অভিরূপ দাস: অ্যান্টিবায়োটিক (Anti Biotic) প্রয়োজন নেই। দরকার নেই ডক্সিসাইক্লিন, আইভার মেকটিনের। চিরপরিচিত প্যারাসিটামলই চাঙ্গা করবে কোভিড (COVID-19) থেকে।
মঙ্গলবার এসএসকেএম হাসপাতালে সাংবাদিক সম্মেলন করেন রাজ্যের বিশিষ্ট চিকিৎসকরা। সেখানেই এ বিষয়ে সহমত হলেন বিশিষ্টরা।
এসএসকেএম হাসপাতালের সার্জন ডা. দীপ্তেন্দ্র সরকার বলেন, হালকা অথবা মাঝারি উপসর্গ নিয়ে কোভিড আসলে অন্য কোনও ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন নেই। বাড়িতে থাকুন। শারীরিক দুরত্ব মানুন, মাস্ক পরুন। ওষুধ বলতে স্রেফ প্যারাসিটামল। তাও জ্বর এলে। ডা. সরকারের বক্তব্য, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে ওষুধ নিয়ে যে হাহাকার পরেছিল তার কোনও প্রয়োজন হবে না তৃতীয় ঢেউয়ে। শুধুমাত্র প্যারাসিটামল ওষুধই শুশ্রুষা দেবে।
[আরও পড়ুন: Coronavirus Update: প্রায় ৫০% বাড়ল করোনা সংক্রমণ, বাংলায় একদিনে আক্রান্ত ৯ হাজারেরও বেশি]
তবে পাখি পরার মতো একটি মন্ত্র জপ করতে বলেছেন চিকিৎসকরা। তা হল ভিড় এড়িয়ে যাওয়া। রাজ্যে ১০ কোটি জনসংখ্যা। বর্তমানে সংক্রমণের যা গতি তা বজায় থাকলে দৈনিক সাড়ে তিন লক্ষ কেস হতে পারে বাংলায়। রাজ্যের বর্তমান করোনা সংক্রমণকে এদিন তৃতীয় ঢেউ বলেই আখ্যা দিয়েছেন চিকিৎসকরা। উল্লেখ্য, বাংলার তৃতীয় ঢেউয়ের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার চতুর্থ ঢেউকে তুলনা করছেন অনেকেই। দক্ষিণ আফ্রিকাতে আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র সাড়ে তিনশো থেকে ৩৫ হাজার হতে সময় লেগেছিল ১০ দিন। ভিড় নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে বাংলার অবস্থাও তেমনটাই হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক কুণাল সরকার।
নতুন স্ট্রেইন নিয়ে অভয় দিয়েছেন ডা. কুণাল সরকার। তাঁর বক্তব্য, ওমিক্রনে হাসপাতালে ভরতি হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। মৃত্যুর হারও অত্যন্ত কম। কিন্তু ছোঁয়াচে মারাত্মক। করোনাবিধি না মানলে অসুখ ছড়িয়ে পরবে দ্রুত। চিকিৎসকদের আতঙ্ক আপাতত গঙ্গা সাগরের ভিড়। ডা. কুণাল সরকার জানিয়েছেন, এক পার্কস্ট্রিট থেকে শিক্ষা নিয়ে যদি নিজেদের নিয়ন্ত্রণ না করতে পারি, বিপদ বর্ষিত হবে বাংলায়। চিকিৎসকদের সংশয়, “ ভিড়ের মাশুল দিতে হবে মানুষকেই। আবার হাসপাতালে ছুটে বেড়াতে হবে। মিলবে না বেড।”
[আরও পড়ুন: করোনা পরিস্থিতিতে খোলা থাকবে তারাপীঠের মন্দির, দর্শনার্থীদের জন্য জারি একাধিক নিয়ম]
সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. যোগীরাজ রায় জানিয়েছেন, ১০০ শতাংশ মানুষের ভ্যাকসিন হয়নি। এটাই সবচেয়ে চিন্তার বিষয়। যাঁরা ভ্যাকসিন পাননি তাদের সকলের জন্য বেডের বন্দোবস্ত করতে হলে ফের ভরতি হয়ে যাবে একাধিক হাসপাতাল। গায়ে ফু দিয়ে ঘুরে বেরবেন না। এদিন এসএসকেএম হাসপাতালে সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির ছিলেন ডা. যোগীরাজ রায়, ডা. দীপ্তেন্দ্র সরকার, ডা. কুণাল সরকার এবং ডা. অভিজিৎ চৌধুরী।