকার প্রাথমিকভাবে উদাসীন থেকেছে। এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট মধ‌্যপ্রদেশে বিজেপি সরকারের বেআইনি ব‌্যবসা বন্ধ করার বিষয়ে কোনও রাজনৈতিক সদিচ্ছা নেই।

ব‌্যবসায়ীদের স্বার্থ দেখতে গিয়ে শিশুদের এইরকম ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়ার কাজকে সরকার প্রকারান্তরে একপ্রকার মদতই দিয়ে গিয়েছে বলা যায়। এটি সরকারের সুশাসন দিতে ব‌্যর্থতা এবং নাগরিকদের নিরাপত্তার মতো সাংবিধানিক অধিকার সুনিশ্চিত করার ক্ষেত্রে চরম গাফিলতির নিদর্শন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • কার্বাইড গানগুলি তৈরি হয় পিভিসি বা টিনের পাইপে ক্যালশিয়াম কার্বাইড ভরে।
  • সোশ‌্যাল মিডিয়া থেকেই এটি বাজি হিসাবে শিশুদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
Advertisement