বড়পর্দায় ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন'(Kakababur Protyaborton)। আবারও প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও সৃজিত মুখোপাধ্যায় জুটি। ছবি মুক্তির আগে মুম্বই থেকে ফোনে শুটিংয়ের রোমহর্ষক অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন পরিচালক। শুনলেন সুপর্ণা মজুমদার।
অবশেষে ‘কাকাবাবু’ বড়পর্দায়। টুইটারে দেখলাম ছবির মঙ্গল কামনায় পুজো দেওয়া হচ্ছে। এমন উন্মাদনা সাধারণত দক্ষিণী ছবির ক্ষেত্রে দেখা যায়। বাংলা ছবিতে তো এমন দৃশ্য বিরল। অনুভূতি কী?
হ্যাঁ, অনেক খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে আমরা গিয়েছি। সমস্ত মাধ্যমের ক্ষেত্রেই। এমন পরিস্থিতিতে এতদিন পর সিনেমা রিলিজ করছে। এই উন্মাদনা দেখলে তো ভালই লাগে।
‘ইয়েতি অভিযান’, ‘মিশর রহস্য’র পর ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘জঙ্গলের মধ্যে এক হোটেল’ কাহিনিকেই কেন বাছলেন?
জঙ্গলই আমার প্রিয়। জঙ্গলে বহুবার বেড়াতে গিয়েছি। কেউ পাহাড়, সমুদ্র বললে আমি বলি না, কোনওটাই না, জঙ্গল। মাসাইমারাতে গিয়ে শুটিং করা আমার কাছে ছিল স্বপ্নের মতো। কেনিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার জঙ্গলে শুট করেছি। অসম্ভব আনন্দ পেয়েছি।
অনেকে বলেন, যদি ভাগ্য ভাল থাকে তাহলে জঙ্গলে দুঃসাহসিক অভিজ্ঞতা হয়। ‘কাকাবাবু’র শুটিংয়ে এমন কিছু হয়েছে?
হ্যাঁ, তা একটু হয়েছিল। হাতি আর গণ্ডারের যে সিক্যোয়েন্স। তার কোনও পেশাদার হ্যান্ডলার ছিল না। আর সে আসলে বুনো গণ্ডার ছিল। হাতি আর গণ্ডারের মাঝখানে ছিল কাকাবাবু আর সন্তু মানে বুম্বাদা এবং আরিয়ানের শুটিং। আচমকা হাতিটা চার্জ করে কাছাকাছি চলে এসেছিল। সেটা খুব ইন্টারেস্টিং একটা সিকোয়েন্স। সাপের সঙ্গে একটা সিন আছে সেটাও খুব রোমহর্ষক। বিশেষ করে বুম্বাদা সাপ পছন্দ করেন না, হায়নার সঙ্গে একটি দৃশ্য রয়েছে। হায়নারা খুবই হিংস্র হয়। সেই সময় কেউ কোনও দায়িত্ব নেননি। বলেছিলেন, আপনারা নিজের রিস্কে শুট করবেন। এমন অনেক ঘটনা রয়েছে। সবচেয়ে ভাল বিষয় হল যে, এই প্রথম কোনও বাংলা সিনেমায় এর রিয়্যাল জীব-জন্তু দেখা যাবে।
[আরও পড়ুন: বলিউডে বড় ধামাকা, যশরাজের ছবিতে এবার একসঙ্গে শাহরুখ-সলমন-হৃত্বিক]
‘কাকাবাবু’ ছবি প্রসঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee) বলেন, “সবাই যোগ্য মনে না করলে কি জাতীয় পুরস্কার পাওয়া যায়? তাই আমি পাইনি।” এ বিষয়ে আপনার মত কী?
পুরস্কার পেলে যোগ্যতা আছে ঠিক, কিন্তু যোগ্যতা থাকলেই যে পুরস্কার পাওয়া যায় সেটা ঠিক না। তো, নেসেসারি কিন্তু সাফিশিয়েন্ট নয়। কিশোর কুমার সারাজীবন কোনও পদ্ম পুরস্কার পাননি। অনেকেই সারাজীবন অস্কার পাননি। তার মানে কি তাঁরা সুযোগ্য শিল্পী নন? তা নয়, তবে আমার মনে হয়, ‘জাতিস্মর’ সিনেমার কুশল হাজরার চরিত্রের জন্য বুম্বাদার ডেফিনিটলি জাতীয় পুরস্কার পাওয়া উচিত ছিল।
‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’-এর পাশাপাশি মুক্তি পাচ্ছে ‘বাবা বেবি ও…’। উইন্ডোজ প্রোডাকশনের প্রযোজনায় নায়ক যিশু সেনগুপ্ত। করোনার সময় দুটো বড় রিলিজ। কী মনে হয়, দর্শকরা আসবেন সিনেমা হলে?
‘বাবা বেবি ও…’র বিষয়ে আমি জানি না। কিন্তু ‘কাকাবাবু’ প্রসঙ্গে এটুকু বলতে পারি যে যেখানে বাচ্চারা ভ্যাকসিনেটেড নয় এবং অনেকে বাচ্চাদের নিয়ে বের হন না, সেখানে আমার মনে হয় না যে প্রচুর ফ্যামিলি আসবে। বাচ্চাদের বাদ দিয়েও দর্শকরা হয়তো আসতে পারেন। যদিও এ ছবিটা বাচ্চাদের জন্য বানানো এবং আমার মেয়ে আয়নাকে উৎসর্গ করা। আয়নার মতো যে শিশুরা ‘চাঁদের পাহাড়’ পড়ে এবং ‘লায়ন কিং’ দেখে বড় হয়েছে, তাদের জন্যই কাকাবাবু।
‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’, ‘সাবাশ মিতু’, ‘শেরদিল’, ‘অতি উত্তম’, ‘X=প্রেম’, ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’ – বলিউড টলিউড একসঙ্গে সামলাচ্ছেন। পরিচালক সৃজিত কি একটু বেশি এক্সপোজ হয়ে যাচ্ছেন?
না না, তা নয়। কাজের চাপ তো ভালই। আর পরিচালক সৃজিত তো লাজুক প্রকৃতির পর্দানশীন নয়! অথবা এমনও নয় যে সূর্যের আলোয় এক্সপোজ হয়ে গেলে প্রবলেম। সে কাজ করতে ভালবাসে, কাজই করছে। এটাই তো স্বাভাবিক।
বলিউড আর টলিউডে দু’জায়গাতেই কাজ করছেন। কী পার্থক্য চোখে পড়ছে?
কিছু লজিস্টিক পার্থক্য অবশ্যই রয়েছে। কয়েকটা জিনিস নিয়ে এক্কেবারেই চিন্তা করতে হয় না। এর একটা কারণ অবশ্যই অর্থনৈতিক। বাজেটটা অনেক বেশি। সেটা মার্কেট অনেক বড় বলে। এছাড়া তেমন একটা তফাৎ নেই।
‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’ নিয়ে দর্শকদের কী বলতে চান?
বহু দিন পর ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’ ঘটছে। ২০১৭ সালে ‘কাকাবাবু’র সিনেমা রিলিজ করেছিল। অর্থাৎ পাঁচ বছর পর বড়পর্দায় ফের কাকাবাবু। আগে ছবিগুলো দর্শকরা যেভাবে ভালবেসেছিলেন, আশা করছি এবারও ঠিক সেভাবেই ভালবাসবেন।