ওয়েব সিরিজ রিভিউ: রহস্য-অলৌকিকতার চোরাবালিতে কি হারিয়ে গেল ‘দ্য লাস্ট আওয়ার’?

08:27 PM May 15, 2021 |
Advertisement

This browser does not support the video element.

সুপর্ণা মজুমদার: শুধুমাত্র সুন্দর লোকেশন আর ক্যামেরার কেরামতি হলেই সিনেমা বা সিরিজ তৈরি হয়ে যায় না। তার জন্য উপযুক্ত গল্প এবং ট্রিটমেন্ট যেমন প্রয়োজন, তেমনই প্রয়োজন অভিনয়ের ধার। এই দুইয়ের অভাব দেখা গেল আমাজন প্রাইম ভিডিওর (Amazon Prime Video) নতুন ওয়েব সিরিজ ‘দ্য লাস্ট আওয়ার’-এর (The Last Hour) ক্ষেত্রে।

Advertisement

শুরুতে কুয়াশার মধ্যে দিয়ে শুধু গাড়ির হেডলাইট দেখা যাওয়ার দৃশ্যটি বেশ ভালই লেগেছিল। মনে হয়েছি পাহাড়ি পরিবেশে সুন্দর একটি রহস্য গল্প দেখা যাবে। কিন্তু অল্প সময়েই ভুল ভেঙে গেল। রহস্যের মধ্যে ঢুকে গেল অলৌকিকতা আর লোকশ্রুতি। আর তাতেই গল্প হয়ে উঠল জটিল। জটিলতা রহস্য গল্পের অন্যতম উপাদান যদি তা সঠিকভাবে বলা যায়। কিন্তু এই ক্ষেত্রটিতেই বাড়তি সাবধান থাকতে হয়, যাতে পরিবেশনটি একেবারে মেদহীন করা যায়। তা করতে পারলেন না পরিচালক অমিত কুমার (Amit Kumar)। যিনি কিনা এর আগে নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি অভিনীত ‘মনসুন শুটআউট’ সিনেমাটি তৈরি করেছিলেন।

সিরিজে কার্যনির্বাহী প্রযোজক হিসাবে কাজ করেছেন অস্কারজয়ী পরিচালক আসিফ কাপাডিয়া। ২০১৯ সালে মারাদোনাকে (Diego Maradona) নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করে প্রশংসা পেয়েছিলেন আসিফ। তার জন্য সারা বিশ্বে প্রশংসা পেয়েছিলেন। এই প্রথম ভারতীয় সিরিজে কাজ করলেন। কিন্তু কোথাও ভারতবর্ষ যেন প্রবাসীদের কাছে ‘স্লামডগ’দের দেশ হয়েই রয়ে গিয়েছে। তাই তিনি প্রতিভার বিশেষ সদ্ব্যবহার করতে পারেননি বলেই মনে হল।

Advertising
Advertising

[আরও পড়ুন: ছোট্ট আয়াংশকে বাঁচাতে চাই ১৬ কোটির ওষুধ, সাহায্যের কাতর আবেদন স্বস্তিকার]

এবার আসা যাক কাহিনিতে। মৃতদের শেষে মূহর্তে তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে পারে দেব (কর্মা তাকপা)। তাঁর এই ক্ষমতা ব্যবহার করে তদন্তের সুরাহা করতে চায় পুলিশ অফিসার অরূপ (সঞ্জয় কাপুর)। কিন্তু অরূপ নিজে মেয়ে পরীকে (শেইলি কৃষেণ) নিয়ে চিন্তিত। মা নিমার (রাইমা সেন) দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর থেকে বাবার সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে তাঁর। আবার দেবের সঙ্গে পরীর একটা ভালবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়। এর মধ্যেই আবার যমা নাড়ু (রবিন তামাং) দেবের খোঁজ করছে। যাতে দেবকে মেরে তাঁর শক্তি নিয়ে নিতে পারে সে।

রহস্য, অলৌকিকতা নাকি পাহাড়ের লোকশ্রুত, সিরিজে আটটি এপিসোডে কোন বিষয়টি গুরুত্ব দেবেন তা যেন ঠিকই করে উঠতে পারেননি পরিচালক অমিত কুমার। রাইমা সেন (Raima Sen) শুধুমাত্র ‘ভটকতি আত্মা’র মতো ক্যামেরার সামনে এসেছেন। কর্মা তাকপা, শেইলি কৃষেণদের মুখে যেন কোনও অভিব্যাক্তিই নেই। এত অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেও সঞ্জয় কাপুরেরও (Sanjay Kapoor) একই অবস্থা। পুলিশ অফিসার হিসেবে আরও ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন হওয়া উচিত ছিল। সহকর্মী লিপিকার (সাহানা গোস্বামী) সঙ্গে তাঁর শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টি দেখানোরও কোনও প্রয়োজন ছিল বলে তো মনে হয় না। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এখনও অনেকটা অধরা। তা কিছু মায়াবী পরিবেশ তৈরি করতে সাহায্য করেছে বটে, তবে অভিনয় এবং চিত্রনাট্যের জোরও প্রয়োজন ছিল। যাকগে, মতামত ব্যক্তিগত। বাকিটা আপনাদের বিচার্য।

[আরও পড়ুন: কর্মহীন, কঠিন রোগে ভুগছেন, গোপন কথা ফাঁস করলেন কপিল শর্মার বাঙালি সহ-অভিনেত্রী]

This browser does not support the video element.

Advertisement
Next