সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় পঞ্চাশ কোটি বন্যপ্রাণ ইতিমধ্যে দাবানলের গ্রাসে চলে গিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বিস্তীর্ণ বনাঞ্চলের খাণ্ডবদহন থেকে রেহাই নেই কিছুতেই। এক ফোঁটা জলের জন্য চাতকদৃষ্টিতে এখন মানুষের চোখে চোখ রাখছে দগ্ধ বন্যপ্রাণীর দল। কোনওক্রমে জঙ্গলের দাউদাউ আগুনের বলয় ভেদ করে বেরিয়ে যেতে পারলেও, ততক্ষণে প্রবল উত্তাপে শক্তি ফুরিয়ে এসেছে। যেখানেই মানুষজনকে দেখতে পাচ্ছে, পথ আটকে বলতে চাইছে – ‘জল দাও।’
মাস তিনেক হয়ে গেল দাবানলের গ্রাসে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস, ভিক্টোরিয়া। সবচেয়ে বেশি বিপন্ন বন্যপ্রাণ। জ্বলে গিয়েছে ক্যাঙারু আইল্যান্ড। কোয়ালা, ক্যাঙারুদের দল আগুনের লেলিহান শিখা থেকে বাঁচতে পালে পালে ছুটে আসছে লোকালয়ের দিকে। এর আগেও জঙ্গল থেকে একটি কোয়ালাকে উদ্ধারের ছবি ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল নেটদুনিয়ায়। একটি ক্যাঙারুর ছানা তারঘেরা জঙ্গলে থেকে বেরতে না পেরে দগ্ধ হয়ে সেখানে মৃতদেহে পরিণত হয়েছে। আরও কত ছোট প্রাণীই যে চলে গিয়েছে আগুনের পেটে, হিসেব মেলানো দায়।
[আরও পড়ুন: সোলেমানির শেষযাত্রায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা, পদপিষ্ট হয়ে মৃত কমপক্ষে ৩৫]
ভয়েই হোক কিংবা অপছন্দে, এমনিতে এরা জনবসতি থেকে ঢের দূরে থাকে। কিন্তু এমন বিপর্যয়ের মুখে তারা বুঝতে পেরেছে, পারলে একমাত্র মানুষই পারবে তাদের বন্ধু হতে, আশ্রয় হতে। তাই জঙ্গল থেকে বেরিয়ে লোকালয়ের দিকে এগোতে পারলে যেখানে মানুষের উপস্থিতি টের পাচ্ছে, সেখানেই তাদের পা, হাত জড়িয়ে ধরছে আর কাতর চোখে চেয়ে যেন বলতে চাইছে – জল দাও, জীবন বাঁচাও। আর মানুষও যে সত্যিই বন্যপ্রাণ বাঁচাতে উদ্যোগী হয়ে উঠেছে, তার প্রমাণ জ্বলন্ত অস্ট্রেলিয়াই। একাধিক ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়েছে।
কখনও নিজের জামা খুলে কোয়ালাকে তাতে মুড়ে নিরাপদে বের করে আনা, কখনও বা বোতলের জল খাইয়ে দেওয়া, বন্যপ্রাণপ্রেমীরা যে যেভাবে পারছেন, প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন ওদের রক্ষা করতে। কিন্তু এই লড়াই আর কতদিন? এই প্রশ্ন সব্বার।
[আরও পড়ুন: চাপের মুখে ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’, নানকানা সাহিব হামলায় ধৃত মূল অভিযুক্ত]
The post ‘জল দাও’, চাতকের দৃষ্টিতে মানুষের শরণাপন্ন অস্ট্রেলিয়ার বন্যপ্রাণীর দল appeared first on Sangbad Pratidin.