সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মনে করেছিলাম বেঁচে রয়েছে পল্লবী। তাই কাউকে কিছু না জানিয়েই ওকে নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। গড়ফা থানার আধিকারিকদের সামনে এই জবানবন্দি দিতে দিতে প্রায় কেঁদেই ফেলেছিলেন সাগ্নিক চক্রবর্তী। গত রবিবার সকালে দক্ষিণ কলকাতার গড়ফার গাঙ্গুলিপুকুরের ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী পল্লবী দের (Pallavi Dey) ঝুলন্ত দেহ। পল্লবীর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে খুন, প্রতারণা, সম্পত্তি হস্তগত করার অভিযোগে প্রেমিক সাগ্নিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জানিয়েছে, আত্মঘাতী হয়েছেন পল্লবী। তবু তদন্তের খাতিরে পুলিশ তাঁকে মৃত্যুর ঘটনার ব্যাপারে জেরা করে। সাগ্নিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রেমিকা পল্লবীকে ঝুলন্ত অবস্থায় নামিয়ে নিয়ে আসার পর তিনি কাউকে জানাননি। এর উত্তরে পুলিশকে সাগ্নিক জানান, তিনি পাশের ঘর থেকে ধূমপান করে এসে দেখেন, বেডরুমের দরজা বন্ধ। তিনি দরজার লক ভেঙেই পল্লবীকে সিলিং থেকে কাপড়ের ফাঁস দিয়ে ঝুলতে দেখেন। তিনি ক্রমাগত চিৎকার করে যাচ্ছিলেন। সেই শব্দ শুনে এক মিস্ত্রিকে নিয়ে উপরে উঠে আসেন বাড়ির কেয়ারটেকার।
পুলিশকে কেয়ারটেকার জানান, তাঁরা দেখেন, ঝুলন্ত পল্লবীকে নামানোর চেষ্টা করছেন সাগ্নিক। তাঁদের সাহায্যে তাঁকে নামিয়ে আনা হয়। পুলিশের কাছে সাগ্নিকের দাবি, তিনি মনে করেছিলেন, বেঁচে রয়েছেন পল্লবী। শুধু অচেতন হয়ে গিয়েছেন। এই ব্যাপারে সাগ্নিকের আইনজীবী অর্ঘ্য গোস্বামী জানান, ভালবাসার পাত্র বা পাত্রীর মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারেন না। সাগ্নিক তাঁর প্রেমিকা পল্লবীকে ভালবাসতেন বলেই মনে করেছিলেন, তিনি তখনও বেঁচে রয়েছেন।
[আরও পড়ুন: ‘ধনুষ আমাদের সন্তান!’, এমন দাবির জন্য বৃদ্ধ দম্পতিকে আইনি নোটিস ধরালেন অভিনেতা ]
সাগ্নিক চক্রবর্তী জেরার মুখে একাধিকবার দাবি করেছেন, তিনি পল্লবীকে ‘বাঁচানোর চেষ্টা’ করেছিলেন। তাই কোনও দেরি না করে পল্লবীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। সাগ্নিকের দাবি, তাঁর কাছে পল্লবীর মায়ের মোবাইল নম্বর ছিল না। এই নম্বর ছিল পল্লবীর মোবাইলেই। সেই কারণে পল্লবীর মোবাইল থেকে তাঁর মাকে ফোন করেন সাগ্নিক। জানান, যেহেতু তিনি বিশ্বাসই করতে পারেননি যে, পল্লবীর মৃত্যু হয়েছে, তাই পল্লবীর মা সঙ্গীতা দে—কে বলেছিলেন, অচেতন অবস্থায় রয়েছেন পল্লবী। পল্লবীর মা সাগ্নিককে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন তাঁর মেয়েকে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে পল্লবীকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। সাগ্নিকের বিরুদ্ধে পল্লবীর পরিবারের অভিযোগ, তিনি তথ্য চাপতেই পরিবারের লোকেদের মৃত্যুর খবর দেননি। কিন্তু সাগ্নিকের দাবি, প্রেমিকার মৃত্যুর খবর চাপার ইচ্ছা তাঁর ছিল না। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে সাগ্নিক স্বীকার করেছেন যে, তিনি ভুয়ো কল সেন্টার চালাতেন। নিউটাউনে বসে অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দাদের ফোন করে টাকা হাতিয়ে নিতেন বলে অভিযোগ।