shono
Advertisement

কবীর সিংয়ের মতো ছবির অফার পেলে চিত্রনাট্য বদলাতে হবে: আয়ুষ্মান খুরানা

শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে আয়ুষ্মানের ছবি 'অনেক'।
Posted: 10:49 AM May 27, 2022Updated: 10:49 AM May 27, 2022

বিদিশা চট্টোপাধ্য়ায়: শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে আয়ুষ্মান খুরানা অভিনীত ছবি ‘অনেক’ (Anek)। ছবির ট্রেলার দেখে ইতিমধ্যেই এই ছবি নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে। ছবির প্রচারে সম্প্রতি কলকাতায় এসে ‘অনেক’ ছবি নিয়ে অনেক কথা বললেন আয়ুষ্মান খুরানা (Ayushmann khurrana)।  

Advertisement

আপনার ছবি মুক্তি পাওয়া মানেই, সেটা নিয়ে দর্শকদের মধ্যে একটা প্রত‌্যাশা তৈরি হয়। এটা চাপ সৃষ্টি করে না কি আনন্দ দেয়?

আয়ুষ্মান খুরানা: এটা একটা মিক্সড ফিলিং। অফকোর্স একটা চাপ তো আছেই, প্রতিবার নতুন কিছু করার, অন‌্যরকম কিছু করার। একটা চাপা উত্তেজনাও হয় যে, মানুষ কীভাবে রিঅ‌্যাক্ট করবে। আবার একই সঙ্গে আমি এক্সাইটেড কারণ আমি নিজে জানি আমি ঠিক স্ক্রিপ্টটা বেছে নিয়েছি। বছরে তিনটে ছবির বেশি করি না। তাই এই চাপটা নিতে পারি।
উত্তর-পূর্ব ভারতের বিদ্রোহের কারণগুলো খুব জটিল। আটটি রাজ্যের অতিসংবেদনশীল ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান এবং বিভিন্ন জাতিগত বিভেদ যার কারণ।

এই ছবিতে সেটা কীভাবে উঠে এসেছে?

আয়ুষ্মান খুরানা: আমরা কোনও নির্দিষ্ট রাজ‌্যকে তুলে ধরিনি এই ছবিতে। গাড়ির নম্বর প্লেটে এন. ই (নর্থ-ইস্ট) দেখানো হয়েছে। কিন্তু আপনি যদি সেখানকার রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে সচেতন হন তাহলে বুঝতে পারবেন কোন রাজ্যের কথা বলা হচ্ছে। এই ছবিতে ‘বর্ণবাদ’-এর বিষয়টিতে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। কারণ, এই মেনস্ট্রিম ছবির দর্শক গোটা ভারতেই। কিন্তু একই সঙ্গে অভ‌্যন্তরীণ জটিলতার কথাও ছবিতে থাকবে।

 

[আরও পড়ুন: ‘১১ বছর ধরে একটাই মেয়ের সঙ্গে প্রেম’, ঐন্দ্রিলার কথা ভেবে গালে হাত অঙ্কুশের!]

 নর্থ-ইস্টের বাসিন্দাদের সংখ‌্যাগুরু ভারত যেভাবে বহিরাগত হিসাবে দেখে, তাদের কাছে বাকিরাও বহিরাগত। ওখানে থেকে শুটিং করার অভিজ্ঞতা কেমন?

আয়ুষ্মান খুরানা: আমি তিনটে রাজ‌্য মিলিয়ে শুটিং করেছি। অসম, সিকিম এবং মেঘালয়। সেখানকার মানুষ খুবই সাধারণ। একেবারেই জটিল নন। ভাল খাবার, ভাল মিউজিক, ভাল পোশাক পরতে ভালবাসেন। শুটিংয়ে থাকাকালীন, ওখানকার মানুষের নানা সমস‌্যার কথা আমি নিজে শুনেছি। এটা একটা ফার্স্টহ‌্যান্ড এক্সপিরিয়েন্স। একটা জিনিস জানতাম না, ওখানকার সমাজ ‘ম‌্যার্ট্রিয়ার্কাল’ (মাতৃতান্ত্রিক)। নাগাল‌্যান্ডে মায়ের সারনেম ব‌্যবহৃত হয়। বলতে পারেন ওখানে থাকার পর আমি আরও বেশি করে ফেমিনিস্ট হয়ে উঠেছি। ট্রেলারে একটি সংলাপ আছে ‘মানুষের হয়ে কথা বলে জনসন’। অন‌্যদিকে প্রশাসনিক কর্তা জানান, মানুষের কথা তারা নিজেদের সুবিধামতো শুনবে।

এই ছবিতে নর্থ-ইস্টের মানুষদের প্রতি সরকারের অবিচারের কথাও কি উঠে এসেছে?

আয়ুষ্মান খুরানা: এই উত্তরটা আমাকে একটু ভেবে দিতে হবে। যদি ছবির কথাই ধরি, নর্থ-ইস্টের রাজনীতি এখানে যেভাবে দেখানো হয়েছে সেখানে দুটো গ্রুপ রয়েছে। প্রথম হল
‘টাইগার সাঙ্গা’ যারা সরকারের পক্ষে। এবং জনসনের দলটি হল ‘স্ট‌্যান্ডঅ‌্যালোন গ্রুপ’। এখানেই দু’ভাগ হয়ে যাওয়ার সূত্রপাত। সরকারের পক্ষ থেকে একজন আন্ডারকভার এজেন্ট হিসাবে যশুয়া (আয়ুষ্মান অভিনীত চরিত্র) কী করবে? বা তার কী করা উচিত? সে প্রোটোকল ফলো করবে না কি নিজের হৃদয়ের কথা শুনবে।

অভিনব কাশ‌্যপের সঙ্গে ‘আর্টিকল ফিফটিন’-এর পর আবার কাজ করলেন। কেমন অভিজ্ঞতা? দুটো চরিত্রেই আপনি সরকারের কর্মচারী। কিন্তু একেবারে ভিন্ন পরিস্থিতিতে…

আয়ুষ্মান খুরানা: ‘আর্টিকল ফিফটিন’-এ অভিনব এবং আমার হানিমুন পিরিয়ড ছিল, আমরা পরস্পরকে চিনেছিলাম। এই ছবিটা করতে গিয়ে বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছে। আর হ্যাঁ, দুটো চরিত্রের মিল থাকলেও একটা অবস্থানগত ফারাক আছে। ‘আয়ান রঞ্জন’ একজন আউটসাইডার ছিল যে, পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে বদলেছে। অন‌্যদিকে ‘যশুয়া’ এই নর্থ-ইস্টের মানুষদেরই একজন। যে ভাষাটাও জানে এবং আউটসাইডার নয়।

আপনি খুব বেছে বেছে ছবি করেন। আপনার একটা ইমেজও তৈরি হয়ে গিয়েছে। ছবি সাইন করার ক্ষেত্রে কোনও ফর্মুলা মেনে চলেন?

আয়ুষ্মান খুরানা: ছবি সাইন করার ক্ষেত্রে আমি কিছু নিয়ম মেনে চলি। আমাকে যাই অফার করা হবে তাতেই ‘হ্যাঁ’ বলব এমনটা নয়। এমনকী, কমার্শিয়াল ‘পটবয়লার’ ছবিতেও একটা অদ্ভুত কিছু কিংবা এক্সট্রাঅর্ডিনারি কিছু থাকতে হবে। সর্বোপরি ছবির বার্তাটা যেন ঠিক থাকে। আমি এমন কোনও ছবি করব না যেখানে শেষমেশ ভিলেনকেই হিরো বানিয়ে দেওয়া হল। যদি কোনও গ্রে চরিত্রে অভিনয় করি তাহলে সেটাকে সেইভাবেই দেখাতে হবে, গ্লোরিফাই করে নায়ক বানালে চলবে না।

তার মানে আপনি ‘কবীর সিং’-এর মতো ছবি করবেন না, তাই তো?

আয়ুষ্মান খুরানা: এই ছবিটা আমি করলে স্ক্রিপ্টে রদবদল করতে হবে।

‘চণ্ডীগড় করে আশিকি’-তে আপনার চরিত্রটা বেশ আপত্তিকর ছিল। হ্যাঁ, বলার আগে দু’বার ভাবেননি?

আয়ুষ্মান খুরানা: আমি আগেও বলেছি, ছবিতে নেগেটিভ চরিত্র করতে আমার আপত্তি নেই, যদি ছবির বার্তাটা ঠিক হয়। আসলে ‘দিস ইজ নট অ‌্যাবাউট মি, দিস ইজ অ‌্যাবাউট দ‌্য ফিল্ম’। সাধারণত অভিনেতারা সেলফ অবসেসড হন। আমার সেটা নেই।

আপনার কাজ এবং সাক্ষাৎকার দেখে মনে হয় আপনার পা মাটিতেই আছে। আপনি জানেন, আপনি কী করছেন। এই ব‌্যালান্সটা কী করে করেন?

আয়ুষ্মান খুরানা: আমি আসলে খুব অল্প বয়সে টিনএজার হিসাবেই অভিনয় শুরু করেছিলাম। সেই সময়েই রিয়‌্যালিটি শো-এর বিজয়ী হয়ে চণ্ডীগড়ের মতো ছোট জায়গায় ফেমাস হয়ে গিয়েছিলাম। টিনএজার হিসাবে তখন মাথাটা একটু ঘুরেই গিয়েছিল। এই সবই ওই অল্প বয়সেই পেরিয়ে এসেছি, এখন আর হয় না। তাছাড়া আমার চারপাশে যারা আছে তারা কেউ ‘ইয়েস ম‌্যান’ নয়। যারা আমাকে ঠিক পথে চালিত করতে সাহায‌্য করে।

আপনার স্ত্রী তাহিরা একজন ফাইটার। আপনারা পরস্পরকে কীভাবে ইন্সপায়ার করেন?

আয়ুষ্মান খুরানা: আসলে আমরা তো পরস্পরকে সেই স্কুলে পড়ার দিনগুলো থেকে চিনি, তাই আমাদের জার্নিটাও পরস্পরকে প্রভাবিত করেছে বলেই আমার মনে হয়।

[আরও পড়ুন: সিরিয়ালের মিষ্টি প্রেমিক এবার সিনেমার ভিলেন! প্রকাশ্যে অভিনেতা শনের প্রথম ছবির পোস্টার ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement