সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেন (Ukraine) সংকট নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা ইউরোপীয় ইউনিয়নের (EU)। ২৮টি দেশ নিয়ে গঠিত ইইউ জানিয়েছে, ইউক্রেন সীমান্তে বিশাল সংখ্যক রুশ সেনা মোতায়েন ঘিরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে উদ্বেগ রয়েছে। সেই বিষয়ে ‘বন্ধু ও সহযোগী’ ভারতকে অবগত করেছে তারা।
[আরও পড়ুন: তিনদিক থেকে ইউক্রেনকে ঘিরে ফেলেছে রুশ ফৌজ, উপগ্রহ চিত্রে মিলল ভয়াবহ তথ্য]
বুধবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এক ইইউ শীর্ষ আধিকারিক জানান, “আমরা ইউক্রেনের পাশে রয়েছি এবং বন্ধু দেশগুলিকে পরিস্থিতির গুরুত্ব এবং পরিণতি সম্পর্কে অবহিত করছি।” ভারতের সঙ্গে সরাসরি কী আলোচনা হয়েছে সেই বিষয়ে স্পষ্ট করে মুখ না খুললেও ইঙ্গিতে ‘রুশ আগ্রাসনে’র বিরোধিতা করার দাবি জানিয়েছে ব্রাসেলস বল সূত্রের খবর। একইসঙ্গে, ইইউ-র তরফে ইউক্রেন পরিস্থিতি সম্পর্কে কিছু তথ্য এবং ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। বলে রাখা ভাল, বুধবারই ইউক্রেনে বসবাসকারী ভারতীয়দের সে দেশের সরকারের বার্তায় বলা হয়েছে, আপাতত কিছু দিনের জন্য হলেও তাঁরা যেন দেশে ফিরে যান। তার আগে মঙ্গলবার ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাস সে দেশে বাসবাসকারী ভারতীয়দের উদ্দেশে দেশে ফেরার নির্দেশিকার জারি করেছিল।
এদিকে, ইউক্রেন নিয়ে উভয় সংকটে রয়েছে নয়াদিল্লি বলেই মত বিশ্লেষকদের। কারণ, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক ও অত্যন্ত মজবুত। সোভিয়েত জমানা থেকেই প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে রুশ অস্ত্রের বড় খদ্দের ভারত। দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্কও অত্যন্ত শক্তিশালী। সেই সম্পর্ক কিছুতেই নষ্ট করতে চায় না মোদি সরকার। তাই আমেরিকা সুর চড়ালেও এখনও ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করেনি ভারত। অন্যদিকে, অস্ত্র আমদানি ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক ভাল। চলতি সপ্তাহেই মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন ও ফ্রান্সের ডাকা ইন্দো-প্যাসিফিক সংক্রান্ত বৈঠকে যোগ দিতে ইউরোপ যাচ্ছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। ফলে দুই প্রতিপক্ষের মধ্যে কীভাবে ভারসাম্য বজায় রাখবে নয়াদিল্লি তা সময়ই বলবে।
উল্লেখ্য, ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে আমেরিকা-রাশিয়ার মতো যুযুধান দু’পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে অস্ত্রে শান দিতে নেমে পড়েছিল। এক্ষেত্রে রাশিয়ার তৎপরতাই ছিল বেশি। ইউক্রেন সীমান্তে মোতায়েন হয়েছিল বহু রুশ সেনা। পালটা পূর্ব ইউরোপে ফৌজ পাঠায় আমেরিকা। পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রেখেছে বলেও জানিয়েছে ওয়াশিংটন। হোয়াইট হাউসের তরফে জানানো হয়, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের সামান্য চিহ্ন দেখতে পেলেই যোগ্য জবাব দেবে আমেরিকা ও তার সঙ্গীরা। চরম মূল্য চোকাতে হবে রাশিয়াকে।