সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের ‘আদিপুরুষ’ নিয়ে বিতর্ক শুরু হল। সিনেমাটি মহারাষ্ট্রে প্রদর্শিত হতে দেবেন না বলে হুমকি দিলেন বিজেপি বিধায়ক রাম কদম। এর আগেও হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। এবার তাঁর দাবি, কয়েকটি দৃশ্য বাদ দেওয়া শুধু নয়, পুরো ছবি নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্যদিকে, মণিরত্নমের ‘পোন্নিয়্যান সেলভান ১’ (Ponniyin Selvan: I) মুক্তি পেয়েছে সেপ্টেম্বরের শেষে। ঐশ্বর্য রাই বচ্চন এবং বিক্রম অভিনীত সেই ছবি দর্শকের মন জয় করলেও ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তুলেছেন দক্ষিণীরা। তা নিয়ে মুখ খুলেছেন দক্ষিণী ছবির সুপারস্টার কমল হাসানও (Kamal Hassan)।
ছবির ঝলক মুক্তির পর শুধু বিতর্কে নয়, রামচন্দ্রের জন্মস্থানেও হুমকির মুখে পড়েছে ‘আদিপুরুষ’। অযোধ্যার রামমন্দিরের প্রধান পুরোহিত সত্যেন্দ্রনাথ দাস বুধবার জানান, এই ছবিতে চরিত্রদের, বিশেষ করে রাবণের সাজ দেখে মনে হচ্ছে না এটা কোনও পুরাণের গল্প। বরং সাজ দেখে মনে হচ্ছে যেন মোঘল আমলের গল্প। মহাকাব্যিক চরিত্রকে ভুল ভাবে দেখানো হয়েছে। রাম এবং হনুমান চরিত্রের আচরণেও অসঙ্গতি দেখা যাচ্ছে বলে তাঁর মত। ইতিহাস বিকৃতির পর ‘আদিপুরুষ’ কোনও ভাবেই মুক্তি পাক চান না তিনি। উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য এবং ব্রজেশ পাঠকও এই ছবিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পক্ষে। তাঁদের মতে, হিন্দু ধর্মের মূল্যবোধে আঘাত হেনেছে ওম রাউত পরিচালিত ‘আদিপুরুষ’। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ইতিমধ্যেই টিজারটির বিরোধিতা করেছে। তাদের মতে, এই ছবি বিশেষ একটি সম্প্রদায়ের ষড়যন্ত্র। মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, আপত্তিকর দৃশ্যগুলি না সরালে এ ছবির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।
[আরও পড়ুন: অস্কার জিততে মরিয়া RRR, নিজের উদ্যোগে ১৫ টি বিভাগে মনোনয়ন জমা দিলেন এস এস রাজা মৌলি ]
অন্যদিকে, ‘পোন্নিয়্যান সেলভান ১’ নিয়ে জাতীয় পুরষ্কারজয়ী তামিল পরিচালক ভেত্রিমারানের দাবি, রাজ রাজ চোল হিন্দু রাজা ছিলেন না। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ভারতে আসার পর ‘হিন্দু’ শব্দের উৎপত্তি হয়েছে বলে জানান তিনি। খ্রিস্টীয় ৮ শতকের একজন শাসককে হিন্দু বলা আদৌ যুক্তিযুক্ত কি না, প্রশ্ন তুলেছেন ভেত্রিমারান। এতেই ফের দানা বেঁধেছে বিতর্ক। দক্ষিণের অভিনেতা তথা রাজনীতিবিদ কমল হাসন তাঁকে সমর্থন করে বলেন, “সত্যিই তো! রাজ রাজ চোলের আমলে ‘হিন্দু ধর্ম’ বলে কোনও কিছুর অস্তিত্ব ছিল না। বইনবম, শিবম এবং সমনাম— এই তিন গোষ্ঠীর কথা জানা যায়। যাঁদের এক ছাতার তলায় এনে পরবর্তী কালে ‘হিন্দু’ বলে চিহ্নিত করেছিলেন ব্রিটিশরা। তাঁরা জানতেন না কোনটার উচ্চারণ কী। যেমন থুথুকুণ্ডি-কে করে দিয়েছিলেন তুতিকোরিন, তেমন এটাও স্বরবিকৃতি।” কমলের দাবি, ইতিহাস বিকৃত না করে, গল্পের গরু গাছে না তুলে অথবা অহেতুক ভাষা বিভ্রান্তি তৈরি না করে ছবি করার চেষ্টা করা ভাল। তাতে যা হয়, সেটা বাস্তবের কাছাকাছি থাকবে।