দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: করোনাকালে (Coronavirus) রাজ্যের একাধিক সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কাজ হারিয়েছেন মানুষ। চন্দননগরের শ্রী দুর্গা ছবিঘর সিনেমা হলেরও এমন পরিণাম হয়েছিল। কিন্তু দেবের ‘প্রজাপতি’ (Projapoti) সিনেমার হাত ধরে নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে মফস্বলের এই সিঙ্গল স্ক্রিন। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করল চন্দননগরের সিনেমাহলটি।
বর্তমানে চন্দননগরের বুকে এই একটি মাত্র সিনেমা হলের অস্তিত্ব রয়েছে যাকে কেন্দ্র করে চন্দননগরবাসী তাঁদের সিঙ্গল স্ক্রিনে সিনেমা দেখার ইচ্ছা মেটাতে পারবেন। শুধু তাই নয়, এই হলের সংস্কারের পর পুরনো কর্মীরা তাদের রুজি রোজগার ফিরে পেয়েছেন। আর তাতে বেশ খুশি চন্দননগরের মানুষ।
২০১৩-১৪ সাল থেকে চন্দননগরের বুকে একে একে স্বপ্না, জ্যোতি, জোনাকি তিনটে সিনেমা হলই বন্ধ হয়ে যায়। একমাত্র শ্রীদুর্গা ছবিঘর অস্তিত্বের লড়াইয়ে টিকে ছিল। কিন্তু করোনার সময় এই হলটিও বন্ধ হয়ে যায়। করোনার পর যখন সারা পৃথিবী স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করে তখন চন্দননগরের চলচ্চিত্রপ্রেমী মানুষ হল মালিক অশোক নন্দীর কাছে পুনরায় হলটি চালু করার জন্য আবেদন জানান।
[আরও পড়ুন: মোদির পর অনুরাগ ঠাকুর, ‘পাঠান’-এর সাফল্যের মাঝেই ‘বয়কট’ নিয়ে দিলেন কড়া বার্তা]
ইতিমধ্যে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হল মালিককে ওই জায়গায় মাল্টিপ্লেক্স গড়ে তোলার লোভনীয় প্রস্তাব দেন। কিন্তু হল কর্মী ও চন্দননগরের সাধারণ মানুষের কথা ভেবে তিনি স্বাধীনতার আগে ১৯৩৬ সালে তৈরি হওয়া এই হলটির সংস্কারে উদ্যোগী হন। সেক্ষেত্রে হলের কর্মীদের রুজি রোজগার ও আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী সাধারণ মানুষের বিনোদনের কথা চিন্তা করে হল সংস্কারের দায়িত্ব দেওয়া হয় শুবজিৎ ঘোষ নামে এক ব্যক্তিকে। শুবজিৎবাবু সাধারণের আর্থিক অবস্থার কথা চিন্তা করে হলের সংস্কারের উপর জোর দেন।
নতুন করে বসবার সিট তৈরির পাশাপাশি হলের অর্ধেক অংশ শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত করা হয়। মধ্যবিত্তের পকেটের কথা চিন্তা করে হলের ভিতর ব্যালকনি, কাপল জোন ও নর্মাল জোনও রাখা হয়েছে। সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন নব রূপে দেবের ‘প্রজাপতি’ সিনেমার মধ্য দিয়ে এই হলের আত্মপ্রকাশে খুশি চন্দননগরের মানুষ।
চন্দননগরের মানুষ জানিয়েছেন, শুধু ব্যবসার স্বার্থ না দেখে আমাদের ইমোশান, ঐতিহ্য ও কর্মরত কর্মীদের পরিবারের কথা চিন্তা করে অশোকবাবু যেভাবে হলটিকে চালু করার উদ্যোগ নিয়েছেন তাতে তাঁরা খুশি। স্থানীয়দের দাবি, আগামী দিনে যদি অনলাইন টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা চালু হয় তবে তাঁরা আরও বেশি উপকৃত হবেন। মানুষের চাহিদার কথা ভেবে হল কর্তৃপক্ষ আগামী দিনে অনলাইন টিকিট বিক্রি করার পরিকল্পনা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন।