shono
Advertisement
Piyush Pandey

ক্যাচলাইনের অবিকল্প স্রষ্টা, পীযূষের ‘পান্ডেমোনিয়াম’

সম্প্রতি প্রয়াত হয়েছেন ভারতীয় বিজ্ঞাপন জগতের কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব।
Published By: Kishore GhoshPosted: 09:43 PM Oct 26, 2025Updated: 09:43 PM Oct 26, 2025

বিজ্ঞাপন নিয়ে পীযূষ পান্ডে তাঁর বইয়ের নাম রেখেছিলেন ‘পান্ডেমোনিয়াম’। ক্যাচলাইনের অবিকল্প স্রষ্টা প্রয়াত হলেন সম্প্রতি।

Advertisement

‘জ্ঞাপন’ শব্দের অর্থ যে ‘জানানো’, তা কে না জানে! যত কাণ্ড ঘটাচ্ছে সংস্কৃত উপসর্গ ‘বি’ ‘জ্ঞাপন’-এর আগে বসে। তখন আর ‘জ্ঞাপন’ শুধুমাত্র ‘জানানো’ থাকছে না। উপসর্গের ওই ছোট্ট মোচড় তাকে করে তুলছে ‘বিশেষ’ভাবে জানানো। কেমন বিশেষ? যেন সেই ‘জানানো’ বা ‘বার্তা’ হয়ে ওঠে প্রচার। যেন তা বাজারে ‘খায়’। যেন সাধারণ মানুষকে ধাক্কা দেয়। যেন সেই বার্তা সাধারণ মানুষের মন বা পছন্দকে পাকড়ে ধরে। সব বিজ্ঞাপন বা বিশেষভাবে জ্ঞাপন কি আমাদের পাকড়ে ধরে? সব বিজ্ঞাপনে কি থাকে এমন লাইন, যা আমরা ভুলতে পারি না? তা নয় কিন্তু। কিন্তু যখন কোনও বিজ্ঞাপন অবিশ্বাস্য সহজে সংক্ষেপে বলে– ‘পুজোয় চাই নতুন জুতো’, তা আটকে ফেলে বাঙালিকে, তা আটকে যায় বাঙালির স্মৃতিতে এবং অবচেতনায়।

এমনই এক ‘ক্যাচলাইন’ বসিয়ে গিয়েছেন শেক্সপিয়র তাঁর হ্যামলেটের মুখে: ‘টু বি অর নট টু বি’– অস্তিত্ববাদের এমন বিশেষ ও সংক্ষিপ্ত জ্ঞাপন পৃথিবীতে আর একটিও আছে কি? কত যে ক্যাচলাইনের চড়ুইভাতি বিজ্ঞাপনের জগতে! কত ছোট্ট সহজ বাক্যে মানুষকে এমন বার্তা দেওয়া যায় কোনও পণ্য সম্বন্ধে যে, তাকে কিনতেই হবে! বিজ্ঞাপনের জগতে সবসময় চলছে ক্যাচলাইন লেখার প্রতিযোগিতা। ক্যাচলাইন লেখা কিন্তু সহজ নয়। রবীন্দ্রনাথ বোধহয় ক্যাচলাইন সম্বন্ধেই একটি ফুলের মতো ক্যাচলাইন লিখে গিয়েছেন: ‘যে পারে সে আপনি পারে, পারে সে ফুল ফোটাতে’। ‘নাইকি’-র বিজ্ঞাপন এমনই এক মৃত্যুহীন সংক্ষিপ্ত সহজ ক্যাচলাইন, ‘জাস্ট ডু ইট’। ভাবুন তো হীরের বিজ্ঞাপনে এই ক্যাচলাইন: ‘আ ডায়মন্ড ইজ ফরএভার’। কিংবা ‘কেএফসি’-র বাংলা বিজ্ঞাপন: ‘আঙুল চাটা ভাল’।

সম্প্রতি, ৭০ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন হিন্দি বিজ্ঞাপনের জগতে ক্যাচলাইনের অবিকল্প স্রষ্টা, সদা সৃজ্যমান, অবিশ্বাস্য প্রতিভাশালী পীযূষ পান্ডে, যিনি বিজ্ঞাপন নিয়ে তঁার বইয়ের নাম রাখতে পারেন ‘পান্ডেমোনিয়াম’! ইনিই ক্যাডবেরির হিন্দি বিজ্ঞাপনে লিখেছিলেন তিনটি শব্দের এক অবিস্মরণীয় ক্যাচলাইন: ‘কুছ খাস হ্যায়’। এই তিনটি শব্দ বদলে দিয়েছিল ভারতীয় ভাষায় বিজ্ঞাপনের ভাবনা ও সৃজন। এশিয়ান পেন্টসের বিজ্ঞাপনে মাত্র পঁাচটি শব্দের এক সর্বভারতীয় বিস্ফোরণ ভাবতে পেরেছিলেন পীযূষ: ‘হর ঘর কুছ কেহতা হ্যায়’।

পীযূষ পান্ডে বিজ্ঞাপনের জগতে পা রাখেন তাঁর ২৭ বছর বয়সে। অগিলভিতে চাকরির সূত্রে তিনি যখন বিজ্ঞাপনের পৃথিবীতে ঢুকলেন, তখন ভারত জুড়ে সেই পৃথিবীর ভাষা ইংরেজি। সেই সময় চকোলেটের বিজ্ঞাপনে এমন এক ক্যাচলাইন লিখলেন পীযূষ, ভারতীয়দের মুখে মুখে ঘুরতে লাগল: ‘কুছ মিঠা হো যায়ে’। মাত্র চারটি শব্দে ভারত জয়, ভারতীয় ভাষায়! পীযূষ ভাবতে পেরেছিলেন। করে দেখালেন। ‘ফেভিকল’-এর এক অনবদ্য বিজ্ঞাপন হয়তো অনেকেরই মনে আছে। আঠা দিয়ে মাছ ধরা? ভারতের একটি মাথাই ভাবতে পেরেছিল– পীযূষ পান্ডে। একটি অসামান্য ক্যাচলাইনে পীযূষই রেখে গিয়েছেন পৃথিবীর সব্বার মনের কথা: ‘কুছ বাত হ্যায় হাম সব হি মে’।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • পীযূষ পান্ডে বিজ্ঞাপনের জগতে পা রাখেন তাঁর ২৭ বছর বয়সে।
  • একটি অসামান্য ক্যাচলাইনে পীযূষই রেখে গিয়েছেন পৃথিবীর সব্বার মনের কথা: ‘কুছ বাত হ্যায় হাম সব হি মে’।
Advertisement