shono
Advertisement

Breaking News

EXCLUSIVE: ‘আমার লড়াই জাতীয় পুরস্কারের জন্য নয়’, একান্ত সাক্ষাৎকারে অকপট প্রসেনজিৎ

কী নিয়ে আক্ষেপ রয়েছে অভিনেতার?
Posted: 02:10 PM Jan 28, 2022Updated: 02:10 PM Jan 28, 2022

দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর বড়পর্দায় ‘কাকাবাবুর প্রত‌্যাবর্তন’ (Kakababur Protyaborton) ঘটছে শীঘ্র। অনিশ্চিত সময়েও প্রত‌্যয়ী প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ‌্যায় (Prosenjit Chatterjee)। মন খুলে কথা বললেন সুপারস্টার। শুনলেন শম্পালী মৌলিক।

Advertisement

কেমন আছেন?
এখন ঠিক আছি অনেকটাই। ১৩ দিন হয়ে গেল (সোমবার), আরও দিন পাঁচেক পরে কাজে ঢুকব। আমি যখন বাড়িতে বসে রইলাম তখন কোভিড (COVID-19) হল, এটাই দুর্ভাগ‌্যজনক। যখন বাইরে শুটিং করলাম, মুম্বই গেলাম তখন হল না।

প্রায় তিন বছর পর ফের আপনার ছবি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে চলেছে। শেষ এসেছিল ‘রবিবার’ (প্রেক্ষাগৃহে) এবং ‘নিরন্তর’ (টিভিতে)।
ঠিকই! যে বছর প‌্যানডেমিক এল সেই বছর পুজোয় ‘কাকাবাবুর প্রত‌্যাবর্তন’ রিলিজের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু হল না। প্রায় আড়াই বছর অপেক্ষার পর ‘কাকাবাবুর প্রত‌্যাবর্তন’ আসছে সামনের ৪ ফেব্রুয়ারি।

হতাশা কি গ্রাস করেনি?
হ্যাঁ, নিশ্চয়ই হতাশা গ্রাস করেছিল। ‘কাকাবাবু’র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল ফ‌্যামিলি ছবি আর বাচ্চাদের ছবি। ইটস আ বিগ ফিল্ম। যদিও এর মধ্যে অনেক ছবিই বেরিয়েছে। এটা বড় স্প‌্যানের ছবি, স্বাভাবিকভাবেই খুব অস্থিরতার মধ্যে দিয়ে কেটেছে আমাদের। ক্রিসমাসেও যখন আসবে আসবে করেও ছবিটা আসতে পারল না, তৃতীয় ঢেউ এসে গেল, খারাপ লাগছিল। এখন অন্তত ছবি দেখতে হলে ঢুকছে মানুষ। এই মুহূর্তে রেস্তরাঁ, মলে লোকজন যাচ্ছে। আর ছবি রিলিজ তো প্রযোজককে করতেই হবে। কত আর অপেক্ষা করা যায়! যে সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, আগে থেকে ক‌্যালকুলেট করা মুশকিল। একটা ভাল দিক, ওই সময় সরস্বতী পুজো আছে, তারপরে ভ‌্যালেন্টাইন’স ডে। ছুটির মেজাজ থাকবে। এইসব ভেবেই প্রযোজকরা এই সময় ‘কাকাবাবুর প্রত‌্যাবর্তন’ আনছেন। তো আই অ‌্যাম হ‌্যাপি।

বহুদিন পর একই সঙ্গে প্রসেনজিৎ-সৃজিত জুটি বড়পর্দায় ফিরবে।
হ্যাঁ, সেটা একটা বিষয়। এখন জীবনের সবকিছু এত অনিশ্চিত তবু আমার ধারণা, সিনেমা ভাল হলে লোকে দেখবে। আশার কথা লোকজন হলে ফিরেছে এবং ‘টনিক’-এর টিমকে সাধুবাদ জানাই। ছবিটা লোকে দেখেছে। ‘বিনি সুতোয়’ও দর্শক দেখেছিল সেই সময়। এই লড়াই আমাদের করতে হবে। জীবনটাকে সুস্থতার দিকে নিয়ে যেতে হবে, সব নিয়মকানুন, বিধিনিষেধ মেনেই। মাস্ক পরতেই হবে এবং সাবধান থেকে বেরতে হবে।

