শুভঙ্কর বসু: ১ তারিখ, নন্দীগ্রামে (Nandigram) ভোটের দিন কোনও বুথে কোনও নিয়ম লঙ্ঘিত হয়নি, কোথাও ছাপ্পা ভোট হয়নি। এসব অভিযোগ নিয়ে ওইদিন নির্বাচন কমিশনকে তৃণমূল সুপ্রিমোর লেখা চিঠির জবাবে এমনই জানিয়ে দিল কমিশন। রবিবার পালটা চিঠি লিখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। চিঠিতে আরও জানানো হয়েছে, ওইদিন মমতা বয়াল-২’এর ৭ নং বুথ নিয়ে চিঠিতে যেসব তথ্য দিয়েছিলেন, তার সত্যতা মেলেনি। তথ্যগত ভুল ছিল তাতে। এর জেরে ভোটের আবহে তৃণমূল ও কমিশনের দ্বৈরথ আরও খানিকটা বাড়ল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
নন্দীগ্রাম-সহ রাজ্যের ৩০ টি আসনে গত ১ তারিখ ছিল দ্বিতীয় দফা ভোটগ্রহণ। তবে ওই দিন সকলের নজরে ছিল নন্দীগ্রামের মতো হাইভোল্টেজ কেন্দ্রটাই। সেখানে সকাল থেকেই বিভিন্ন বুথে গণ্ডগোল চলছিল বলে খবর মেলে। নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী তথা তৃণমূল সুপ্রিমোর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এসব খবর পৌঁছেছিল। তিনি দুপুরের পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে বয়াল-২’এর ৭ নং বুথে গিয়ে সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখেন। তিনি যাওয়ার পরও সেখানে ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এ নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষও হয়। অশান্তির আঁচ বাড়তে থাকায় সেখানে বসেই নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরাকে চিঠি লেখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাতে অভিযোগ করেন, এই বুথে ৮০ শতাংশ ছাপ্পা ভোট চলছে। এ নিয়ে কমিশন যেন ব্যবস্থা নেয়। তাঁর অভিযোগপত্রে মোট ৬৩ টি অভিযোগ ছিল।
[আরও পড়ুন: ‘আগে ৫০ টা আসন পাক, পরে ২৯৪ টার স্বপ্ন দেখবে’, বিজেপিকে খোঁচা মমতার]
চিঠি পেয়ে কমিশন তখনই সেই বুথে পর্যবেক্ষককে পাঠান। পর্যবেক্ষক ঘুরে দেখে প্রাথমিক রিপোর্ট দিয়ে জানান, ৭নং বুথে পরিস্থিতি ঠিক আছে, কোনও নিয়মভঙ্গ হয়নি। নির্বিঘ্নেই ভোট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। তার তিনদিন পর নির্বাচন কমিশনের তরফে সচিব উমেশ সিনহা রীতিমতো কড়া ভাষায় চিঠি লিখেছেন তৃণমূল নেত্রীকে। তাতে যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া তো হয়েছেই, উলটে বিভিন্ন সময়ে ওই বুথে কত শতাংশ ভোট পড়েছে, তার বিস্তারিত হিসেব দেওয়া হয়েছে। সেসব প্রমাণ হিসেবে দাখিল করে কমিশন বোঝাতে চেয়েছে, তৃণমূল সুপ্রিমোর ‘ছাপ্পা’ তথ্য সম্পূর্ণ ভুল।