সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাঙালির জ্ঞানচর্চার ইতিহাসে 'ভারতকোষ' বা 'বিশ্বকোষ'-এর মতো বৃহৎ গ্রন্থের পাশাপাশি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হল 'গৌড়ীয় বৈষ্ণব অভিধান'। এর সংকলক হরিদাস দাস বাবাজী। প্রথম জীবনে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র। দুটি বিষয়ে এম এ। ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট। গোল্ড মেডালিস্ট। পরবর্তীতে হয়ে গেলেন নিষ্কিঞ্চন বৈষ্ণব বাবাজী। রচনা করেছেন ৬৫টিরও বেশি বই। সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় এবং সুকুমার সেনের মতো পণ্ডিতেরা তাঁর পাণ্ডিত্যে মুগ্ধ ছিলেন।
তাঁর একক প্রচেষ্টায় সংকলিত এই অভিধানটি ছিল সংশ্লিষ্ট ইতিহাস, দর্শন, সাহিত্য, সঙ্গীত এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব নিয়ে এক বিশাল জ্ঞানকোষ বা এনসাইক্লোপিডিয়া। এই গ্রন্থ শুধু বৈষ্ণব সমাজের জন্য নয়, ইতিহাস ও সংস্কৃতির পাঠকদের জন্যও অপরিহার্য।
বিপুল আয়তনের এই বইটি এবার ইন্টারনেটের মাধ্যমে সহজলভ্য হল। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক ভারতীয় ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের প্রধান ড. অভিষেক বসুর তত্ত্বাবধানে কাজটি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে 'চরিতাবলী' খণ্ডটি অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি 'তীর্থাবলী' নামক খণ্ডটিও প্রকাশিত হয়েছে। আনন্দের বিষয়, পুরো ওয়েবসাইটটিই (vaishnavabhidhan.org) সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজড।
সম্প্রতি মহাবোধি সোসাইটিতে 'তীর্থাবলী'-র অন্তর্জাল উদ্বোধন উপলক্ষে এক আলোচনা চক্র হয়। অধ্যাপক সুমিত চক্রবর্তী হরিদাস দাসের কাজের মৌলিক গুরুত্ব তুলে ধরেন। অধ্যাপক মানস কুণ্ডু বলেন, এই অভিধানে ভারতীয় জ্ঞানচর্চার সঙ্গে পাশ্চাত্যের গবেষণা পদ্ধতির মিশ্রণ ঘটেছে। ড. অভিষেক বসুর মতে, এই কাজ চৈতন্যদেবের লুপ্ত তীর্থ উদ্ধারের গুরুদায়িত্বেরই উত্তরকালের অনুরণন। ভক্তিবেদান্ত রিসার্চ সেন্টারের পক্ষে সুমন্ত রুদ্র জানান, এমন ঐতিহাসিক কাজে যুক্ত হতে পেরে তাঁরা খুশি। খুব দ্রুত অবশিষ্ট খণ্ডগুলিও অনলাইনে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
