’৪৭ সালের পর এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় কোনও বাম প্রতিনিধি থাকল না। শুধু সেখানেই শেষ নয়, এই প্রথম বিজেপির মতো একটি ‘দক্ষিণপন্থী’ শক্তি ৩ থেকে ৭৭টি আসনে পৌঁছে প্রধান বিরোধী দল হল। এই বৃদ্ধিটা কিন্তু খুব সামান্য নয়। এ অবস্থায় তাহলে সিপিএমের ভবিষ্যৎ কী? লিখছেন জয়ন্ত ঘোষাল।
সিপিএম নেতা বিমান বসুর বয়স এখন ৮০। ১৯৪০ সালের ১ জুলাই তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সেদিন টিভিতে বিমান বসুর সাংবাদিক বৈঠক দেখছিলাম। বৈঠক শুরু হওয়ার আগে তিনি প্রত্যেকের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললেন, ‘সকলে রেডি? তাহলে শুরু করি?’ বিমানবাবুকে দেখে মনে হল, এইরকম একটা বিপর্যয়ের পরেও মানসিকভাবে তিনি যতই দুঃখিত হোন না কেন, তাঁর মনের জোর অপরিসীম।
সংযত জীবন। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের পার্টি অফিসের একটা ছোট্ট ঘরে থাকেন। ছাদের টবে নানা ধরনের শাক-সবজি ফলাতেন এবং তা অকাতরে বিলি করতেন, এখনও করেন। বিমান বসুর মতো এমন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বর কিন্তু আচমকা জন্ম হয় না।
প্রয়াত সিপিএম নেতা শ্যামল চক্রবর্তীর আত্মজৈবনিক রচনায় পড়েছি, মালদা কলেজে ১৯৬০ সালে একটি আন্তর্কলেজ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিমানদার সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয় হয়েছিল। বিমানদা গুরুদাস কলেজ থেকে আইএ পাস করে মৌলানা আজাদ কলেজ থেকে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। সুভাষ চক্রবর্তীকে সঙ্গে নিয়ে, শ্যামল চক্রবর্তী মতিঝিল কলেজের প্রতিনিধি হয়ে, মালদা আন্তর্কলেজ বিতর্কের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন।
[আরও পড়ুন: হলে বসে পরীক্ষা নেই এবছরও, মূল্যায়নের উপায় একমাত্র কাউন্সেলিং]
শ্যামল চক্রবর্তী লিখেছেন, বিমান বসু ছিলেন অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের সন্তান। বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছাকাছি থাকতেন। বাড়ির ছোট ছেলে, দাদা এবং মায়ের খুব আদরের। বিমানদার বড় দাদা ছিলেন একজন বড় ব্যবসায়ী। ময়রা স্ট্রিটে থাকতেন। পারিবারিক রাজনৈতিক পরিবেশের বিরুদ্ধে গিয়ে এবং অভিভাবকদের বাধা সত্ত্বেও বিমানদা স্কুলজীবন থেকেই রাজনীতিতে যোগ দেন। তাঁর বাড়িতে শ্যামলদাদের অবারিত যাওয়া-আসা ছিল। বিমানদার মা ছিলেন খুবই স্নেহপ্রবণ। শ্যামলদা লিখেছেন যে, বাড়ির অন্য সন্তানদের তুলনায় বিমানদার প্রতি পক্ষপাতিত্ব তাঁর যেন একটু বেশিই ছিল। সেই সূত্রে শ্যামলদারাও তাঁর ভালবাসা-স্নেহ পেয়েছেন। শীতকাল এলে বিমানদার বাড়িতে প্রায়ই শ্যামলদাদের ডাক পড়ত পিঠে-পায়েস খেতে। পার্টির সবসময়ের কর্মী হওয়ার পর বিমানদা, এত আদরের হওয়া সত্ত্বেও, সেই বাড়ি ছেড়ে দিয়ে, বেনিয়াপুকুর রোডের কৃষক সভা সংলগ্ন একটি ছোট্ট ঘরে থাকতে শুরু করেন।
এই ছোট্ট ঘটনাটি আজ এত বছর পর মনে করতে এবং অন্যদের মনে করাতে ইচ্ছা হল। সিপিএমের সেই প্রজন্মের নেতাদের মধ্যে আর ক’জনই বা আছেন? শ্যামল চক্রবর্তী, নিরুপম সেন চলে গিয়েছেন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর শরীর ভাল নেই। জ্যোতিবাবু তো আগেই চলে গিয়েছেন, অনিল বিশ্বাসেরও অকালপ্রয়াণ ঘটেছে, সুভাষ চক্রবর্তীও নেই। এহেন পরিস্থিতিতে সদ্য হওয়া বিধানসভার ফলাফল রীতিমতো মর্মান্তিক। সম্ভবত যাঁরা মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির ভাবধারার প্রতি এখনও আস্থা রাখেন, তাঁরা হতাশ। মার্কসবাদের প্রাসঙ্গিকতা যখন পৃথিবী জুড়ে বাড়ছে, কার্ল মার্কস নিয়ে যখন নানারকম আলোচনা ও গবেষণা হচ্ছে, তখন পশ্চিমবঙ্গের এই হাল তাঁদের বিষণ্ণ করছে!
’৪৭ সালের পর এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় কোনও বাম প্রতিনিধি থাকল না। শুধু সেখানেই শেষ নয়, এই প্রথম বিজেপির (BJP) মতো একটি ‘দক্ষিণপন্থী’ শক্তি ৩ থেকে ৭৭টি আসনে পৌঁছে প্রধান বিরোধী দল হল। এই বৃদ্ধিটা কিন্তু খুব সামান্য নয়। এ অবস্থায় তাহলে সিপিএমের ভবিষ্যৎ কী? ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বারবার বলছেন, ‘আমরা কি তাহলে ছাগলের তৃতীয় সন্তান? আমরা কখনও বিজেপি, কখনও কংগ্রেসের (Congress) বিরোধিতা করি। এই দোদুল্যমানতা কি সিপিএমের (CPM) জিনের মধ্যে?’
১৯৫২ সালে, পশ্চিমবঙ্গের প্রথম বিধানসভা নির্বাচনে, সিপিআই অর্থাৎ অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টি আসন পেয়েছিল ২৮টি। তারা পেয়েছিল ১০.৭৬ শতাংশ ভোট। সেখানে কংগ্রেস ১৫০টি আসন পেয়েছিল। এরপর ১৯৫৭ সালে দ্বিতীয় বিধানসভা নির্বাচন হয়। সেখানে কংগ্রেস ২৫১টি আসনের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ১৫২টি আসন এবং ৪৬.১৪ শতাংশ ভোট পায়। সিপিআই ১০৩টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ৪৬টি আসন লাভ করেছিল। ’৫২ সালে যেটা ১০.৭৬ শতাংশ ভোট ছিল, সেটাই এবারে হল ১৭.৮১ শতাংশ। ’৬২ সালে সিপিআইয়ের ভোট ২৪.৯৬ শতাংশ হল। ১৪৫টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ৫০টি আসন লাভ করল। ’৬৭ সাল থেকে নির্বাচনে লড়া শুরু করে ’৬৯ সালে সিপিএমের আসন সংখ্যা হল ৮০টি, সিপিআইয়ের ৩০টি।
’৫২ সালের নির্বাচনের সময় থেকে আরএসপি-সহ আরও কিছু বামপন্থী দল ছিল। ’৭১ সালে ষষ্ঠ বিধানসভা নির্বাচনে ১১৩টি আসনে সিপিএম জয় লাভ করল। সিপিআই পেল ১৩টি আসন। ততদিনে সিপিএম প্রধান বামশক্তি হয়ে গিয়েছে। এরপরেই, সপ্তম বিধানসভা নির্বাচন অর্থাৎ ১৯৭২ সালে কংগ্রেস ২১৬টি আসন পায়, সিপিআই ৩৫টি এবং সিপিএম ১৪টি আসন পায়। যুক্ত-সরকার গঠনের পরে, ’৭৭ সালে দেখা গেল, সিপিএম ১৭৮টি আসন নিয়ে সাংঘাতিকভাবে ক্ষমতায় এল। ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি- এরাও কিছু আসন পেয়েছিল। সিপিআই সেই সময় দু’টি আসন পেয়েছিল। অর্থাৎ সিপিআই ক্রমশ প্রান্তিক দল হয়ে গেল এবং সিপিএম প্রধান রাজনৈতিক দলে পরিণত হল। তারপর, ’৮২ সাল থেকে শুরু করে একটা দীর্ঘ সময়, ৩৪ বছর, সিপিএম ক্ষমতায় ছিল।
১৯১৭-১৯৪৭ এই সময়কালে মার্কসীয় চিন্তাধারার তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি ঘটে। ইউরোপীয় ভাবজগতে পাকা স্থান করে নেয় মার্কসীয় ভাবনা। সোভিয়েত সমাজের প্রতিষ্ঠার রাজনৈতিক চাঞ্চল্য কীভাবে বাংলায় এসে পড়েছিল- তা জানার জন্য শিপ্রা সরকার এবং অনমিত্র দাস সংকলিত ‘বাঙালির সাম্যবাদ চর্চা’ বইটি প্রাসঙ্গিক। শিবরাম চক্রবর্তীর ‘মস্কো বনাম পন্ডিচেরী’ বইটিও অমূল্য। আবার আবু সঈদ আইয়ুবের মতো দার্শনিক-লেখকের ‘কাব্যের বিপ্লব ও বিপ্লবের কাব্য’-র মতো রচনা ও চর্চার ট্র্যাডিশন এখনও অবলুপ্ত হয়ে যায়নি।
পশ্চিমবাংলার নাগরিক সমাজের মনস্তত্ত্বে আজও বিনয় ঘোষ থেকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সূত্র ধরে কোথাও একটা মার্কসবাদী ভাবাবেগ জীবিত আছে। সমস্যা হচ্ছে, এই বামপন্থার প্রধান পাইকারি এবং খুচরো বিক্রেতা দীর্ঘদিন ধরে হয়ে উঠেছিল সিপিএম। অন্য বাম দলগুলির প্রতি তাদের কর্তৃত্ব স্থাপন করে কার্যত আলিমুদ্দিন স্ট্রিট একদা ঘোষণা করেছিল যে, আমাদের কোনও শাখা নেই। এমন কী কাণ্ড ঘটল যে, সিপিএমের সেই রাজনৈতিক পরিসর অবলুপ্ত হল? তৃণমূল কংগ্রেসের উত্থান হল, বিজেপি পেল বিরোধিতার পরিসর?
