অভিরূপ দাস: কেকে’র (Singer KK) ঘটনা নেহাতই আকস্মিক, অনভিপ্রেত এবং একান্ত বিক্ষিপ্ত। এর ভিত্তিতে কোনও সার্বিক ধারণা তৈরি করা চূড়ান্ত অনুচিত। আয়োজকরা বলছেন, সংগীতানুষ্ঠানের নিরাপত্তা, শ্রোতার মান, সমগ্র ব্যবস্থাপনা বিচার করলে অন্যান্য শহরের তুলনায় এগিয়ে কলকাতা। জাঁকজমক আয়োজনে নির্দ্বিধায় দশে দশ দেওয়া যায় শহরকে। সেকালের কিশোরকুমার থেকে মহম্মদ রফি, লতা মঙ্গেশকর কিংবা অধুনা অরিজিৎ সিং, শ্রেয়া ঘোষাল, মোহিত চৌহানরা অগুনতি অনুষ্ঠান করেছেন বঙ্গে। ঘনঘন এ রাজ্যে আসার কারণ যেমন শ্রোতার ‘ভালবাসা’ তেমন তাঁদেরও টান কম নয় এ শহরের প্রতি।
আয়োজকদের দাবি, তিলোত্তমার শ্রোতাদের সমাদরে, চোখ ধাঁধিয়ে যায় মুম্বইয়ের শিল্পীদের। দীর্ঘ পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে গায়কদের নিয়ে শহরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন তোচন ঘোষ। সংগঠক হিসাবে তাঁর ভূমিকা নিয়ে তারিফ করেছেন শিল্পীরাও। তোচনের বক্তব্য, কলকাতা নিরাপদ শুধু নয়, এ শহর শিল্পীকে যোগ্য সম্মান দিতে জানে। শিল্পীরাও চান সংস্কৃতির রাজধানীতে পা রাখতে। সূত্রের খবর, আগামী জুলাইতেই সোনু নিগম (Sonu Nigam) আসছেন শহরে। প্রাথমিক কথাবার্তা হয়ে গিয়েছে তোচন ঘোষের সঙ্গে। আয়োজকের কথায়, কেকে‘র মৃত্যুর পর কলকাতা নিরাপদ নয় বলে যাঁরা রটাচ্ছেন তাঁদের ধারণা যে কতবড় ভুল তা প্রমাণ করতে এগিয়ে আসছেন সোনু নিগম।
[আরও পড়ুন: পুকুরে মুন্ডু, দেহ ধানখেতে! যুবতীর রহস্যমৃত্যুতে তীব্র চাঞ্চল্য বাসন্তীতে]
আয়োজকরা জানিয়েছেন, শহরে প্রতিটি অনুষ্ঠানের আগে যেরকম ব্যবস্থা থাকে তাতে বিশৃঙ্খলা হওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। অনুষ্ঠানের আগে, সেই জেলার এসপি, স্থানীয় থানার সঙ্গে কথাবার্তা হয়। তাঁরা যথেষ্ট পুলিশি বন্দোবস্ত রাখেন। সব দেখে নিয়ে তবেই শুরু হয় অনুষ্ঠান। সামাজিক মাধ্যমে একদল রটাচ্ছেন, কলকাতা নিরাপদ নয়। তাঁদের কিছু ঘটনা স্মরণে রাখতে বলছেন আয়োজকরা।
সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে গান গাইতে গিয়ে পড়ে পা ভেঙে যায় কন্নড় গায়ক অজয় ওয়ারিয়রের। মঞ্চের আগে ছিল পেল্লায় গর্ত। তোচন ঘোষের কথায়, বাংলার সংস্কৃতির ইতিহাস সুদূর প্রাচীন। শিল্পীকে দেখতে সমর্থকের উন্মাদনা অত্যন্ত স্বাভাবিক। শুনেছেন কখনও গায়করা কলকাতায় এসে বলেছেন, অমুকে আমার সঙ্গে অসভ্যতা করেছে। সম্প্রতি তেমন ঘটনাও তো হয়েছে চণ্ডীগড়ে। মহিলা ভক্তরা ঘিরে ধরে দমবন্ধ পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। কোনও রকমে সে ভিড় থেকে পালিয়ে বাঁচেন বলিউড গায়ক মিকা সিং (Mika Singh)। আরেক আয়োজক বাবুয়া ভৌমিক জানিয়েছেন, শহরের প্রতিটি অনুষ্ঠানে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা থাকে গায়কদের জন্য।