সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশ জ্বলছে। রাজপথে প্রতিবাদের জনজোয়ার উত্তরোত্তর বাড়ছে। মৃতের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু ইরান আছে ইরানেই! হিজাব বিদ্রোহের পরও নিজের অবস্থান থেকে একচুলও নড়তে নারাজ প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সরকার। এহেন পরিস্থিতিতে তেহরানের উপর চাপ বৃদ্ধি করে ইরানের ‘নীতি পুলিশে’র উপর নিষেধাজ্ঞা চাপাল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
সোমবার এক বিবৃতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জানিয়েছে, ইরানে (Iran) পুলিশ হেফাজতে মাহসা আমিনিকে পিটিয়ে মারার জেরে দেশটির ‘নীতি পুলিশ’ ও কয়েকজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ওই তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের ভিসা দেওয়া হবে না এবং সম্পত্তি ফ্রিজ করা হবে। তালিকায় থাকা ইরানি সংস্থাগুলির সম্পত্তিও ফ্রিজ করা হবে। ইইউ গেজেটে প্রকাশিত নোটিফিকেশনে জানানো হয়েছে, ইরানের ১১ জন ব্যক্তি ও চারটি সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এরমধ্যে আছেন সরকারি বাহিনী রেভোলিউশনারি গার্ডের সাইবার ডিভিশনের দায়িত্বে থাকা এক মন্ত্রী। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে নীতি পুলিশ, বাসিজ আধাসামরিক বাহিনী (রেভোলিউশনারি গার্ডের অংশ), জাতীয় পুলিশের একটি শাখাও। এদের প্রধান এবং সমস্ত আধিকারিকদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসে গালওয়ান সংঘর্ষের ভিডিও, আস্ফালন জিনপিংয়ের]
এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (EU) এহেন পদক্ষেপে রীতিমতো ক্ষুব্ধ ইরান। পালটা নিষেধাজ্ঞা জারি করার হুমকি দিয়েছে রাইসি প্রশাসন। এই বিষয়ে জার্মানির বিদেশমন্ত্রী অ্যানালেন বায়েরবশের মন্তব্য, “নাম নীতি পুলিশ হলেও তাদের অপরাধমূলক কাজকর্ম সবাই দেখছে।” উল্লেখ্য, মাহসা অমিনীর মৃত্যুর পর হিজাব বিদ্রোহ ক্রমে সরকার বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। এবং যেভাবে প্রশাসন দমনপীড়ন চালাচ্ছে তাতে ইইউ রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
উল্লেখ্য, ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নীতি পুলিশীর মারে মৃত্যু হয় তরুণী মাহসা আমিনির। তারপর থেকেই দেশজুড়ে চলছে প্রতিবাদী মিছিল। স্বৈরশাসকের বিরোধিতায় ইটালির বুকে তৈরি হওয়া ‘বেলা চাও’ গানটি গেয়ে ইরানের (Iran) রাস্তায় প্রতিবাদ জানাচ্ছেন আরব দুনিয়ার মেয়েরা। হিজাব বিরোধী (Anti-Hijab) সেই আন্দোলনে শামিল পুরুষদের একাংশও। তাঁদের কণ্ঠেও ‘বেলা চাও’। এহেন প্রতিবাদের ভিডিও নিয়ে এখন নেটদুনিয়ায় জোর চর্চা।
এদিকে, বেকায়দায় পড়লেও কিন্তু অবস্থান বদলে নারাজ ইরানের সরকার। তেহরানের দাবি, এই বিক্ষোভে আসলে ষড়যন্ত্র এতে হাত রয়েছে আমেরিকার। একইসঙ্গে সরকারের আরও দাবি, এই আন্দোলনকে মদত দিচ্ছে ‘কোমলা’ বলে ইরানের একটি বামপন্থী সংগঠন এবং বেশ কয়েকটি জঙ্গি গোষ্ঠী। ইতিমধ্যেই ইরানের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমের প্রদেশ থেকে একাধিক জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কোর।