সুকুমার সরকার, ঢাকা: আপাতত কারাবাসে বিএনপি চেয়ারপারসন, বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া৷ দুর্নীতি মামলায় জামিনের আবেদন সব খারিজ হয়ে গিয়েছে৷ অসুস্থতার মধ্যেই কারাবন্দি তিনি৷ কিন্তু মেজাজ তাঁর সপ্তমেই৷ সোমবার কারাগার থেকে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ সেখানেই তাঁকে দেখে সাংবাদিকরা ছুটে গিয়ে কথা বলতে চাইলে মেজাজ হারিয়ে ফেলেন বিএনপি নেত্রী৷ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিরক্ত করবেন না৷ আমি এখন চিকিৎসা করাতে যাচ্ছি৷ আমার বিশ্রাম প্রয়োজন৷’
[ আরও পড়ুন: কালবৈশাখীর দাপটে বিপর্যস্ত ওপার বাংলা, প্রাণহানি ৯ জনের]
এদিন দুপুরে তাঁর অ্যাম্বুল্যান্স হাসপাতালে পৌঁছানো মাত্রই সাংবাদিকরা ঘিরে ধরেন। তাঁকে নানা প্রশ্ন করতে থাকেন৷ তাঁদের সরিয়ে দিতে নিরাপত্তারক্ষীদের বেশ বেগ পেতে হয়৷ তাতেও নাছোড় সাংবাদিকদের দেখে ক্ষেপে যান খালেদা জিয়া৷ তিনি নিজেই হুইলচেয়ারে বসে রুক্ষ স্বরে বলে ফেললেন, ‘কেউ ঢুকবেন না৷ আমি বিশ্রাম নেব৷’ এরপর পরিস্থিতি সামলে তাঁকে ৬২১ নম্বর কেবিনে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা তাঁকে পরীক্ষার জন্য কেবিনে যেতে চাইলে, খালেদা জিয়া তাতেও জানান, তিনি আগে বিশ্রাম নেবেন৷ তারপর যেন চিকিৎসকরা তাঁর পরীক্ষা করেন৷ মার্চের গোড়াতেই খালেদা জিয়ার শারীরিক পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু সেসময় হাসপাতালে যেতে তিনি রাজি হননি৷ এবার অসুস্থতা বাড়তে থাকায় জেল কর্তৃপক্ষ আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করানো হয়েছে৷ খালেদা জিয়ার হাসপাতালে পৌঁছানোর খবরে হাসপাতালে গিয়ে নেত্রীর সঙ্গে দেখা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির-সহ বেশ কয়েকজন৷
[ আরও পড়ুন: পেটে লুকিয়ে মাদক পাচার, সীমান্ত পেরনো রোহিঙ্গাদের কাজে লাগিয়ে সক্রিয় চক্র]
নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সোমবার আদালতে পেশ করার কথা ছিল। দুর্নীতির পাঁচটি মামলা ছাড়াও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরও ৩১টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ১১টি মামলাই নাশকতার। সেইসঙ্গে রয়েছে মানহানি এবং রাষ্ট্রদ্রোহের বেশ কিছু মামলা। তবে খালেদা জিয়া অসুস্থ বলে এদিন আদালত তাঁকে অব্যাহতি দিয়েছে। এই অবস্থায় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা সময় চেয়ে আবেদন করলে আদালত আগামী ১০ এপ্রিল মামলার শুনানির পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করা হয় ২০০৯ সালে, আওয়ামি লিগ সরকারের সময়। প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় জিয়া তার ক্ষমতা অপব্যবহার করে এই ট্রাস্টের জন্য ৬ কোটি ১৯ লাখ টাকার তহবিল জোগাড় করে আত্মসাৎ করেন। এই মামলায় তাঁর ১৭ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত৷ এছাড়া নাইকো, গ্যাটকো, বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি মামলা রয়েছে। তবে এই তিন দুর্নীতি মামলায় পুলিশ এখনও চার্জশিট দেয়নি।
The post ‘বিরক্ত করবেন না’, সাংবাদিকদের দেখে মেজাজ হারালেন কারাবন্দি খালেদা জিয়া appeared first on Sangbad Pratidin.