শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: জমি তৈরিই ছিল। আলাপ-আলোচনা, পরিকল্পনাও পাকা হয়ে গিয়েছিল। অপেক্ষা ছিল শুধু বাস্তবায়নের। বৃহস্পতিবার দুপুরে সেই কাজও হয়ে গেল। পরিকল্পনামতো জঙ্গিপুরের প্রচার সভায় কংগ্রেস ছেড়ে, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) হাত ধরে ঘাসফুল শিবিরে যোগ দিলেন ফরাক্কার ৫ বারের বিধায়ক মইনুল হক (Moinul Hoque)। তাঁর হাতে পতাকা তুলে দিয়ে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি তাঁকে পাশে নিয়ে কংগ্রেসকে বিঁধলেন অভিষেক। বললেন, ”কংগ্রেস কাজ করছে ঠিকই, কিন্তু পারছে না। হতাশ হয়ে মইনুলদাও দল ছাড়লেন।”
আগামী ৩০ তারিখ মুর্শিদাবাদের দুই কেন্দ্র – জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জে বিধানসভা ভোট। তার ঠিক একসপ্তাহ আগেই কংগ্রেস ছাড়লেন মইনুল হক। মঙ্গলবারই এই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিল। ওইদিন দুপুরেই জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা মইনুল হক চিঠি লিখে দলত্যাগের কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন সোনিয়া গান্ধীকে (Sonia Gandhi)। তখনই তাঁর দলবদলের গুঞ্জনে সিলমোহর পড়েছিল। আর বৃহস্পতিবার জঙ্গিপুরের (Jangipur) এমডিআই ময়দানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচার সভাতেই মইনুল হক তৃণমূলে (TMC) যোগ দিলেন। তাঁর হাতে পতাকা তুলে দিলেন অভিষেক। পাশে দাঁড় করিয়ে কংগ্রেসের উদ্দেশে ঝাঁজালো বক্তব্যও পেশ করলেন।
[আরও পড়ুন: জমা জলে কাজ করতে গিয়ে বেলঘরিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত শ্রমিক, বিক্ষোভ কারখানা চত্বরে]
জঙ্গিপুরের সভা থেকে অভিষেকের কটাক্ষ, ”কংগ্রেস মুখে বলছে বিজেপি বিরোধিতার কথা। কিন্তু কাজে তা করছে না। বরং বহিরাগত শক্তিকে সমর্থন করতে সিপিএমের হাত ধরে তৃণমূলের বিরোধিতা করেছে। অধীর চৌধুরী নিজে তৃণমূলের বিরুদ্ধে গোপন আঁতাঁত করেছেন। এসবের ফল কী হয়েছে? একেবারে শূন্যে নেমে গিয়েছে কংগ্রেস। ২০১৬ সাল থেকেই ওরা রাজনৈতিক নীতি-আদর্শ বিসর্জন দিয়ে অনৈতিক জোটে শামিল হয়েছে। এসব দেখে মইনুল হকের মতো নেতাও দলে থাকতে পারেননি। তিনি আমাদের সঙ্গে লড়াই করতে এসেছেন। দিল্লি থেকে বিজেপি সরকার উৎখাত করতে হলে যে তৃণমূলই একমাত্র মামলা, তা সবাই বুঝছেন।”
[আরও পড়ুন: ‘সিপিএমের সঙ্গে আঁতাঁত করলে হেরে যাবেন’, সামশেরগঞ্জের প্রচারে অভিষেকের নিশানায় কংগ্রেস]
জঙ্গিপুরে তৃণমূলের প্রার্থী প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির হোসেন। তাঁকে ফের জেতানোর আবেদন জানিয়ে অভিষেক বলেন, ”জঙ্গিপুর তো বটেই। এবার মুর্শিদাবাদে সবকটি লোকসভা কেন্দ্রেই তৃণমূলকে জিততে হবে। তবে তার আগে ৩০ তারিখ সকলে ঘাসফুল চিহ্নে ভোট দেবেন। ৩ তারিখ ব্যালট বাক্স খুললে যেন আপনাদের ভোট উপচে পড়ে।”