[আরও পড়ুন: এবার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সুবিধা পেতে নিজের নামে থাকতে হবে ‘সিঙ্গেল অ্যাকাউন্ট’]

দর্শক সমাগম নিয়ে কতটা আশাবাদী হতে পারছেন ‘কাকাবাবুর প্রত‌্যাবর্তন’-এর ক্ষেত্রে?
বক্স অফিসের ক্ষেত্রে আমি কোনও মন্তব‌্য করতে পারব না। এটা অন‌্য সময় হলে একটু ভেবে হয়তো বলতে পারতাম। ‘কাকাবাবু’-র ক্রেজ নিশ্চয়ই আছে। সেটা এই মুহূর্তে কতটা কার্যকরী হবে, ভগবান জানেন, দর্শক জানেন। যদি ছবি চলে, ঈশ্বর আর সুনীলদার ম‌্যাজিক কাজ করছে বুঝব। কারণ ওটা ওঁর অকল্পনীয় সৃষ্টি বাচ্চাদের জন‌্য। বাচ্চাদের ভাল লাগার অনেক কিছু আছে ছবিতে। সাউথ আফ্রিকার প্রেক্ষাপট, বড় মাউন্টিংয়ের ছবি। গত দু’-তিন বছর ধরে বাচ্চাদের জন‌্যও কিছু আসেনি। বলছি না তাদের হল-এ গিয়ে এন্টারটেনড হতে হবে। কিন্তু সব কিছুই তো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন তো খুলছে সবই আস্তে আস্তে।

একইদিনে আরও একটি বাংলা ছবি আসছে। ‘উইন্ডোজ’ থেকে অরিত্র মুখোপাধ‌্যায়ের পরিচালনায় ‘বাবা, বেবি ও’।
আমার মনে হচ্ছে দু’টো ছবিই মানুষ দেখবেন। শিবু-নন্দিতাদির হাউসের ছবির একটা আকর্ষণ আছে। এবং ট্রেলারটা বেশ মজার হয়েছে। সব ছবিই মানুষ দেখুক, দর্শক হলে ফিরুক এটাই চাই। নয়তো আমরা তো টিকে থাকতে পারব না।

প্রচুর বাংলা ছবি মুক্তির অপেক্ষায়। অথচ পুরো পরিস্থিতিটাই অনিশ্চিত। ইন্ডাস্ট্রি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে, কী মনে হয়?
পারবে, নিশ্চয়ই পারবে। আরও ছ’মাস আমাদের লড়াইটা চালিয়ে যেতে হবে আমার মনে হয়। করোনা (Coronavirus) একটা ধাক্কা দিয়েছে ঠিকই, কোভিডের বাইরে গিয়েও বলছি– এরপর কিন্তু দু’-তিন রকমের ছবি হবে। সেটা সব ইন্ডাস্ট্রির ক্ষেত্রেই সত্যি। OTT আর টিভি-র জন‌্য কিছু ছবি হবে। আর কিছু হবে বড়পর্দার জন‌্য। বড়পর্দার ক্ষেত্রে বড় মাউন্টিং, ভাল কনটেন্ট লাগবেই। আমরা ‘বাহুবলী’ বানাতে পারব না। ‘পুষ্পা’র মতো সব রেকর্ড ভাঙা ছবিও পারব না। কিন্তু কনটেন্ট তো ভাল দিতে পারি। টার্গেট করতে হবে এমন কনটেন্ট, যেটা ন‌্যাশনাল লেভেলে গেলে সবাই দেখবে। সেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একজনের কথাই বলব– ঋতু নেই (ঋতুপর্ণ ঘোষ) কিন্তু ওই ম‌্যাজিকটা ফেরাতে হবে। আর একটা ‘চোখের বালি’ বানাতে হবে। মানে বলতে চাইছি, ছবিটা বাংলা হলেও ন‌্যাশনাল লেভেলে লোকে দেখবে। এই লেভেলটা কিন্তু ছুঁতে হবে আমাদের। ‘চোখের বালি’ তো সব ভার্সনে মানুষ দেখেছিল।

