সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০০২ সালের বিলকিস বানো গণধর্ষণ কাণ্ডের (Bilkis Bano Gang Rape) এগারো জন দোষীকে জেল থেকে মুক্তি দিল গুজরাট সরকার। সোমবার গোধরা জেল থেকে সকলেই বেরিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ২০০৮ সালে তাদের সকলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গুজরাট সরকারের (Gujarat) শাস্তি মকুবের নিয়ম অনুযায়ী, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার আবেদন করে দোষীদের একজন। তার আবেদনের ভিত্তিতেই পনেরো বছর কারাবাসের পর সকলের শাস্তি মকুব করে দিয়েছে গুজরাট সরকার।
গোধরা জেলের স্থানীয় কালেক্টর সুজল মায়াত্র জানিয়েছেন, “কিছুদিন আগেই একটি কমিটি গঠন করে দোষীদের শাস্তি প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়েছিল। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সকলেই পনেরো বছর জেলে শাস্তি পেয়েছে। এবার এগারজনকেই মুক্তি দেওয়া হোক। কমিটির সুপারিশ পাঠানো হয় গুজরাট সরকারের কাছে। রবিবারই সরকারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, দোষীদের মুক্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সেই মর্মে রিলিজ অর্ডারও পাঠিয়ে দেওয়া হয়।” প্রসঙ্গত, একজন দোষী সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) শাস্তি মকুবের আবেদন জানিয়েছিল। তারপরেই গুজরাট সরকারকে শাস্তি মকুবের বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: ‘সজাগ থাকুন, ক্ষমতাসীন ব্যক্তিরা যেন স্বাধীনতা কেড়ে নিতে না পারে’, বার্তা মনমোহন সিংয়ের]
২০০২ সালে সাবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই ব্যাপক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয় গোটা গুজরাট জুড়ে। সেই সময়েই ২১ বছর বয়সি তরুণী বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ করা হয়। ঘটনার সময়ে গর্ভবতী ছিলেন বিলকিস। দাঙ্গার ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময়েই তাঁকে গণধর্ষণ করা হয়। শুধু তাই নয়, তাঁর তিন সন্তানকেও খুন করা হয়।
আহমেদাবাদে বিলকিসের মামলার শুনানি শুরু হয়। কিন্তু সেখানে সাক্ষীদের ভয় দেখানো হচ্ছে বলে সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ করেন বিলকিস। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে মামলাটি মুম্বইতে স্থানান্তর করা হয়। তদন্তভার দেওয়া হয় সিবিআইয়ের (CBI) হাতে। ছ’বছর ধরে তদন্ত চলার পরে ২০০৮ সালে এগারোজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয় মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত। তাদের মধ্যে ছিলেন দু’জন চিকিৎসক, যাঁরা প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করেছিলেন। একই অপরাধে কয়েকজন পুলিশকর্মীকেও কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। সোমবারে সকলেই মুক্তি পেয়েছে।