রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: বাজি বানাতে গিয়ে ভাই-কাছের কয়েকজনের মৃত্যুও বদলাতে পারেনি কৃষ্ণপদ বাগকে। প্রভাব খাটিয়ে একের পর জায়গা দখল করেছেন। প্রশাসনের নাকের ডগায় চালিয়েছেন বাজির কারখানা। স্থানীয়দের কাছে আতঙ্কের আরেক নাম কৃষ্ণপদ। কিন্তু কীসের জন্য এত ক্ষমতা কৃষ্ণের? শুধু কি বাড়তি লাভের আশায় বিপদকে পরোয়া না করেই চালিয়েছেন ব্যবসা? কে এই কৃষ্ণপদ?
বাম জমানায় সিপিএম নেতা ছিলেন কৃষ্ণপদ বাগ। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসতেই জোড়াফুল পতাকা ধরে। ২০১১সালের পর থেকে এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা নামে পরিচিত। ২০১৩ – ২০১৮ সাল পর্যন্ত পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন এই কৃষ্ণপদ। সূত্রের খবর, খানিকটা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়েই বাজি কারখানার জায়গা দখল করেন কৃষ্ণ। মাঠের মাঝে কারখানা ও যাওয়ার রাস্তাও তৈরি করে। এই কারখানার মধ্যে একটি পুকুরও তৈরি করা হয়েছিল। যেখানে বাজি পরীক্ষা করা হত বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, কারখানার মধ্যে প্রচুর বারুদ ও বাজি মজুত রাখা হত। পুজোর মরশুম হলেই প্রচুর মানুষ কারখানায় বাজি সংগ্রহের জন্যে ভিড় জমাত সেখানে। দৈনিক লক্ষ লক্ষ টাকার ক্রয় বিক্রয় হত বলে স্থানীয়দের দাবি।
[আরও পড়ুন: অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের বচসার জেরে রোগীমৃত্যু: কড়া প্রতিক্রিয়া মুখ্যমন্ত্রীর, ধৃত ৩ চালক]
জানা গিয়েছে, বছর ১৫আগে বাজি তৈরি করতে গিয়ে কৃষ্ণপদের বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটেছিল। সেই বিস্ফোরণে নিজের ছোট ভাই বাদল বাগের মৃত্যু হয়। এরপর থেকে বাড়িতে বাজি বানানো বন্ধ করলেও, বাজি তৈরি বন্ধ করেননি। বাড়ি থেকে প্রায় ৪০০মিটার দূরে মাঝমাঠে কারখানা তৈরি করেন এগরা ১ নম্বর ব্লকের সাহাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের খাদিকুল গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণপদ বাগ। স্থানীয়দের তরফে আপত্তি থাকলেও কৃষ্ণের ভয়ে কারও মুখ খোলার ক্ষমতা ছিল না বলেই দাবি স্থানীয়দের। শোনা গিয়েছে, একবার নয়, একাধিকবার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, তা সত্ত্বেও কীভাবে পুলিশের চোখের সামনে কারখানা চালাচ্ছিলেন কৃষ্ণ? শুধু কি অর্থের জন্যই এই কারখানা, নাকি নেপথ্যে রয়েছে রাজনৈতিক স্বার্থ, সেই প্রশ্নও তুলেছেন স্থানীয়রা।