[আরও পড়ুন: ফুটবলের ময়দানে স্বাধীনতার লড়াই, কেমন হল ঋত্বিক-দিতিপ্রিয়া-অর্জুনের ‘মুক্তি’?]

‘কাকাবাবু’ আমি যতদূর জানি ওরা হিন্দিতে ডাব করে রিলিজ করছে, একই দিনে। অনেকটা ইংরেজি আছে এই ছবিতে। যে ধরনের ভিস্যুয়াল আছে ছবিতে, ডাব করলে সারা দেশের লোক দেখতে যেতে পারে। প‌্যানডেমিকে কিছুদিন আটকে থাকার পর আবার আপনার হাতভরতি কাজ।
শেষ কয়েকমাস আমি পর পর কাজ করে গিয়েছি। অতনুর (ঘোষ) ‘শেষ পাতা’ করলাম। মুম্বইয়ে বিক্রমাদিত‌্য মোতওয়ানের কাজটা (স্টারডাস্ট) শেষ করলাম। দু’বছর কাজটা আটকে ছিল। শিবুর ‘হামি টু’-টা করলাম। তার ফাঁকে জিতের প্রোডাকশনের ‘আয় খুকু আয়’ করলাম। এবারে ‘কাছের মানুষ’ শুরু করব দেবের প্রোডাকশনে। তারপরে ‘ডাক্তারকাকু’ কমিট করা আছে পাভেলকে। পরমের টিমের সঙ্গে একটা ছবির কথা চলছে। আরও কিছু কাজের কথা চলেছে। আর ‘সাজঘর’ হবে, তবে একটু পিছবে। কাজ নিয়েই তো থাকি আমি। এই পরিস্থিতি সামলে এগোতে হবে। বিগত পনেরো বছর ধরে কিন্তু কাজ নিয়ে লড়ে যাচ্ছি।

আক্ষেপ আছে?
কখনও বলি না, আজ বলছি। ‘দোসর’-এর পরে বাংলার মানুষ ভেবেছিলেন আমি এই ধরনের ছবিতে হয়তো যোগ‌্য। কিন্তু সবাই যোগ‌্য মনে না করলে কি জাতীয় পুরস্কার পাওয়া যায়? তাই আমি পাইনি। তবে আমার লড়াই জাতীয় পুরস্কারের জন‌্য নয়, দর্শকদের জন‌্য। ‘মনের মানুষ’, ‘শঙ্খচিল’, ‘জাতিস্মর’,‘অটোগ্রাফ’, ‘রবিবার’, ‘গুমনামী’, ‘ময়ূরাক্ষী’-র মতো ছবিও কিন্তু আমি করেছি। এবার চাই ‘শেষপাতা’ ছবিটা দেখুক দর্শক। ‘আয় খুকু আয়’ও খুব চ‌্যালেঞ্জিং কাজ, কমার্শিয়াল ছবি হলেও। আবারও বলছি, সিনেমাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে আমাদের। শুধু OTT বা টিভি নয়। সত‌্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, ঋত্বিক ঘটকের নামেই কিন্তু আজও ভারতীয় সিনেমাকে চেনা যায়। সেই সিনেমা-ভাষার ছবি কিন্তু আমাদের বানাতে হবে।

[আরও পড়ুন: ‘তালিবান মনে করে আমার শরীরটাও ওদের’, বিস্ফোরক দাবি একমাত্র আফগান পর্ন তারকার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement