১৫ ডিসেম্বর অভিনেতা সৌরভ দাসের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়বেন দর্শনা বণিক। কীভাবে শুরু হল প্রেমপর্ব? কী কী হচ্ছে বিয়েতে? একান্ত আলাপচারিতায় দর্শনা। শুনলেন বিদিশা চট্টোপাধ্যায়।
১৫ ডিসেম্বর আপনার সঙ্গে অভিনেতা সৌরভের বিয়ে। আপনাদের কোর্টশিপের দিনের কথা জানতে চাই।
দর্শনা: পরস্পরকে চিনতাম বহু বছর। আসলে বন্ধুত্ব থেকেই সম্পর্কটার শুরু বলতে পারো। ২০২১ সাল থেকে পরপর কাজ করছিলাম। ২০২২-এ আরও কাছাকাছি এলাম। তবে আমরা সম্পর্কটা একটু ব্যক্তিগতই রাখতে চেয়েছিলাম, যতদিন না পার্মানেন্ট হয়, আই মিন বিয়ের ঘোষণা করি।
এত তাড়াতাড়ি বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন কেন?
দর্শনা: আমরা দুজনেই এই সিদ্ধান্তে এসেছি। দুজনেই সেটল করতে চাই। আমি খুব একটা লিভ-ইন-এ বিশ্বাস করি না। সৌরভও লিভ-ইন করতে চায়নি। আমাদের দুজনের কেউই পাঁচ-সাত বছর প্রেম করার পর বিয়ে করব সেভাবে ভাবিনি। যদি সব ঠিকঠাক থাকে, তাহলে আর্লি বিয়ে করব এমনটাই দুজনে স্থির করেছিলাম। মানে বিয়ে করেই দেখতে চাই, সম্পর্কটা ওয়র্কআউট করছে কি না।
বিয়ের সিদ্ধান্তে বাড়ির কী প্রতিক্রিয়া ছিল?
দর্শনা: আমার বাবা খুবই চাইত আমার অন্তত একটা স্টেডি বয়ফ্রেন্ড থাকুক। কারণ বহুদিন পর্যন্ত আমি কাউকে ডেট করিনি। কলেজে পড়ার সময় একজনকে ডেট করেছিলাম। সেটা একটা দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ব্রেক আপ হয়ে যায়, কারণ সম্পর্কটা কোথাও পৌঁছতে পারছিল না। তখন বাবা একটু চিন্তিত হয়ে পড়ে, আমি ঠিক আছি কি না। আর সেই সম্পর্কটা নিয়ে বাবা সাপোর্টিভ ছিল না। ওটা পুরোপুরি গোপন ছিল বাড়ি থেকে। আমার বাবা খুব স্ট্রিক্ট ছিলেন। কিন্তু পরে মনে হয়েছে যে, না মেয়ের একটা বেস্ট ফ্রেন্ড অথবা পার্টনার দরকার। সৌরভের সম্পর্কের কথাটা বাড়িতে জানত। বলেই দেখা করতে যেতাম। আমি বলেছিলাম, আই অ্যাম সিওর অ্যাবাউট দিস গাই।
সৌরভের কোন বিষয়টা আপনার সবচেয়ে ভালো লেগে যায়?
দর্শনা: সৌরভ খুব ইমোশনাল। আমার চেয়েও বেশি। খুব সহজেই এক্সপ্রেস করতে পারে, কাঁদতে পারে। আর আমি দেখেছি ফিল্ম সেটে ও সকলের সঙ্গে সমান ব্যবহার করে। তা সে টেকনিশিয়ান হোক বা তার চেয়ে উঁচু পদের কেউ, সকলের সঙ্গে সমান ভাবে মেশে। আর যখন কাউকে সাহায্য করে, আউট অফ দ্য ওয়ে গিয়ে হেল্প করে। ঐন্দ্রিলার অকালপ্রয়াণের আগে দেখেছি ও রোজ দিনের কাজ সেরে সব্যসাচীর সঙ্গে দেখা করতে যেত হাসপাতালে। ওর সঙ্গে রাতে থাকত। রাত নটা, দশটায় ও ড্রপ নিত হসপিটালে। কোনও বন্ধু যদি রাত দুটোতেও সৌরভকে ফোন করে, হি উইল বি দেয়ার।
সৌরভ তাঁর পূর্ব সম্পর্কে লিভ-ইন করছিলেন। তারপর ব্রেকআপ হয়ে যায়। সেটা নিয়ে বাড়িতে কিছু বলেনি?
দর্শনা: আমার বাবা নিজেই বলেন, অতীত নিয়ে ভাবতে না। আর একটা কথা বলতে চাই, সৌরভের একটা ইমেজ আছে যেটা দিয়ে ওকে লোকে জাজ করে। বাট হি ইজ মাচ মোর দ্যান দ্যাট। ওর অনেক কিছুই আছে যা লোকে জানে না। সৌরভ যে-যে চরিত্রে অভিনয় করেছে, মানুষ সেটা দিয়ে ওকে জাজ করেছে। লোকে বলে, ও মাতাল-গাঁজাখোর, সেটাও ঠিক না। আমি এটা ভালো বা খারাপ বলছি না, শুধু বলছি সৌরভ সম্পর্কে এই মন্তব্য সঠিক নয়।
বিয়ের জন্য প্রথম প্রোপোজ কে করে?
দর্শনা: খুব সাধারণভাবেই এটা নিয়ে কথা হয়েছিল। একদিন সকালে ফোন করে বলেছিল, যে ‘কাকু কি বাড়িতে থাকবে? আমি বাড়িতে এসে কাকুর সঙ্গে কথা বলতে চাই। আই ওয়ান্ট টু ম্যারি ইউ’। তারপর বাড়িতে এসে বাবার সঙ্গে কথা বলল।
এই মুহূর্তে কাজের কমিটমেন্ট কী আছে?
দর্শনা: অনেকগুলো রিলিজ পেন্ডিং হয়ে আছে। বাংলাদেশের দুটো প্রোজেক্ট আছে, হটস্টার-এর ওয়েব সিরিজ ‘সেভ দ্য টাইগার সিজন টু’, হিন্দিতে একটা ছবি আছে পরমদার সঙ্গে ‘আওয়াস্তি ভার্সেস আওয়াস্তি’, অনুরাগ বসুর ‘মেট্রো ইন দিনো’-র প্যাচ ওয়ার্ক শুট বাকি আছে। আর বাংলায় রিলিজ বাকি।
বিয়েতে শুনলাম লাল বেনারসি পরবেন?
দর্শনা: হ্যাঁ, টুকটুকে লাল বেনারসি, তাতে রুপোলি জরির কাজ, সোনার জল করা। এটা পুরো হাতে বোনা। শাড়িটা প্রায় পাঁচ মাস ধরে বানানো হয়েছে। আর একেবারে সাবেকি বাঙালি সাজ। সৌরভও তসরের ধুতি-পাঞ্জাবি পরবে। কিছুটা জামদানির কাজ করা, আর কিছুটা কঁাথা স্টিচ করা। আমাদের মেনুও বাঙালি। বাসন্তী পোলাও, গলদা চিংড়ি, মাটন, চিকেন। আর মিষ্টিমুখে থাকছে স্পেশাল পিঠের কাউন্টার। আমরা এটা রিসর্টে করছি।
বিয়ের পর হানিমুনের কী প্ল্যান?
দর্শনা: এখনই যাচ্ছি না। কয়েকমাস পরে যাব। সামারে ইউরোপে যেতে চাই (হাসি)।