কেউ কেউ বলেন যে, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর শিল্পায়নের ঝড় চালানোর চেষ্টা, নিরুপম সেনের বিকল্পের সন্ধানে হাঁটতে গিয়ে পথভ্রষ্ট হওয়া এই পতনের কারণ। সিঙ্গুরের আন্দোলন থেকে নন্দীগ্রামের গুলিচালানো- এভাবেই শুরু হয়েছে সিপিএমের কফিনে পেরেক পোঁতার কাহিনি। আমি একমত নই। আমার মনে হয়, সিপিএমের পতন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর হাতে আচমকা হয়নি। আরম্ভের আগেও আরম্ভ থাকে। আসলে, সিপিএম যখন ক্ষমতায় এসেছিল, তখন সমাজব্যবস্থা বদলানোর দাবিতে এই তথাকথিত বুর্জোয়া শাসনের অঙ্গ হয়েছিল তারা। কিন্তু এই ব্যবস্থার অঙ্গ হতে গিয়ে, এই ব্যবস্থা বদলের চেষ্টা করতে গিয়ে, সিপিএম নেতৃত্বরই শ্রেণিচরিত্র বদলে গেল। যে যায় লঙ্কায়, সে-ই হয় রাবণ- এই আপ্তবাক্য কমিউনিস্টদের ক্ষেত্রেও খাটে। প্রলেতারিয়েতের একনায়কতন্ত্র স্থাপন করতে গিয়ে একনায়কতন্ত্র থেকে যায়, প্রলেতারীয় স্বার্থ কর্পূরের মতো উবে যায়।
সিপিএম ক্ষমতায় আসার পর, পশ্চিমবঙ্গের গ্রামীণ জীবন পার্টি-রাজনীতিতে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেল। পশ্চিমবঙ্গে সর্বত্রই পার্টি বা দল দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়ে তৈরি করল এক পার্টিতন্ত্র। পার্টি বা দলের এই পরিব্যাপ্তি সমাজের পক্ষে ভাল না মন্দ- তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠছে। সবার আগে যে-প্রশ্নটা আমাদের মাথায় আসে, তা হল, এই পার্টিতন্ত্র কীভাবে গ্রামীণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে জড়িয়ে পড়েছিল এবং গ্রামীণ সমাজের বিভিন্ন সম্প্রদায়, বিভিন্ন শ্রেণি পার্টির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হয়ে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি করতে শুরু করল? পার্টি বা দল গ্রামীণ সমাজের কোন অংশের কাছে কতটা অপরিহার্য হল? ত্রি-স্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা গ্রাম-প্রশাসনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে। বিশ্বজুড়ে উন্নয়নের যে-মহাযজ্ঞ, তাতে স্থানীয় স্তরের প্রশাসনিক কাঠামোর এই উপকরণ খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেই পঞ্চায়েত ব্যবস্থা তৈরি করল এক ‘বেনিফিশিয়ারি’ গোষ্ঠী বা ‘সুবিধাভোগী’ শ্রেণি। এবং দেখা গেল, শিল্পায়ন করতে গিয়ে পার্টির যে কৃষিভিত্তি- তার অবক্ষয় হল।
প্রয়াত কমিনিউস্ট নেতা আবদুল্লা রসুল আমাকে একটি সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন যে, আমাদের পার্টির বেসটা হচ্ছে নিম্নবর্গ, কৃষক এবং শ্রমিক। কিন্তু নেতৃত্বটা চলে গিয়েছে শহুরে উচ্চবর্ণ, উচ্চ শ্রেণির হাতে। তার ফলে একটা বিচ্ছিন্নতা তৈরি হচ্ছে মূল ভিত্তির সঙ্গে নেতৃত্বর। আবদুল্লা রসুলের সেই সাক্ষাত্কারে পার্টিতে তখন ঝড় উঠেছিল। কিন্তু অনেক বছর পর সরোজ মুখোপাধ্যায় পার্টির দলিলেই সে-কথা কার্যত প্রকাশ্যে জানালেন। নিরুপম সেন বারবার বলতেন, পরে তাঁর ‘বিকল্পের সন্ধানে’ নামক বইয়ে তিনি দেখিয়েওছেন, যে, বামফ্রন্টের বিকল্প উন্নত বামফ্রন্ট আর সেই উন্নত বামফ্রন্ট তৈরি করার জন্য শিল্পায়নের অভিমুখে যাওয়া-ই বাস্তবতা। বন্ধ কারখানার জমিতে শিল্প করতে হবে। শ্রমিক শ্রেণির রাজনৈতিক কর্তব্য শিল্পায়নের সমর্থন করা। তাতে কর্মসংস্থান হবে, অর্থনীতির উন্নয়ন হবে। কেন্দ্রের উপর সারাক্ষণের নির্ভরশীলতা থেকে বেরতে হবে, বিবর্তনের ধারায় পার্টিকে নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। এই নতুন ধারাকে দলের বড় অংশ সমর্থন করেছিল। অভ্যন্তরীণ মতপার্থক্য যা-ই থাক, পার্টি কংগ্রেসে প্রকাশ কারাত এবং বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর মধ্যে একটা ঐক্যমত রচনা হয়েছিল। কিন্তু সেই বিকল্প বিবর্তনের পথ, তার ভাবনা লোকাল কমিটি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার মতো যোগাযোগ-ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। দলের মধ্যে সেই বৌদ্ধিক চর্চার আবহ ৩৪ বছরের শাসনে অবলুপ্ত হয়ে যায়। ক্যাডার রাজ, জঙ্গল রাজ, লুম্পেন প্রলেতারিয়েতদের দাপট, তোলাবাজি বাড়তে থাকে। তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যে-সমস্ত অভিযোগ করা হচ্ছে, সেগুলো কিন্তু উত্তরাধিকার-সূত্রে, সিপিএমের জমানার থেকে পাওয়া।
এমন পরিস্থিতিতে সিপিএমের কি তাহলে ভবিষ্যতে এগনোর কোনও সম্ভাবনা নেই?
আশার ফুলঝুরি বলতে একঝাঁক তরুণ-তরুণী দলে প্রার্থী হয়েছেন। এত অল্পবয়সের ছেলেমেয়েদের নির্বাচনী প্রার্থী হওয়া আমার দীর্ঘ সাংবাদিক-জীবনে এই প্রথম দেখলাম! এঁদের ঝকঝকে চোখ, চরিত্রের দৃঢ়তা আছে, ভাল কথা বলতে পারেন। রাজনীতি করার প্রয়োজনীয় গুণাবলি রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিশ্ব রাজনীতির ঘটনাবলি সম্পর্কে তাঁরা সচেতন। সুতরাং এঁদের উপর ভরসা করে আগামী দিনে এগনোর চেষ্টা নিশ্চয়ই সিপিএমের প্রবীণ নেতৃত্ব করবেন।
রিচার্ড উল্ফ-এর মতো মার্কসবাদী তাত্ত্বিক যখন এরিক হবস্বমের ঐতিহ্য অবলম্বন করে সামনের দিকে এগনোর চেষ্টা করছেন, তখন মনে হয়, এই নতুন প্রজন্মের সিপিএমের যুব প্রতিনিধিরা বৈশ্বিক সমাজতন্ত্রের প্রাসঙ্গিকতা বৃদ্ধিকে মূলধন করে পশ্চিমবঙ্গে আবার সমাজতান্ত্রিক মশালকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা নিশ্চয়ই করবে। কাজটা কঠিন। তার কারণ, পুঁজিবাদও এখন সমাজতন্ত্রের উপাদানগুলি গ্রহণ করে বাঁচার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিল গেটস বলেছিলেন, Philanthropic Capitalism. অনেকে বলেন, ‘ক্রিয়েটিভ’ বা সৃজনশীল পুঁজিবাদ। কিন্তু কোরামিন দিয়ে পুঁজিবাদকে বাঁচানো যে কঠিন, হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে আমেরিকা! কাজেই আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নবীন প্রজন্ম আবার হয়তো গাইবে ‘ও আলোর পথযাত্রী, এখানে থেমো না’…