shono
Advertisement
Durga Puja and Rain

পুজো ও বৃষ্টি, 'বর্ষাসুরে'র ভয়ে কাঁটা পুজো কমিটিগুলি

বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বাংলাজুড়ে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা।
Published By: Kishore GhoshPosted: 10:17 PM Sep 28, 2025Updated: 10:27 PM Sep 28, 2025

বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বাংলাজুড়ে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। মাথায় হাত পুজো কমিটিগুলির। তাহলে কি ঠাকুর দেখার আনন্দ এবার বিপর্যস্ত?

Advertisement

একটা সময় ছিল, বাঙালি যেদিন দেখত আবহাওয়া দপ্তর বলছে, বৃষ্টির সম্ভাবনা, সেদিন ছাতাহীন বাঙালি অভয়ে পা রাখত রাস্তায়। আর যেদিন আবহাওয়া দপ্তর দিত রোদের ভরসা, সেদিন বাঙালি সেই ভরসার গায়ে ঝুলিয়ে রাখত বর্ষাতি। সেই সময় হয়েছে বাসি। এখন আবহাওয়া দপ্তর শক্তপোক্ত হয়েছে প্রকৃতি-প্রজ্ঞায় আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ও যন্ত্রপাতির সহযোগে। এখন প্রায় পুরাকালের দৈববাণীর মতোই মিলে যায় আবহাওয়া দপ্তরের প্রকৃতিবাণী। গতকাল, শনিবার, আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছিল, পুজোর ক’দিনই বাংলাজুড়ে বৃষ্টি নামবে। ঝিরঝিরে হালকা দু’-এক পশলা নয়। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বাংলাজুড়ে ভারী বৃষ্টি। অর্থাৎ বাঙালি এবার পুজোয় ভিজবে। একসময় বাঙালির বায়না হয়ে উঠেছিল, এক বিখ্যাত বাঙালি কবির সৌজন্যে, বিখ্যাত বিজ্ঞাপন– ‘পুজোয় চাই নতুন জুতো’। এ-বছর পুজোয়, যা মনে হচ্ছে, বাঙালির চাই নতুন ছাতা।

যত বৃষ্টিই আসুক, পুজোয় বাঙালি পরোয়াহীন। ঠাকুর দেখা, পুজোর আনন্দ, শারদীয় টোটো, বৃষ্টির মধ্যে মাতোয়ারা ভিড়ের অ্যাডভেঞ্চার– এসব রুখে দেওয়ার সাধ্য প্রকৃতির নেই।
তবে এ-কথাও ঠিক, পুজোর প্রথম থেকে একেবারে শেষ পর্যন্ত সারা বাংলাজুড়ে যেভাবে ঘনিয়ে আসার কথা আশ্বিনের বর্ষা, তা জেনে বাঙালির মন কিন্তু ইতিমধ্যেই স্য়াঁতসেঁতে হয়েছে। আসন্ন বৃষ্টি এবং তার সঙ্গে অনিবার্য আতান্তর কী করে সামলানো যাবে, সে-চিন্তা পুজো কমিটিগুলির ঘুম কাড়ছে সন্দেহ নেই। এছাড়া বিভিন্ন আবাসনে পুজোর সঙ্গে
জড়িত বাঙালির সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। সুতরাং এ বছর ভেজা-পুজোর সরাসরি বেদনা ও দুশ্চিন্তায় ভোগা বাঙালির সংখ্যা নেহাত কম হবে না।

বৃষ্টি হলে, কি শহরে কি গ্রামে, রাস্তার অবস্থা কেমন হয়, তা আমরা হাড়ে-হাড়ে জানি। আকাশ থেকে শারদ বাংলায় যদি সত্যিই জলের ধস নামে, ঠাকুর দেখার আনন্দ বিপর্যস্ত হবেই। হাঁটু পর্যন্ত জলে নতুন পোশাক, ঝলমলে পুজোর সাজ, রং, মেকআপের কী অবস্থা হবে, ভাবলে মনে বিষাদের সঞ্চার হচ্ছে বইকি। তারপর নতুন জুতো, সেগুলোকেই-বা কীভাবে কোন প্রাণে বাঙালি সমর্পণ করবে হাঁটুডোবা রাস্তার জলে? ভাবতেই তো চোখ ফেটে জল আসছে। বিশেষ করে পুজোর বৃষ্টির তো ঝাপটা লাগবেই বাবুবিবিদের পুজোর স্টাইলে, ফ্যাশনে, জৌলুসে, রোশনে। কী অবস্থা হবে তাদের ভিজে সপসপে হয়ে, কাদায় জবজবে হয়ে।

রবীন্দ্রনাথ অবশ্য বৈষ্ণব-কবিদের কটাক্ষ করেছেন অভিসারে বৃষ্টিভেজা রাধার চুলের, মুখের প্রলেপের, চোখের কাজলের, পোশাকের কী বিচ্ছিরি অবস্থা হত, তার কোনও বাস্তব বর্ণনা তাঁরা করেননি বলে। বর্ষার কবি স্বয়ং রবীন্দ্রনাথও অসময়ের বৃষ্টিতে অসহায় বোধ করেছেন: ‘এ-ঘর থেকে ও-ঘরে পায়চারি করে বেড়াতে লাগলুম। অন্ধকার হয়ে আসছে, গড় গড় শব্দে মেঘ ডাকছে, বিদ্যুতের উপর বিদ্যুৎ’ (জানুয়ারি, ১৮৯০, সাজাদপুর: ছিন্নপত্রাবলী)। এ-বছর পুজোয় বজ্রবিদ্যুৎ বৃষ্টির ঠেলায় বাঙালিকে না বিপর্যস্ত রাবীন্দ্রিক পায়চারিতে পড়তে হয়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • এ-বছর পুজোয়, যা মনে হচ্ছে, বাঙালির চাই নতুন ছাতা।
  • অন্ধকার হয়ে আসছে, গড় গড় শব্দে মেঘ ডাকছে, বিদ্যুতের উপর বিদ্যুৎ’ (জানুয়ারি, ১৮৯০, সাজাদপুর: ছিন্নপত্রাবলী)।
Advertisement