শুভঙ্কর বসু: তৃণমূল সুপ্রিমো তথা নন্দীগ্রামের প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) মনোনয়ন খারিজের দাবি তুলে আইনি ধাক্কা খেলেন ওই কেন্দ্রে বিজেপির হেভিওয়েট প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ নেই, এই যুক্তিতে তাঁর অভিযোগ খারিজ করে দিল নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগকে একপ্রকার ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে একটি সিবিআই মামলা ও অসমের ৫টি মামলা নিয়ে মোট ছটি মামলা আছে। সোমবার শুভেন্দু অধিকারী চিঠি লিখে নির্বাচন কমিশনকে এসব জানিয়েছেন। এদিকে, কমিশন শুভেন্দুর এই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে শুভেন্দু এই অভিযোগ তোলার পরই নামবিভ্রাটের বিষয়টি সামনে এসেছিল। সিবিআই (CBI) সূত্র অনুযায়ী, শুভেন্দুর উল্লেখ করা ব্যক্তির সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও সম্পর্ক নেই। এছাড়া অসমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে মামলা আছে বলে যে অভিযোগ শুভেন্দু অধিকারী করেছেন সেই মামলারও কোনও হদিশ মেলেনি। এমনই জানা গিয়েছে কমিশন সূত্রে। এছাড়াও যে পদ্ধতিতে শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে তথ্য গোপন করে মনোনয়নের হলফনামা জমা করেছেন বলে চিঠি লিখে অভিযোগ জানিয়েছেন সেই পদ্ধতিও সঠিক নয় বলে মনে করছে নির্বাচন কমিশন।
[আরও পডুন: এবার মুকুল রায়-দিলীপ ঘোষকেও প্রার্থী করতে পারে বিজেপি, তুঙ্গে জল্পনা]
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বিষয়ে কেউ কোনও প্রার্থীর নামে অভিযোগ করলে তা উপযুক্ত প্রমাণ-সহ রিটার্নিং অফিসারের (RO)কাছে হলফনামা দিয়ে অভিযোগ জানাতে হয়। শুভেন্দু অধিকারী সেই নিয়ম মেনে অভিযোগ করেননি। কাজেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তাঁর দায়ের করা অভিযোগের কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। কমিশনের এই বক্তব্য শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষে নন্দীগ্রামে যথেষ্ট প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি করবে। কারণ, তিনি তমলুকের নিমতৌড়ি থেকে একটি সভা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে এই অভিযোগ করেছিলেন। বলেছিলেন, “মাননীয়া নন্দীগ্রাম থেকে নমিনেশন জমা দিয়েছেন। আমি অবজেকশন করছি। ৬টি মামলা তাঁর বিরুদ্ধে আছে। তিনি তা হলফনামায় উল্লেখ করেননি। এটা তথ্য গোপন। ২০১৮ তে তাঁর নামে অসমে ৫টি মামলা আছে। একটি সিবিআই মামলা পেন্ডিং আছে। এসব আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি। তাই মাননীয়াকে ‘মিথ্যাশ্রী’ পুরস্কার দেওয়া উচিত।” তবে শুভেন্দুর এসব অভিযোগ খারিজ করল কমিশন।
[আরও পডুন: মুখ্যমন্ত্রীর ওয়ার্ডে পানীয় জলের বিষক্রিয়া বাড়াচ্ছে আতঙ্ক, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩]
অন্যদিকে, সোমবার পুরুলিয়ার নির্বাচনী সভা থেকে ঘরে ঘরে রেশন পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সেই কথা নির্বাচনী বিধিভঙ্গ কি না, তা খতিয়ে দেখছে নির্বাচন কমিশন। পুরুলিয়া প্রশাসনের কাছে এই জনসভার ভিডিও ফুটেজ চেয়ে পাঠানো হয়েছে বলে কমিশন সূত্রে খবর।